সাক্ষাৎকারে তানভীর শাকিল জয়

বাবার ৩০ শতাংশ যেতে পারলে আমার জীবন সার্থক

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২০, ১৭:২১ | প্রকাশিত : ২৪ আগস্ট ২০২০, ১০:০৩

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদ্যপ্রয়াত সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয়। বাবার কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষাকে অনুসরণ করে মানুষের জন্য কাজ করতে চান তিনি। তানভীর শাকিল মনে করেন, তিনি বাবার কাজের ও সুনামের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত যেতে পারলে নিজের জীবন সার্থক হবে। ঢাকা টাইমসের সঙ্গে একান্ত আলাপে এ কথা বলেন জাতীয় চার নেতার একজন এম মনসুর আলীর নাতি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাকাটাইমসের নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী রফিক

প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। গত ১৩ জুন তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনটির উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন-প্রত্যাশী নাসিম-পুত্র জয়। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

বাবা মোহাম্মদ নাসিমের কাজের ধারা বজায় রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করবেন জানিয়ে জয় ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘পারব কি না আমি বলতে পারব না। কারণ মোহাম্মদ নাসিমের মতো নেতা তো যুগে যুগে আসে না। আমি যদি তার ২০ থেকে ৩০ শতাংশও যেতে পারি, তাহলে আমার জীবন সার্থক। এটা পারব কি না আমি জানি না।’

বাবার থেকে পাওয়া শিক্ষার আলোকে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তানভীর শাকিল জয়। বলেন, ‘আব্বার কাছ থেকে কী শিখেছি, সেটা যদি বলতে যায় তাহলে বলতে হবে, আব্বার দুটি বড় গুণ ছিল। একটা হলো সাহস। আব্বার মতো সাহসী নেতা খুব কম ছিল। আর দ্বিতীয় বিষয়টা হলো ধৈর্য্য। রাজনীতিতে উত্থান-পতন থাকবেই। আমার বাবার জীবনে অনেক উত্থান-পতন ছিল। ধৈর্য্য ও সাহসের সঙ্গে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’

তার বাবার কাছ থেকে আরেকটা জিনিস শিখেছেন জয়। বাবা কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। কিন্তু তার কাছে এলাকার গুরুত্ব ছিল সবার ওপর। তিনি জনগণের সঙ্গে মিশতেন। তৃণমূলকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে- এটা জয়েরও মোটিভ।

পারিবারিক ঐতিহ্য যেমন তার একটা বড় শক্তি, তেমনি এটি বড় দায়িত্ব বলেও মনে করেন সাবেক সাংসদ জয়। সে সুনাম অক্ষুণ্ন রেখেই এগিয়ে যেতে চান তিনি। জয় বলেন, ‘আমার পারিবারিক ঐতিহ্য অনেক বড় একটি দায়িত্বও বটে, যার প্রচণ্ড চাপ আমার ওপর কাজ করে। আমার পরিচয় তো এভাবেই আসে যে, আমি এম মনসুর আলীর নাতি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের সন্তান। শুধু এলাকার রাজনীতি না, ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় পর্যায়েও যদি আমি কাজ করার সুযোগ পাই, সে ক্ষেত্রেও আমার দাদা ও বাবার যে সুনাম আছে, সেটা যেন অটুট থাকে সেদিকে আমাকে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন-প্রত্যাশী তানভীর শাকিল জয় এবার মনোনয়ন পেলে এবং নির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হতে পারলে বাবার নেয়া উদ্যোগগুলো শতভাগ শেষ করা এবং বাবার প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকার নাগরিকদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাদের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি জানান তিনি।

জয় বলেন, ‘এর আগে আমি যখন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই, তখন আমাদের এলাকার দুটি মূল চাহিদা ছিল- নদীভাঙন ও বিদ্যুৎ। আমাদের এলাকায় ২০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল। ৮৫ শতাংশ এলাকা বিদ্যুতায়িত হয়েছে। প্রায় ১৭০০ কোটি টাকা সরকারি বরাদ্দ দিয়ে নদীভাঙন রক্ষা করা হয়েছে। এবার আমি যদি নির্বাচিত হতে পারি, তাহলে আমার কাজ হবে এলাকার যে ৪০ শতাংশ চরে বিদ্যুৎ নাই, সোলার বিদ্যুৎ দিয়ে চলে, সেখানে আন্ডাররিভার ক্যাবল দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা। আমাদের এলাকায় এখনো প্রায় ৩০ শতাংশ কাঁচা রাস্তা। সেগুলো পাকা করা। এছাড়া এলাকায় যেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়, সেটা নিশ্চিত করা আমার একটা ইচ্ছা।’

একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ভাবনাও রয়েছে জানিয়ে জয় বলেন, ‘সিরাজগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী যখন গিয়েছিলেন, তখন আমরা সবাই একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি তুলেছিলাম। আমাদের সে দাবিটা এখনো আলোর মুখ দেখে নাই। আমি যদি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারি, সিরাজগঞ্জের অন্যান্য যারা সংসদ সদস্য আছেন, তাদের সবাইকে নিয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা এটার অনুরোধ করব যেন একটি বিশ্ববিদ্যালয় করা যায়।’

যমুনা নদীর কোল ঘেঁষা সিরাজগঞ্জ-১ আসনে শীতকালে নদীতে বিশাল চর জাগে। এ সময় কর্মহীন হয়ে পরেন মৎস্যজীবীরা। সরকারের পক্ষ থেকে ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হলেও তা মৎস্যজীবীদের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই নির্বাচিত হতে পারলে মৎস্যজীবীদের জন্য স্থায়ী কিছু করার বিষয়ে ভাবা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের গত কমিটির সহ-সভাপতি জয়।

তানভীর শাকিল জয় বলেন, ‘শীতের সময়ে যমুনার মৎস্যজীবীদের জন্য এখনো পর্যন্ত স্থায়ী কিছু করা হয়নি। তারা অনেকটা নিগৃহীত। তাদের জন্য স্থায়ী কিছু করার চিন্তা করা হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২৪আগস্ট/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :