গর্ভাবস্থায় চা-কফি পানে গর্ভপাতের ঝুঁকি
গর্ভাবস্থা নারীদের জন্য একটি বিশেষ সময়। এ সময় একজন নারী নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়, শেখেন অনেক কিছু। এক নতুন জীবন জন্ম দিতে গিয়ে মানতে হয় অনেক কিছু। আর গর্ভের সন্তানকে ভালো রাখতে কিছু বিষয় মানা জরুরি। খাবারও খেতে হবে অনেক ভাবনা-চিন্তা করে। অন্তঃসত্ত্বাদের অনেকেই নিজেদের সতেজ রাখতে চা বা কফি পান করেন। তবে তারা জানেন না চা বা কফি পানই অনাগত সন্তানের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যদি আপনি সন্তানসম্ভবা হন তবে চা ও কফি খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। বলা হচ্ছে, দিনে দু-কাপ চা-কফিও নাকি সন্তানের শরীরের ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে সন্তানের লিভার তৈরির ক্ষেত্রে এবং লিভারের অসুখের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে এটি।
অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন কফি খাওয়া গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক। অল্পস্বল্প কফি খেলেই গর্ভপাত হওয়ার আশঙ্কা। এমনকী মৃত শিশুর জন্ম হতে পারে। আর যদি শিশু ঠিকমত জন্মায়ও তার ওজন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এক গবেষণা বলছে, গর্ভাবস্থায় কফি পান একেবারেই বন্ধ করার চেষ্টা করুন।
২০ থেকে ৪৮ বছর বয়সী মহিলাদের ওপর হয়েছে এই সমীক্ষা। ইংল্যান্ডের রয়্যাল কলেজের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিভাগ বলছে, মেয়েদের প্রতিদিন ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফিন খাওয়া একেবারেই উচিত না। অর্থাৎ তাঁরা সর্বাধিক দিনে দুকাপ কফি খেতে পারেন। গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া অধ্যাপক জ্যাক জেমস বলেছেন, কম মাত্রার ক্যাফেইনও গর্ভপাতের আশঙ্কা ৩৬ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। মৃত শিশুর জন্মের আশঙ্কা বেড়ে যায় ১৯ শতাংশ আর জন্মের সময় শিশুর ওজন স্বাভাবিক ওজনের ৫১ শতাংশ কমে যেতে পারে। আবার শৈশবেই লিউকোমিয়া রোগ আর স্থূলত্বের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
প্রত্যেক গর্ভবতী মায়েরা সাবধান থাকবেন কফি পানে। কফিতে ক্যাফেইন গর্ভস্থ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কফি রক্তে মিশে অর্ধেক হয়ে যেতে ঘণ্টাপাঁচেক সময় নেয়। তারপর তার মাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। গর্ভাবস্থায় এই সময় আরও বেশি লাগে। গর্ভাবস্থার ১৮ সপ্তাহে অর্ধেক ক্যাফিন রক্তে মিশতে ১৮ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। অর্থাৎ দীর্ঘ সময় শিশু ড্রাগের প্রকোপে থাকবে। এর প্রভাব পড়বে তার শারীরিক বিকাশে।
সুতরাং গর্ভাবস্থায় কফি খাওয়া কখনোই নিরাপদ নয়। এর মধ্যে থাকা ক্যাফেইন ও অন্যান্য উপাদান ভ্রূণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এমনকি গর্ভপাতও ঘটাতে পারে।
গর্ভাবস্থায় অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে। আর এটি কোষ্ঠকাঠিন্যকে বাড়িয়ে দিতে পারে। আবার গর্ভাবস্থায় মাকে বিশ্রাম নেওয়ার কথা বলা হয়। তবে চা-কফি খেলে ঘুম কমে যেতে পারে। এতে সন্তানসম্ভবা নারীর বিশ্রামের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
এ ছাড়া কফির ক্যাফেইন হিমোগ্লোবিন শোষণে বাধা দেয়। এতে রক্তশূন্যতা হতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণে রুচি কমিয়ে দেয়। এতে গর্ভাবস্থায় খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমে যেতে পারে ।
গর্ভাবস্থার নয় মাস চা-কফি সীমিত পরিমাণে খাওয়া ভালো। আর সবচেয়ে ভালো হয় একেবারেই এড়িয়ে যেতে পারলে।
(ঢাকাটাইমস/৩সেপ্টেম্বর/আরজেড/এজেড)