নেপথ্যের আলো শেখ রেহানা

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:১৩

সৈয়দ আরিফ হোসেন

শেখ রেহানা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন, অতি আদরের ছোট ভাই শেখ রাসেলের প্রিয় দেনা আপা, বাঙালির আপামর জনসাধারণের প্রিয় ‘ছোট আপা’। ছায়া হয়ে, আলো হয়, পরামর্শ দিয়ে প্রতিনিয়ত আগলে রাখছেন প্রিয় বড় আপা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। আজ পর্যন্ত কখনই সামনে এসে কৃতিত্বের দাবি করেননি বরং নেপথ্যে থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সাহস যুগিয়ে, পরামর্শ দিয়ে পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

মুখে শুধুমাত্র ‘হ্যাঁ’ শব্দটি উচ্চারণ করলেই আওয়ামী লীগ কিংবা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হতে পারতেন। কিন্তু ছোট আপা তা হতে চাননি। ক্ষমতার মোহ তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। জাতির পিতার মেয়ে এবং একজন সফল প্রধানমন্ত্রীর বোন হিসেবে শেখ রেহানা কখনই আদিখ্যেতা কিংবা অহংকার মনোবৃত্তি দেখাননি, যা তাঁর সাদামাটা জীবনাচরণ দেখলেই বোঝা যায়।

মা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব যেমন পর্দার অন্তরালে থেকে বঙ্গবন্ধুকে সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন, তেমনি ছোট আপাও নেপথ্যের কারিগর হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। ছায়ার মতো পাশে থেকে প্রিয় বড় আপাকে উৎসাহ দিচ্ছেন। কঠিন দু:সময়ে বড় আপার সবচেয়ে ভরসার নাম শেখ রেহানা। আদরের ছোট বোন শেখ রেহানা সম্পর্কে জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তৃতায় প্রায়শই বলে থাকেন, ‘সবাই আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারে, কিন্তু ও কোনদিন যাবে না’। দুই বোন যেন একই আত্মার দুটি দেহ।

আজ পুরো বাংলাদেশ তাকিয়ে থাকেন দেশরত্ন শেখ হাসিনার উপর। আজ সারা দেশের আস্থা, ভরসার জায়গা শেখ হাসিনা। আর শেখ হাসিনার ভরসার জায়গা শেখ রেহানা। নীরবে, নিবৃত্তে বড় আপার ছায়াসঙ্গী হয়ে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছেন পিতার স্বপ্নপূরণে। শেখ রেহানার অনুপ্রেরণা আর উৎসাহেই জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ বিশ্ব নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন।

৭৫ এর ১৫ আগস্টের ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে বিদেশ বিভুঁয়ে অবস্থানরত বাঙালি জনসাধারণ, দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ করে জাতির পিতাসহ পরিবারের সকল সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে জনমত গড়ে তোলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আজ বাঙালি জাতি কিছুটা হলেও দায়মুক্তির পথ খুঁজে পায়।

২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার পরে দেশরত্ন শেখ হাসিনা ভেঙে পড়লে সাহস হয়ে পাশে থাকেন শেখ রেহানা। ওয়ান ইলেভেনে তৎকালীন তথাকথিত তত্ত্বাবধারক সরকার মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করলে আওয়ামী লীগে বিভক্তি দেখা দেয়। এ সময় দলের বিভক্তিকরণ রুখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন শেখ রেহানা। তিনি পর্দার আড়ালে থেকে ঐক্যের প্রতীক হয়ে দলের ঐক্য বজায় রাখেন। সর্বাত্মকভাবে দলকে আগলে রাখেন। শেখ রেহানা সেদিন দলের ঐক্য ধরে রাখতে পেরেছিলেন বিধায়ই আজ আওয়ামী লীগ টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। আজ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বড় বড় প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাংলাদেশ সারাবিশ্বের রোল মডেল। জননেত্রী শেখ হাসিনার এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রার নেপথ্যের কারিগর শেখ রেহানা।

সর্বশেষে বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসে নেপথ্যের আলোকবর্তিকা হিসেবে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নাম যেমন সুপ্রতিষ্ঠিত, তেমনি আজ থেকে ৫০ কিংবা ১০০ বছর পরে উন্নত বিশ্বে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে দেশের অর্থনৈতিক ইতিহাস রচনায় জননেত্রী শেখ হাসিনার নামের পাশেই থাকবে শেখ রেহানার নাম।

লেখক: সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ