বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধের হুমকি

বেনাপোল প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:১০ | প্রকাশিত : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:৫২

দীর্ঘদিন ধরে পণ্য রক্ষণাবেক্ষণ, খালাস ও পরীক্ষণ যন্ত্র নিয়ে জটিলতা, জায়গা সংকটসহ নানা অব্যবস্থাপনা দেখা দিয়েছে বেনাপোল বন্দরে। এ জন্যে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের পাশাপাশি দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিয়েছেন ভারতীয় ট্রাক চালকরা।

গত সোমবার ভারতীয় ট্রাক চালকদের বাণিজ্য বন্ধের হুমকির বিষয়টি জানিয়েছেন বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন।

তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বাণিজ্য বাড়াতে বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা তাদের রয়েছে। এসব বাস্তবায়ন হলে বাণিজ্যে গতি ফিরবে বলেও জানান তিনি।

১৯৭২ সাল থেকে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে এ বন্দরে নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়ে আসছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। বারবার রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসায়ীরা সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। এছাড়া, বন্দরে জায়গার অভাবে দিনের পর দিন পণ্য নিয়ে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকায় লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে তাদের। যার প্রভাব পড়ছে দেশীয় বাজারে আমদানি পণ্যের উপর। অথচ এ বন্দর থেকে প্রতিবছর সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়।

ইতোমধ্যে বেনাপোল বন্দরের অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ জানিয়ে ভারতের পেট্রাপোলের বনগাঁ মোটরশ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন আল্টিমেটাম দিয়ে জানিয়েছে, দ্রুত পণ্য খালাসসহ অব্যবস্থানার স্থায়ী সমাধান না হলে তারা বেনাপোল বন্দরে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দেবে। এতে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, সুষ্ঠু বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেনাপোল বন্দরে সমস্যার অন্ত নেই। বন্দরে জায়গার অভাব আর খালাসের যন্ত্রপাতি বিকল থাকায় তারা সময়মত পণ্য নিতে পারছেন না। অথচ এ বন্দর থেকে প্রতিবছর তারা সরকারকে ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দিচ্ছেন। নিরাপত্তা সমস্যায় বার বার অগ্নিকাণ্ডে পথে বসছেন ব্যবসায়ীরা। দিনের পর দিন খালাসের অপেক্ষায় ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকায় আমদানি খরচ বাড়ছে। সন্তোষজনক সমাধানের মাধ্যমে যাতে বাণিজ্য সচল থাকে তার জন্য আলোচনা চলছে।

সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘ভারতীয়রা বেনাপোল বন্দরের অব্যবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এ পথে বাণিজ্য বন্ধের যে হুমকি দিয়েছে তার যৌক্তিকতা আছে। উন্নয়ন নিয়ে বেনাপোল বন্দরের কোনো মাথা ব্যথা নাই। বন্দরের ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৪০ হাজার মেট্রিক টন কিন্তু পণ্য থাকে সব সময় ২ লাখ মেট্রিক টন। অবহেলা অযত্ন খোলা আকাশের নিচে এসব পণ্য বৃষ্টির পানি-কাঁদাতে ভিজে মান নষ্ট হচ্ছে।’

বার বার বন্দর কর্তৃপক্ষকে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানানো হলেও নজরদারি কম বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে বেনাপোল বন্দরকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার জোর দাবি তুলেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

এ বিষয়ে ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, ‘উন্নয়ন বাড়াতে হলে বন্দরকে নৌ পরিবহনের অধীন থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে হবে। যা ইতোমধ্যে ভারত সরকার পেট্রাপোল বন্দরে করেছেন।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল জানান, ইতোমধ্যে বন্দরের বেশ কিছু অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। তবে বাণিজ্য সম্প্রসারণে নতুন জায়গা অধিগ্রহণ, পণ্যগার বাড়ানো, চুরি রোধে সিসি ক্যামেরা ও বন্দরের চারপাশে প্রাচীর নির্মাণের পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৮সেপ্টেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :