মহাপরিচালক আসবেন তাই...

নোয়াখালী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:১১

২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে আসবেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক ডা. খোরশেদ আলম। এ জন্য শনিবার সকাল ৮টার মধ্যে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা হাসপাতালে উপস্থিত। হাসপাতাল স্টাফদের এমন দৃশ্য দেখে ভর্তি রোগী ও স্বজনরা রীতিমত অবাক হয়েছে। কারণ অন্যান্য দিন যেখানে ডাক্তার-কর্মচারীরা বেলা ১০টার আগে হাসপাতালে পদধুলি ফেলেন না সেখানে শনিবার সকাল ৮টার মধ্যে সকলের উপস্থিতি ছিল বিস্ময়কর। হাসপাতালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের আগমনকে কেন্দ্র করে ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। তিনি (মহাপরিচালক স্বাস্থ্য) আসবেন, তাই এতো আয়োজন।

সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে এই দৃশ্য দেখা গেছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল সাড়ে ৫টা) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এসে পৌঁছাননি।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নোয়াখালী জেলা শাখার সভাপতি ও আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের নেফ্রোলোজি (কিডনি) বিভাগের প্রধান ডা. ফজলে এলাহী খান বলেন, দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোরশেদ আলম হাসপাতাল পরিদর্শনে আসবেন এজন্য হাসপাতালে সকল চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা নিদিষ্ট সময়ে হাজির হয়েছেন। ফাঁকিবাজ ডাক্তারদের একাধিকবার সতর্ক করে দেওয়ার পরেও তারা বিষয়টি কর্ণপাত করেননি।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ ও বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের ব্যাপক উপস্থিতি। চক্ষু বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মনিরুজ্জামান শনিবার যথাসময়ে তার কক্ষে এসে রোগী দেখছেন। তার বিরুদ্ধে অন্যান্য দিন হাসপাতালে গড়হাজির থাকার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরিবর্তে একজন প্যারামেডিকেল পাস চিকিৎসা সহকারীর মাধ্যমে রোগীদের চক্ষু চিকিৎসা হয়ে আসছে। এছাড়াও চর্ম, যৌন রোগ, মেডিসিন, দন্ত, গাইনি ও শিশু বিভাগে দীর্ঘদিন যাবত মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নোয়াখালী ম্যাটস- এর (মেডিকেল এসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল) ইন্টার্নি শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা চলে আসছে। তবে শনিবার চর্ম, যৌন, দন্ত, গাইনি ও শিশু বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যথাসময়ে হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। গাইনি, ডায়েরিয়া ও শিশু ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৯টার মধ্যে ওয়ার্ড থেকে রোগীর স্বজনদের বের করে দিয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ডাক্তার রাউন্ড দিচ্ছেন।

হাসপাতালে ভর্তি রোগীর স্বজন মেহেরাজ বলেন, তিনি তার নানাকে নিয়ে গত পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালে রয়েছেন। বিগত দিনগুলোতে নিয়মিত ডাক্তার, নার্স ওয়ার্ডে রোগী দেখতে না আসলে ও শনিবার সকাল ডাক্তার নার্স এসে হাজির। শুনেছি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বড় কর্মকর্তা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসবেন। তাই আজ এতো আয়োজন। একই কথা বললেন ডায়েরিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি এক শিশু রোগীর নারী অভিভাবক। গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর স্বজন সুবর্ণচর উপজেলার বাসিন্দা রফিক উল্যাকে রসিকতা করে বলতে শোনা গেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বড় কর্তারা যদি মাসে মাসে হাসপাতাল পরিদর্শনে আসতেন তা হলে আমাদের মতো গরিব রোগীরা উপকৃত হতো। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়েছে। যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। এখানে অনিয়ম-ই নিয়মে পরিণত হয়েছে।

হাসপাতালে সহকারী পরিচালক ডা. হাসিনা ইসলাম বলেন, করোনার কারণে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবায় কিছুটা ব্যত্যয় ঘটেছে। তবে রোস্টারের মাধ্যমে ডিউটি বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। রোগীর লোকেরা অনেক সময় না বুঝেই অভিযোগ করেন।

(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :