সন্তানের পিতৃপরিচয় চান সুরাইয়া

স্ত্রীর করা নারী ও শিশু নির্যাতন আইন মামলায় চাঁদপুর শহরস্থ পালপাড়ারশামীম নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। গত ২৯ আগস্ট রাতে তাকে আটক করা হয়। তার স্ত্রী সুরাইয়া এখন স্ত্রীর অধিকার ও শামীমের ঔরসে জন্ম নেওয়া তার ৯ মাসের কন্যা সন্তানের পিতৃপরিচয় আদায়ে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছেন।

ভুক্তভোগী সুরাইয়ার অভিযোগ, তিনি আইনের আশ্রয় নেওয়ার পর শামীম তাদের বিয়ের বিষয় ও সন্তানকে অস্বীকার করছেন। উপরন্তু দ্বিতীয় স্ত্রীকে দিয়ে সুরাইয়া আক্তারকে খুনের হুমকিও দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল পালপাড়ার জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়ার ছেলে শামীম আহমেদ বিয়ে করেন ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার সাখুয়ার সুলতান খানের মেয়ে সুরাইয়া আক্তারকে। বিয়ের পর থেকেই শামীম প্রায় সময় অকারণে সুরাইয়াকে মারধর ও গালমন্দ করতেন। এক পর্যায়ে শামীম সুরাইয়াকে ডিভোর্স দেয়। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই আবার তিনি সুরাইয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার কাছে ক্ষমা চায় এবং তার সঙ্গে আর কখনো খারাপ আচরণ করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে পুণরায় তাকে বিয়ে করতে চায়। সুরাইয়া তার কথায় রাজী হয়ে ২০১৮ সালের ৪ মার্চ ঢাকা কোর্ট এলাকায় গিয়ে শামীমকে আবার বিয়ে করেন।

সূত্রে আরও মজানা গেছে, শামীম দ্বিতীয়বার বিয়ের বিষয়েও প্রতারণা করে সুরাইয়ার সঙ্গে। তিনি ভূয়া কাবিননামা তৈরি করে এ বিয়ে করে সুরাইয়াকে চাঁদপুর নিয়ে আসেন। এরপর শামীম ২০১৮ সালের ১১ জুন পর্যন্ত সুরাইয়াকে নিয়ে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকেছেন। এ সময়ে হঠাৎ হঠাৎ কয়েকবার উধাও হয়েছে শামীম। তখন তার খোঁজে সুরাইয়া তার পালপাড়াস্থ’ বাড়িতে গেলে শামীম সুরাইয়াকে প্রচণ্ড মারধর করতেন। পরে সুরাইয়া বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল চাঁদপুর আদালতে মামলা করেন।

পরবর্তীতে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে শামীম সুরাইয়ার সঙ্গে ভালোভাবে সংসার করবে বলে মৌখিকভাবে অঙ্গীকার করেন। এরপর তাকে নিয়ে শহরের প্রফেসরপাড়াস্থ সিরাজুল ইসলামের মালিকানাধীন ভাড়া বাসায় থাকতেন। এর মধ্যেই শামীমের ঔরষে সুরাইয়ার একটি কন্যা সন্তান হয়। বর্তমানে শিশুটির বয়স ৯ মাস।

অভিযোগে সুরাইয়া জানায়, হঠাৎ করেই শামীম গত কয়েকদিন আগে ভারতে যাবে বলে সুরাইয়াকে কিছুদিন ফোন দিতে নিষেধ করে। এরপর সুরাইয়া শামীমের কোনো খোঁজ না পেয়ে বিভিন্ন লোক মারফতে এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শামীম পুনরায় চট্টগ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করে সেখানেই অবস্থান করছেন। এরপর থেকে সুরাইয়াকে বিয়ে এবং তাদের সন্তানের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করছেন শামীম। পরে কাবিনের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা যায় যে, সম্পূর্ণ কাবিননামাটিই ভূয়া ছিলো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি সুরাহার জন্য ২৯ আগস্ট রাতে উভয়পক্ষকে চাঁদপুর গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডাকা হয়। সেখানে শামীম উপস্থিত হয়ে বলেন, এ সন্তান তার নয় বা সে সুরাইয়াকে বিয়ে করেনি। বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় ডিবি পুলিশ আইনি প্রক্রিয়ার জন্য শামীমকে আটক করে।

(ঢাকাটাইমস/৩০আগস্ট/পিএল)