হরিণাকুন্ডুতে ব্যক্তি উদ্যোগে সড়ক সংস্কার

পাঁচ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে অনেকটা জায়গা ছিল খানাখন্দে ভরা। তার উপর টানা বৃষ্টিতে ওইসব খানাখন্দে আর গর্তেভরা সড়কে পানি জমে বেহাল দশা হয়ে যায়। যানবাহন উল্টে গিয়ে যাত্রীদের আহত হওয়া যেন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হচ্ছিল।

লোকমুখে শুনে আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এমন খবরে চুপ করে বসে থাকতে পারেননি এক তরুণ সমাজসেবক। নিজ অর্থায়নে শুরু করেন সড়ক সংস্কার।

ঘটনাটি ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার জোড়াদহ ইউনিয়নের কালিতলা এলাকার। উপজেলার সাধুহাটি- তৈলটুপি লালন সড়কের জোড়াদহ কালিতলা এলাকায় সড়কের ওপর বিটুমিন ও খোয়া উঠে সৃষ্টি হয় খানাখন্দ ও গর্তের। পানি জমে সেখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। জনসাধারণ আর যান চলাচলে চরম দুর্ভোগ নেমে আসে। এ অবস্থায় ওই বেহাল সড়ক সংস্কারে এগিয়ে আসেন ওই ইউনিয়নের তরুণ সমাজসেবক জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া। তিনি নিজ অর্থায়নে ওই বেহাল সড়ক সংস্কার করে লাঘব করেন জনদুর্ভোগ।

উপজেলা এলজিইডি দপ্তর সূত্রে জানা যায়, শহরের দোয়েল চত্বর মোড় থেকে তৈলটুপি পর্যন্ত সড়কটি ১৬ কিলোমিটার। ২০০০ সালে সড়কটির কার্পেটিংয়ের কাজ হয়েছে। এর মধ্যে ভবানিপুর বটতলা থেকে জোড়াদহ বাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক পাঁচ বছর আগে সংস্কার করা হয়।

এলাকাবাসী জানান, গত প্রায় চার-পাঁচ বছর ধরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়ে, কার্পেটিং উঠে বেহাল দশা হয়েছে। বিশেষত জোড়াদহ কালিতলা এলাকায় সড়কের বিটুমিন ও খোয়া উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন জানান, বেহাল এই সড়কে প্রায়ই যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হয়। জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার বলার পরও তাদের সাড়া মেলে না। এই বর্ষায় সড়কটি একেবারেই চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে।

কালিতলা বাজারের ব্যবসায়ী ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, মাঝে মাঝে এখানে বেহাল সড়কের ওপর দুর্ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়কের বেহাল দশা আর জনদুর্ভোগের কথা জেনে তরুণ সমাজসেবক জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন। এ সময় বাবু তাকে (ডা. হেলাল) বলেন, সড়কটি সংস্কারে যত টাকা লাগবে তিনি দিবেন। তাই বাবু মিয়ার অর্থায়নে আমরা ইট, খোয়া আর বালু এনে সড়কটি মেরামতের কাজ শুরু করেছি।

ডা. হেলাল বলেন, তরুণ সমাজসেবক বাবু মিয়া ইতোমধ্যে জোড়াদহ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ভাঙাচোরা সড়ক নিজ অর্থায়নে মেরামত করেছেন। এছাড়াও ইউনিয়নের দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া, ভর্তি, অসহায় মানুষদের নিজ অর্থায়নের চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ নানা সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডে ব্যপক ভূমিকা রেখেছেনে। তিনি একজন তরুণ সমাজসেবক হিসেবে ইতিমধ্যে ব্যপক সাড়া জাগিয়েছেন।

এছাড়াও করোনাকালে সমাজসেবক বাবু মিয়া ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে অসহায়দের মাঝে ব্যপক ত্রাণসামগ্রী ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করে প্রশংসিত হয়েছেন।

জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া বলেন, একজন মানুষ হিসেবে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করতে চাই। তিনি জোড়াদহ ইউনিয়নবাসীর যেকোন প্রয়োজন আর দুযোর্গে আজীবন তাদের পাশে থেকে সেবা করে যাবেন বলেও জানান।

(ঢাকাটাইমস/৩০আগস্ট/কেএম)