তিন বছরেও শেষ হয়নি রাস্তার কাজ, ভোগান্তি চরমে

সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর (নওগাঁ)
| আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:১২ | প্রকাশিত : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:৩০

নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ২২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ দীর্ঘ তিন বছরেও শেষ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় খানাখন্দে ভরে গেছে রাস্তাটি। ইতোমধ্যে গত মঙ্গলবার হাতিরপুল নামক সেতুতে ফাটল ধরায় মালবাহী ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এলাকার লাখো মানুষের ভোগান্তি চরমে ওঠেছে। গত প্রায় ৫-৬ মাস ধরে রাস্তার কাজ একদম বন্ধ থাকায় হতাশায় আছেন তারা।

জানা গেছে, রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কটি ছিল এলজিইডি’র আওতায়। গত চার বছর আগে এটি এলজিইডি থেকে সড়ক জনপদ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। এই সড়কটি নওগাঁ থেকে রাণীনগর এবং রাণীনগর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের মধ্য দিয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। রাস্তাটি প্রশস্ত এবং মজবুতভাবে পাকাকরণের জন্য গত ২০১৮ সালে টেন্ডার দেওয়া হয়। দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার রাস্তা এবং ২৬টি কালভার্ট ও চারটি সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০৫ কোটি টাকা। রাস্তা, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণে সময় দেওয়া হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন।

স্থানীয়রা বলছেন, রাস্তার কার্পেটিং তুলে কোনো রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় পরে থাকায় রাস্তাজুড়ে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বৃষ্টির পানি জমাট হয়ে অনেক জায়গায় হাঁটু পর্যন্ত কাদায় পরিণত হয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। এছাড়া অধিকাংশ সেতু-কালভার্ট ভেঙ্গে কাজ না করেই ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এদিকে রাস্তার এমন বেহাল দশার অজুহাতে পরিবহন মালিকরা দফায় দফায় ভাড়া বৃদ্ধি করছেন। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পথচারীরা।

অন্যদিকে, কাজের ধীরগতির কারণে গত বছর সাংবাদিকদের কাছে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন স্থানীয় সাংসদ ইসরাফিল আলম। এসময় তিনি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছিলেন। এরপর কাজের কিছু তোড়জোড় শুরু হলেও করোনার কারণে আবারও কাজ বন্ধ হয়ে যায়। যা এখনো শুরু হয়নি।

এ রাস্তার যাত্রী এমদাদুল ইসলাম, নাহিদ হোসেন, মকলেছুর রহমান, আবু হাসানসহ কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গত তিন বছর ধরে আমরা ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারী মালামাল পরিবহন, জরুরি রোগী নিয়ে রাস্তায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সাংসদ বেঁচে থাকতে তার তাগিদেও রাস্তার কাজ শেষ হয়নি। এখনতো তিনি বেঁচে নেই, তাগিদ দেওয়ার মানুষও নেই। কবে নাগাদ শেষ হবে এই রাস্তার কাজ একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন।’ এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাগব করতে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল হক বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রভাবে এবং লকডাউনের কারণে লেবার সংকট এবং মালপত্র না পাওয়ায় ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ করতে পারেনি। আশা করছি, দ্রুত কাজ শুরু হবে এবং চলতি বছরের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।’

(ঢাকাটাইমস/৪সেপ্টেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :