পৃথক হত্যা মামলায় যাবজ্জীবনসহ তিন আসামির দণ্ড

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:৩১

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক ও ব্লাক মেইলের জেরে রনি (৩০) নামে এক যুবককে হত্যা মামলায় সজিব হোসেন (৩২) ও সীমা খাতুন (২৫) নামে দেবর-ভাবীর যাবজ্জীবন এবং কুষ্টিয়া মডেল থানার কলেজছাত্র আসলান জেলিন হত্যার দায়ে তুষার আহম্মেদ ওরফে কানা তুষার (১৬)র ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।

সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের বিচারক মুন্সী মশিয়ার রহমান জনাকীর্ণ আদালতে আসামীদ্বয়ের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হলেন- দৌলতপুর উপজেলার হায়দারের চর গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে সজিব হোসেন (৩২) এবং তার বড় ভাবী প্রবাসী আফাজ উদ্দিনের স্ত্রী সীমা খাতুন (২৫)।

কলেজছাত্র হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার এনএস রোডস্থ করিম মঞ্জিলের বাসিন্দা ফরিদ আহম্মেদের ছেলে তুষার আহম্মেদ ওরফে কানা তুষার (১৬)।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় দৌলতপুর উপজেলার হায়দারের চর গ্রামের নাহারুল ইসলামের ছেলে রনি (৩০) নিজ বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী সোনাইকুন্ডি বাজারে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর ০১ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ৩টায় উপজেলার ৬নং চিলমারি ইউনিয়নের উদয়নগরস্থ পদ্মা নদীর চর থেকে নিহত যুবক রনির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহতের পিতা নাহারুল ইসলাম দৌলতপুর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত শেষে ৩০/০৯/২০১ তারিখে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। সেখানে তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রবাসী আফাজ উদ্দিনের স্ত্রী সীমা খাতুনের সাথে যুবক রনি সম্পর্ক তৈরি হয় যা দৈহিক সম্পর্ক পর্যন্ত গড়ায়। রনি তাদের দুজনের মধ্যে গড়ে উঠা সম্পর্কের বিষয়গুলো মোবাইলে ধারণ করে গৃহবধূ সীমা খাতুনকে ব্লাক মেইল করে অর্থ হাতিয়ে নিতে থাকে। এক পর্যায়ে রনির ডিমান্ড বাড়তে থাকে, এতে ক্ষুব্ধ সীমা খাতুন বিষয়টি তার দেবর সজিব হোসেনকে খুলে বলেন এবং সাহায্য চায়। পরে ভাবী-দেবরের যোগসাজসে পরিকল্পিতভাবে যুবক রনিকে হত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দৌলতপুর থানার প্রতিবেশী যুবক রনি হত্যা মামলার আসামি সজিব হোসেন ও সীমা খাতুনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে চার্জ গঠনপূর্বক দীর্ঘ সাক্ষ্য শুনানি শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামিদ্বয়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছর সাজার আদেশ দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করে।

অন্যদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের এপিপি আব্দুল হালিম জানান, ২০১৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টায় কুষ্টিয়া শহরের হেমচন্দ্র লেনের বাসিন্দা মাহবুব ইসলামের ছেলে সরকারি কলেজ একাদশ শ্রেণির ছাত্র আসলান জেলিন (১৮)কে কলেজ থেকে ডেকে নিয়ে আসামি তুষার আহম্মেদ ওরফে কানা তুষার শহরের বাবুর আলী গেটের সন্নিকটে তুহিন কনফেকশনারির পেছনে ধারালো চাকু দিয়ে উপর্যুপরি আঘাতে জখম করে। ঘটনাস্থল থেকে আসলান জেলিনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় নিহতের পিতার করা হত্যা মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্য শুনানি শেষে আসামি তুষার আহম্মেদ ওরফে কানা তুষারের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন সাজা হওয়ার কথা। কিন্তু আসামির বয়স বিবেচনায় কিশোর বয়সী হওয়ায় তাকে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।

(ঢাকাটাইমস/৭আগস্ট/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :