চার গোডাউন ঠাসা নকল প্রসাধনী, পাঁচজনের কারাদণ্ড
পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার এলাকায় তাজমহল টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে তাকওয়া এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ ধরনের প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার নকল বিদেশি কসমেটিকস জব্দ করেছে র্যা ব। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির মালিকসহ পাঁচজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলা এই অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিদেশি কসমেটিকস পণ্য জব্দ করে র্যা বের ভ্রাম্যমাণ আদালত। র্যা ব-১০ এর সদস্যদের সহায়তায় এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির সদরদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। আজকের অভিযান বিএসটিআই এবং র্যা বের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়।
অভিযানে র্যা বের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের মাঝে সৌন্দর্য বর্ধন বেড়েছে। ফলে মানুষের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে নকল কসমেটিকস দিয়ে বাজার সয়লাব হয়ে গিয়েছে। আমরা দেখছি তিন ক্যাটাগরিতে তারা নকল করে থাকে, চায়না থেকে শুধু প্রোডাক্টের খালি বোতল আমদানি করে, নিজেরাই বিভিন্ন কোম্পানির নামে প্রোডাক্ট এবং বোতল বানায়। এছাড়া তারা বাজার থেকে ব্যবহৃত পণ্যের খালি বোতল কিনে এনে ওয়াশ করে নকল পণ্য রিফিল করে বিক্রি করছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, আজকে যে প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে সেখান থেকে চীন থেকে তারা বোতল কিনে পরে স্থানীয়ভাবে নকল পণ্য রিফিল করে বাজারজাত করে। এখানে তারা বিভিন্ন প্রোডাক্ট তৈরি করে, যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। জনসন শ্যাম্পু, জনসন পাউডার, ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম, লোশন ইত্যাদি পণ্য তৈরি করছে। এই পণ্যগুলোর ব্যবহারের মাধ্যমে শরীরের নানা রকম সমস্যা ও ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে।
অভিযানে মালিকসহ মোট পাঁচজনকে আটক করা হয়। তাদেরকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে সাড়ে তিন কোটি টাকার সমমূল্যের পণ্য জব্দ করা হয়। তাদের চারটি দোকান এবং তিনটি শো-রুম সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।
অভিযান শেষে বিএসটিআই ফিল্ড অফিসার মো. শরিফ হোসেন বলেন, আজকের অভিযানে তাকওয়া এন্টারপ্রাইজের একতলা থেকে পাঁচ তলা পর্যন্ত মোট চারটি গোডাউন। তাকওয়া এন্টারপ্রাইজ ফর্সাকারী বিভিন্ন ব্রান্ডের ক্রিম, লোশন, শ্যাম্পু, সাবানসহ প্রায় ৫০ প্রকারের মতো প্রোডাক্ট তৈরি করে বাজারজাত করে আসছে, যার সবগুলো নকল। আনুমানিক সাড়ে তিন কোটি টাকার প্রোডাক্ট জব্দ করা হয়েছে। এসব পণ্যের বিএসটিআই থেকে অনুমোদন দেয়া হয় না এবং সবগুলোই অবৈধ।
বিএসটিআই কর্মকর্তা বলেন, ফর্সাকারী ক্রিম মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলোতে হাইড্রোক্লিন এবং মার্কারি নামক কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। ফলে তাতে মানবদেহে ক্ষতি হয় এবং ক্যানসার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
(ঢাকাটাইমস/০৮সেপ্টেম্বর/এআর/জেবি)