নোয়াখালীতে শিশুসহ দুই ‘হত্যা’
নোয়াখালীর কবিরহাট ও সদর উপজেলায় পৃথক ঘটনায় এক শিশু এবং এক কিশোর হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে কবিরহাট থানা ও দুপুরে সুধারাম থানা পুলিশ পৃথকস্থান থেকে লাশ দু‘টি উদ্ধার করে।
নিহতরা হলো, কবিরহাট পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড ঘোষবাগ চুনী হাজী বাড়ির আবুল কাশেমের ছেলে আশরাফ হোসেন অন্তর (১৩) ও সদর উপজেলার এওয়াজবালিয়া ইউনিয়নে চর শুল্লকিয়া গ্রামের জহুরুল হকের বাড়ির আব্দুর রহমানের ৩৪ দিন বয়সের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদাউস।
নিহত অন্তরের চাচা কাউছার আজিম মামুন অভিযোগ করে জানান, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার ভাতিজা বাড়ির পাশের একটি মাঠে ফুটবল খেলা দেখছিল। এসময় পূর্ব বিরোধের জের ধরে একই এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে নিজাম উদ্দিন আসিফ তার ওপর হামলা চালায়। অন্তরকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও তার বাম বুকে কামড় দিয়ে মাংস ছিঁড়ে নেয় তারা। এসময উপস্থিত লোকজন এগিয়ে এলে আসিফ পালিয়ে যায়।
পরে অন্তরকে উদ্ধার করে প্রথমে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে একইদিন বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে অন্তরের মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে অন্তরের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছলে তার পরিবার ও সহপাঠিদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি তার ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।
কবিরহাট থানার বঅরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মোহাম্মদ হাছান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় নিহতের মা বকুল আক্তার কুলছুম তিনজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
অপরদিকে, সদর উপজেলা এওয়াজবালিয়া ইউনিয়নের চর শুল্লকিয়া থেকে জান্নাতুল ফেরদাউস নামে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতের বাবা আব্দুর রহমান জানান, প্রতিদিনের মতো বুধবার রাতে খাওয়ার পর নিজ কক্ষে শিশু জান্নাতুল ফেরদাউসকে নিয়ে তিনি ও তার স্ত্রী আকলিমা আক্তার ঘুমিয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার ভোরে ঘুম ভাঙার পর শিশুটিকে তাদের বিছানায় দেখতে না পেয়ে খোজাখুঁজি করেন। এক পর্যায়ে সকাল ৬টার দিকে বাড়ির পূর্বপাশের একটি ডোবার মধ্যে ভাসমান অবস্থায় জান্নাতের লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন তারা।
সুধারাম মডেল থানার পরিদর্শক এমদাদুল হক জানান, খবর পেয়ে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বিকাল ৫টার দিকে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে। নিহত শিশুর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/পিএল)