১৭৩ মামলায় ৪১৮ জঙ্গি গ্রেপ্তার, পলাতক ৪৬০

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২০, ২১:৩৫ | প্রকাশিত : ৩১ আগস্ট ২০২০, ২১:১৫

সারাদেশে গত সাড়ে তিন বছরে ৪১৮ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ। পলাতক রয়েছে ৪৬০ জন জঙ্গি। এরমধ্যে ২০১৭ সালে ১০৩ জন, ২০১৮ সালে ১৩৩ জন , ২০১৯ সালে ১২৯ জন এবং ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৫৩ জন জঙ্গি করা হয়েছে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একটি সূত্র জানিয়েছে, জঙ্গি গ্রেপ্তার সংক্রান্তে উল্লেখিত সময়ে এ সংক্রান্ত দেশের বিভিন্ন থানায় ১৭৩ টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় মোট এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা ৮৭৮ জন। সবগুলো মামলায় তদন্তাধীন। আর পলাতক রয়েছে ৪৬০ জন জঙ্গিকে খুঁজে বের করার জন্য দেশের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালাচ্ছে আইনশঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী।

অভিযান চলাকালে আটজন জঙ্গি মারা গেছে। জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করার লক্ষ্যে পুলিশের জঙ্গি বিরোধী বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিট (সিটিটিসি) স্বক্রিয় রয়েছে।

গণমাধ্যম শাখার দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখাযায়, বছরে ১০৪ জনের বেশি জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময়ে তাদের অস্ত্র, গুলি , বিস্ফোরক দ্রব্য এবং জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়।

বাংলাদেশে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক নিমূলের লক্ষে পুলিশের জঙ্গি বিরোধী বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিট (সিটিটিসি) কাজ করে যাচ্ছে।

জামায়াতুল মুজাহিদিনী জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলাটিম এবং আল্লাহরদল সহ বিভিন্ন জঙ্গি সংঠনের সদস্যরা স্বক্রিয় রয়েছে । ২০১৩ সালে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখায় দেশের স্বক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলোর একটি তালিকা দেয়। এরমধ্যে আটটি জঙ্গি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। এই দলগুলো হলো আনসারুল্লাহ বাংলাটিম, আল্লাহরদল, ইসলামি সলিডারিটি ফ্রম, তামিরউদ্দিন বাংলাদেশ, তৌহিদি ট্রাস্ট হিজতুব তাওহীদ, শাহৎদ-ই-নবুয়ত ও জামায়াত-আস-সাদাত। নিষিদ্ধ করা হয়।

২০০৯ সালে জঙ্গি কার্যক্রমে নজরদারি করার জন্য গঠিত হয় জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও প্রতিকার কমিটি। আইনশঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যানুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৫০ টি জঙ্গি সংঠন স্বক্রিয় রয়েছে। নব্য জেএমবিসহ আরো ১২ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০০৫ সালে শীর্ষ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা করে তাদের শক্তিমত্তা প্রদর্শন করে। এই জেএমবি চার বছরে ২৬ টি হামলায় মোট ৭৩ জন মানুষ হত্যা করে। এরআগে ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে, ২৩ জুন গোপালগঞ্জের বানিয়ারচর গির্জায় এবং ১৬ জুন নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে জঙ্গিরা বোমা হামলা করে।

এরপর বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালে ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের জনসভায় বোমা হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এম কিবরিয়াকে । এরআগে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যভিনিউয়ে বোমা হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হজরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজারে বোমা হামলা চালিয়ে বিট্রিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপরে বোমা হামলা চালানো হয়। এরআগে ২০০১ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা রকসিস সিনেমা হল, সার্কাসমাঠে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। ২০০২ সালের ১ মে নাটোরের গুরুদাসপুরে কিরন সিনেমা হলে এবং ৭ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের চারটি সিনেমা হলে জঙ্গিরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১ জুন গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারীতে হামলা করে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের জঙ্গি বিরোধী বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল বিভাগের উপকমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমাদের দেশে জঙ্গিবাদকে পুরোপুরি নিমূল করা যায়নি। তবে জঙ্গিদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বর্তমানে দেশে বড় ধরনের কোন নাশকতা সৃষ্টির সামর্থ নেই। এখন পর্যন্ত আটটি জঙ্গি সংঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সর্বশেষ আল্লাহরদলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৩১আগস্ট/এএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :