ভয়ঙ্কর মামা!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২০, ২০:৪৬ | প্রকাশিত : ২৭ আগস্ট ২০২০, ২০:২৯

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে স্কুল পড়ুয়া ভাই-বোনকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন নিহতদের মামা বাদল মিয়া (৩৬)। বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হোসেনের আদালতে এই জবানবন্দি দেন তিনি।

এর আগে গত বুধবার ঢাকার সবুজবাগ এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ওইদিনই বাঞ্ছারামপুর থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়।

বাঞ্ছারামপুরের সলিমাবাদ ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের কামাল উদ্দিনের বসত ঘরের দুটি কক্ষের খাটের নিচ থেকে ২৪ আগস্ট রাতে তার দুই সন্তান শিফা আক্তার (১৪) ও মেহেদী হাসান কামরুলের (১০) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শিফা বাঞ্ছারামপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে এবং কামরুল সলিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তো। এ ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন মামা বাদল মিয়া।

জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কুমিল্লার হোমনা উপজেলার খোদে দাউদপুর গ্রামের আবদুর রবের ছেলে বাদল বাঞ্ছারামপুরে বোনের বাড়িতে ছিল গত জুন থেকে। মার্চ মাসে বাহরাইন থেকে দেশে আসেন তিনি। করোনা মহামারির কারণে আর বিদেশ যেতে পারেননি।

এর মধ্যে নিজের এলাকায় গোষ্ঠিগত দাঙ্গায় বাদলের বিরুদ্ধে মামলা হলে তিনি বাঞ্ছারামপুর বোনের বাড়িতে চলে আসেন। বাহরাইন থাকাকালে তিন বছর আগে দোকান করার জন্যে বাদল ভগ্নিপতি কামাল উদ্দিনের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা ধার নেন। এ থেকে তিন লাখ টাকা ফেরত দেন। বাকি ১০ লাখ টাকা ফেরত না দেয়ায় বোন জামাইয়ের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল তার।

সপ্তাহ খানেক আগে বাদলকে এজন্যে থাপ্পরও মারেন কামাল। এই ক্ষোভে ভাগ্নেকে হত্যা করেন বাদল। ভাগ্নের মরদেহ দেখে ফেলায় পরে ভাগ্নিকেও খুন করে। তাদের দু-জনকেই গলা কেটে হত্যা করা হয়।

যেভাবে হত্যা করা হয়:

হত্যার বর্ণনায় বাদল পুলিশকে জানায়, ২৪ আগস্ট দুপুরে ভগ্নিপতির বাড়িতে তার থাকার কক্ষে উচ্চস্বরে গান শুনছিলেন তিনি। ওই সময় ভাগ্নে মেহেদী হাসান কামরুল তার মায়ের কাছ থেকে মজা খাওয়ার কথা বলে ৫০ টাকা নিয়ে তার রুমে আসে। এরপরই তার হাত-পা বেঁধে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে বাদল। পরে লাশ খাটের নিচে রেখে দেয়। ভাগ্নি শিফা ঘর ঝাড়ু দিতে গিয়ে তা দেখে ফেললে তাকেও মারতে উদ্যত হয় সে। জোরাজোরির এক পর্যায়ে শিফাকে ধাক্কা মেরে বাথরুমে ফেলে গলা কেটে হত্যা করে। তার লাশও খাটের নিচে রেখে দেয়।

এদিকে মাগরিবের আযান হওয়ার পরও কামরুল ঘরে না ফেরায় সবাই তার খোঁজে বের হয়। তাকে খুঁজতে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শিফাকে ঘরে রেখে যান তার মা হাসিনা আক্তার। পরে আবার ঘরে এসে দেখেন শিফাও নেই। নিখোঁজ দু’জনের খোঁজ পেতে এলাকায় মাইকিং করা হয় এবং রাত সাড়ে ৮টায় থানায় গিয়ে পুলিশের সহায়তা চান তাদের বাবা-মাসহ স্বজনরা।

কামাল উদ্দিন তার শ্যালক বাদল মিয়াকে নিয়ে বাঞ্ছারামপুর ফেরীঘাট এলাকায় তাদের খোঁজে গেলে বাদল মিয়া কাউকে কিছু না বলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। বাঞ্ছারামপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাজু আহমেদ চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্ত করছেন।

(ঢাকাটাইমস/২৭আগস্ট/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :