দেড় যুগেও সংস্কার হয়নি বিধ্বস্ত স্লুইচ গেইট

প্রকাশ | ৩০ আগস্ট ২০২০, ১২:২৪ | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২০, ১২:৩৪

খোরশেদ আলম, শেরপুর

শেরপুরের ঝিনাইগাতীর মালিঝি নদীর উপর নির্মিত স্লুইচ গেইটটি দেড় যুগেরও বেশি সময় হলো পাহাড়ি ঢলে বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছে স্লুইচ গেইটের সুফল থেকে। স্লুইচ গেইটটি সংস্কারের কৃষকদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে এখানে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণের বিষয়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে আলোচনাও করা হয়েছে। কিন্তু এখনও এ বিষয়ে নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ।

উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন জানান, কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও কৃষকদের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ স্লুইচ গেইটটি নির্মাণ করে। মালিঝি নদীর ঘাগড়া নয়াপাড়ায় প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করা হয়। এ সময় স্লুইচ গেইটের পাশে প্রায় ৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়।

হাতিবান্ধা গ্রামের কৃষক আবুল হাসেম, কামারপাড়া গ্রামের রেজাউল, আফছর আলী, মোক্তার হোসেন ভোট্টুসহ গ্রামবাসীরা জানায়, ওই স্লুইচ গেইট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি ভবনও নির্মাণ করা হয়। যাতে একজন কর্মচারীকেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্লুইচ গেইটটি নির্মাণের এক বছর যেতে না যেতেই পাহাড়ি ঢলে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। এরপর স্লুইচ গেইটটি আর সংস্কার করা হয়নি। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োগকৃত ওই কর্মচারী কিছুদিন এখানে অবস্থানের পর চলে যান বলে জানা যায়। এরপর থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত স্লুইচ গেইট ও ওই ভবনসহ অধিগ্রহণকৃত জমিগুলো বেদখল হতে শুরু করে। বর্তমানে তা অন্যের দখলেই রয়েছে। বিধ্বস্ত স্লুইচ গেইটটিও আর পুন:নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে যে উদ্দেশ্য নিয়ে গেইটটি নির্মাণ হয়েছিল তা আর বাস্তবায়িত হয়নি।

ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন দোলা জানান, গেইটটি সংস্কার বা এখানে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হলে কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ লাঘব হবে। পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। তিনি আরও জানান, বিধ্বস্ত স্লুইচ গেইটটি সংস্কার অথবা এখানে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণের দাবী এলাকার কৃষকদের দীর্ঘদিনের।

উপজেলা চেয়ারম্যান ওয়ারেজ নাইম জানান, এখানে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণের বিষয়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে আলোচনাও করা হয়েছে। কিন্তু আজো তা বাস্তবায়িত হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করায় স্লুইচ গেটটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে পরিকল্পিতভাবে ওই স্থানে রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হলে কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধিত হবে। এক ও দু’ফসলি জমিগুলো অধিক ফসলি জমিতে পরিণত হবে। এতে প্রায় ২ হাজার কৃষকের ৫০০ হেক্টরের অধিক জমি ফলনশীল জমিতে পরিণত হবে।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী শাহজাহান বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/৩০আগস্ট/পিএল)