শিশুদের হৃদযন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি করে করোনা

প্রকাশ | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:৫৪

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

প্রাণঘাতী করোনায় শিশুদের আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঝুঁকি কম হলেও ভাইরাসটি শিশুদের জীবনও কাড়ছে। আনুপাতিক হারে কম হলেও শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে। বিশেষ করে করোনায় শিশুদের হৃদযন্ত্রে মারাত্মক ক্ষতি করছে। তাদের বিভিন্ন অঙ্গে প্রদাহসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে যা করোনা থেকে সৃষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে।

সম্প্রতি একদল মার্কিন বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, করোনা সংক্রমণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে শিশুদের হৃদযন্ত্র। ফলে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে ওদের।

 ‘দ্য ল্যানসেট ইক্লিনিক্যাল মেডিসিন জার্নাল’-এ প্রকাশিত হয়েছে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকদের গবেষণাপত্র। ওই গবেষণাপত্রে এই গবেষণার অন্যতম সদস্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অ্যালভারো মরেইরা জানান, উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে তিন-চার সপ্তাহ পর থেকে ‘মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লামেটরি সিনড্রোম’-এর  নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এই সমস্যাগুলোতে শিশুদের আইসিইউতে রেখেই চিকিৎসা করতে হয়। তারা দেখেছেন, এই সময় শিশুদের মধ্যে ‘মায়োকার্ডাইটিস’-এর সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এর ফলে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুদের হৃদযন্ত্রের পেশিগুলো। ফলে হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত টেক্সাসে ৬০০-রও বেশি করোনা আক্রান্ত শিশুদের গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। দেখা গিয়েছে, করোনার কোনও উপসর্গ দেখা না গেলেও হার্টের নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে শিশুদের মধ্যেও। করোনার প্রকোপ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার পরেও অনেক ক্ষেত্রেই শিশুদের মধ্যে হার্টের নানা সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। যে কারণে তারা পরবর্তীকালে ফের হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসছে।

একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, প্রায় তিন সপ্তাহ পর্যন্ত কোনও উপসর্গ ছাড়াই শিশুর শরীরে ঘাপটি মেরে থাকতে পারে করোনাভাইরাস! এই গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, করোনা শিশুদের শরীরে তেমন ক্ষতি করতে না পারলেও তাদের নিঃশব্দে সংক্রমিত করে তুলছে। উপসর্গহীন ওই শিশুদের থেকে অন্যরাও সংক্রমিত হচ্ছেন। ফলে সব মিলিয়ে শিশুদের উপর করোনার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নতুন করে ভাবাচ্ছে বিশ্বের অসংখ্য চিকিৎসক, বিজ্ঞানীদের। চিন্তা বাড়াচ্ছে অভিভাবকদেরও।

করোনায় শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে। এই কঠিন সময়ে তাদের বড়দের মনোযোগ ও ভালোবাসা প্রয়োজন। ঘরে শিশুদের জন্য বিনোদন ও খেলাধুলার ব্যবস্থা করা দরকার। শিশুদের সময় দিন। তাদের সাথে খেলাধুলা করুন, গল্প করুন, আনন্দ করুন এবং স্বাস্থ্য বিধিগুলো চর্চা করুন। পড়ার সময় হলে শিশুদের পড়তে বসান এবং নিজেই পড়ান।

যেসব শিশু ঝুঁকিপূর্ণ, যেমন যাদের ছোটবেলা থেকে হৃদযন্ত্রের সমস্যা আছে, হাঁপানি আছে বা যারা কিডনি রোগে ভুগছে বা যারা স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করে তাদের জ্বর-কাশিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। অসুস্থ হওয়া মাত্র চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করুন।

(ঢাকাটাইমস/১০ সেপ্টেম্বর/আরজেড/এজেড)