শরীয়তপুরের পদ্মায় মিলছে না ইলিশ

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৫২ | আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:০২

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

সাগরের নিষেধাঞ্জা শেষে হয়ে গেলেও পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরা না পড়ায় শরীয়তপুরের জেলে পরিবার অভাব-অনটন আর চরম হতাশার মধ্যে দিন পার করছেন। হাহাকার চলছে জেলার চারটি উপজেলার-জাজিরা, নড়িয়া, ভেদেরগঞ্জ, গোসাইর-হাট পদ্মার পাড়ের জেলে পল্লীতে।

পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও শীতলক্ষা নদীর ইলিশকে ঘিরেই এখানকার জেলেদের জীবন ও জীবিকার চাকা ঘুরছে। ইলিশের ভরা মুসৌম চললে ও দেখা নেই রুপালি ইলিশের। ইলিশের ভরা মৌসুম হলে পদ্মা নদীতে আশানুরুপ ইলিশ ধরা না পড়ায় হতাশ জেলেরা। মাঝে মধ্যে বৈরী আবহাওয়া থাকায় ঠিকমত মাছ ধরতে পারছেন না।

নদীতে জাল ফেলে দুয়েকটা ইলিশের দেখা পেলেও তা হয়তো নিজেদের পরিবারের আহরে চলে যায়। ইলিশ ধরা না পড়ায় অভাব-অনটনে দেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে জেলেদের। এনজিওর ঋণ আর মহাজনের দাদনের ভাবনাই যেন জেলেদের নেমে এসেছে চরম হতাশা।

দেশের বৃহত্তর মৎস অবতরণ কেন্দ্রের মধ্যে শরীয়তপুর অন্যতম স্থান। জেলার গোসাইরহাট-উপজেলার কুচাইপট্রি মাদ্রাসার, মান্দারতলি, কোদালপুর ৬ নম্বর ঘাট, কোদালপুর ঠান্ডার বাজার, চর জালালপুর, ভেদেরগঞ্জ নরসিংহপুর ফেরিঘাট, নুরুমাঝির বাজার, গৌরং বাজার, কাচিকাটা, হাওলাদার বাজার, নড়িয়া সুরেস্বরঘাট ওয়াবদা, চন্ডিপুর, চরত্রা, নোয়াপাড়া, মোক্তাকরের চর, খেজুরতলা, জাজিরা বিলাশপুর, কাজিয়ার চর, কলিকালিরচর, কুন্ডেরচর, পালেরচর, নাও ডোবা বাজার, মাঝির ঘাটে দেখা যায় নোঙর করে আছে জেলেদের শতাধিক ট্রলার।

বাজারে নেই পদ্মার ইলিশ। আড়তে অলস সময় পার-করছেন আড়তদাররা। দুয়েক ঝুরি ইলিশ মাছ ঘাটে আনা হলেও নেই হাঁকডাক।  অথচ বছরের এ ভরা মৌসুমে জেলেরা মহোৎসবে রুপালি ইলিশ ধরেন, ট্রলার ভর্তি করে মাছ নদী থেকে নিয়ে আসেন অবতরণ কেন্দ্রে। মাছ রাখতেই শুরু হয় ক্রয়-বিক্রায়ের সরগরম। কিন্ত বতর্মানে চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। এই সময়ে শত শত মণ ইলিশ অবতরণ কেন্দ্রে আসার কথা থাকলেও দেখা নাই ইলিশের।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে মৎস অবতরণ কেন্দ্রে ও নদীতে ঘুরে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাগরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও প্রকৃতির নিষেধাজ্ঞা রয়ে গেছে। সামনে আছে ‘মা’ ইলিশের নিষেধাজ্ঞা। নদীতে ইলিশ ধরতে না পারায় চরম বিপাকে পড়েছেন জেলেরা। ছোট-ছোট ট্রলারে ফাঁকে-ফাঁকে দিন-রাত জাল ফেলে যে মাছ পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে ট্রলারের তেলের খরচও হয় না।

জেলেরা আরও জানান, অনেকে এনজিও এবং বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সংসার চলে। আবার ভরা মৌসুমের ইলিশ বিক্রি করে ঋণের টাকা পরিশোধ করেন। কিন্ত ইলিশ ধরা না পড়ায় দেনাও  শোধ করতে পারছে না।

জেলা মৎস কর্মকর্তা আব্দুর রঊফ জানান, যে কোনো কারণে হোক ইলিশ ধরা পড়ছে না। একমাত্র আল্লাহ ভাল জানেন।  

(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/কেএম)