অপহরণ চেষ্টা: এসপির নির্দেশে ১৭ দিন পর মামলা

প্রকাশ | ২৮ আগস্ট ২০২০, ২০:৫৩

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

গাইবান্ধায় কণ্ঠশিল্পী হওয়ার সুযোগ করে দেয়ার লোভ দেখিয়ে দুই শিশুকে অপহরণের চেষ্টার ঘটনায় ১৭ দিন পর থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পরেই বৃহস্পতিবার রাতে এক অপহরকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

স্বজনদের অভিযোগ, গত ৮ আগস্ট রাতে সদর উপজেলার চকগয়েশপুর গ্রাম থেকে ১০ বছরের শিশু মাসুদা ও তার ৮ বছরের বোন মাহমুদাকে কন্ঠশিল্পী হওয়ার সুযোগ করে দেয়ার লোভ দেখিয়ে পরিবারে কাছ থেকে নিয়ে আসে মতিয়ার ও বাবলু নামে দুই অপহরণকারী। পরে পাচারের উদ্দেশ্যে ইজিবাইকে করে গাইবান্ধা বাস টার্মিনালে দুই শিশুকে নিয়ে যায় তারা। তবে, বাসে উঠার সময় সন্দেহ হলে তাদের আটকে রেখে থানায় খবর দেন বাস শ্রমিকরা।

এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে ভুক্তভোগী পরিবারটি বেশ কয়েকদিন সদর থানায় ঘোরাঘুরি করলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। গাইবান্ধা জেলা মহিলা পরিষদেও দুই নারী নেত্রীর মাধম্যে ঘটনাটি পুলিশ সুপারের কানে গেলে তার হস্তক্ষেপেই বৃহস্পতিবার থানায় মামলা হয়। এরপরেই অভিযান চালিয়ে মতিয়ার রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মতিয়ার রহমান গাইবান্ধা বল্লমঝাড় ইউনিয়নের কাজল ঢোপ গ্রামের মৃত দুলা মিয়া ছেলে ও অপরজন একই গ্রামের মৃত খুশি প্রধানের ছেলে বাবলু প্রধান।

শিশু দুটির বাবা রবিউল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমি ১৭ দিন সদর থানায় ঘুরেছি মামলা করার জন্য; কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে গাইবান্ধা মহিলা পরিষদের দুই নারী নেত্রীর শরনাপন্ন হলে তারা আমাকে পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে যায় এবং পুলিশ সুপার আমার শিশু সন্তানদের মুখে ঘটনার বিবরন শুনে সদর থানার ওসিকে মামলা নেয়ার নির্দেশ দিলে (২৭ আগস্ট) বৃহস্পতিবার পুলিশ মামলাটি নেয় এবং ওই দিন আসামি মতিয়ারকে গ্রেপ্তার করে।

গাইবান্ধা জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিক্ততু প্রসাদ এ বিষয়ে ঢাকাটাইমসকে জানান, কিছুদিন আগে ভুক্তভোগীর পরিবার মহিলা পরিষদের সাবেক সভাপতি আমাতুর নূর ছড়ার কাছে গেলে তিনি তাদের আামর কাছে পাঠান। আমি সাথে সাথে ব্যাপারটি পুলিশ সুপারকে জানালে তিনি ভুক্তভোগীর পরিবারকে তার অফিসে পাঠাতে বলেন এবং শিশু দুটির নিকট ঘটনার বিবরণ শোনেন। অপহরণের বিবরণকে তিনি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে সদর থানার ওসিকে মামলা নেয়ার নির্দেশ দেন এবং দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য বলেন।

সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার ঢাকাটাইমসকে বলেন, গত ৮ আগস্ট রাতে বাস টার্মিনালে দুটি শিশু বাচ্চাকে দুজন লোকের সাথে দেখে বাস শ্রমিকদের সন্দেহ হলে তারা থানায় ফোন দেয়। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ পাঠালে তার আগেই অপরাধীরা পালিয়ে যায়। পরে শিশু দুটির বাবা কিছুক্ষণ পরে সেখানে উপস্থিত হলে শিশুরা তার বাবাকে চিনতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে শিশু দুটিকে থানায় নিয়ে আসি এবং পরে তারা স্বাভাবিক হলে একটি জিডি মূলে শিশু দুটি তাদের বাবার নিকট ফিরিয়ে দেই। পরদিন এই বিষয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার ও অভিযুক্ত ব্যক্তি দুজনেই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্তাধীন থাকাকালে এসপি স্যার আমাকে মামলা করার নির্দেশ দিলে মামলাটি রুজু করি এবং অভিযান পরিচালনা করে একজনকে আটক করি।

গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, এ মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি যে নাম রয়েছে, তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/এলএ)