ভোলায় সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ

প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:৩০

ভোলা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ভোলা সদর উপজেলায় ভোলা-বরিশাল মহাসড়কে বন বিভাগের লাগানো গাছ জোরপূর্বক কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কান্টু হাওলাদার নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে ওই ব্যক্তি উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের লাহারী বাজার এলাকা থেকে ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা নাম দিয়ে কেটে নেয়ার সময় স্থানীয়রা তাকে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে স্থানীয়দের বাধার মুখে ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার লোকজন গাছ কাটা বন্ধ করে সেখান থেকে চলে আসে।

স্থানীয়রা জানায়, ভোলা-বরিশার মহাসড়কের ভোলা অংশের পরানগঞ্জ বাজার থেকে ভেদুরিয়া ফেরিঘাট এলাকা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে ভোলা বনবিভাগ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপন করে। গাছগুলো বড় হলে ১৯৯৬ সালে প্রথমে টেন্ডারের মাধ্যমে এ গাছ বিক্রি করা হয়। তখন ছোট গাছগুলো রয়ে যায়। এরপর গত এক দেড় মাস আগে বাকি গাছগুলো পুনরায় টেন্ডার দেয়া হয়। কিন্তু ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি এনজিও সংস্থা এ গাছগুলো তাদের লাগানো বলে আদালতে একটি মামলা করে।

কিন্তু স্থানীয়রা বলছে, তারা কখনও ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থাকে এ রাস্তায়া গাছ লাগাতে দেখেনি। পরবর্তীতে বন বিভাগ বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করে। এ গাছ নিয়ে আাদলতে বিচার চলমান আছে। হঠাৎ করে ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নাম বলে স্থানীয় কান্টু হাওলাদার নামে এক লোক সকালে লোকজন নিয়ে গাছ কাটতে এলে স্থানীয়রা তাদের বাধা দেয়। পরে বন বিভাগের লোক ও স্থানীয়দের বাধার মুখে তারা গাছ ফেলে রেখে চলে যায়।

অভিযুক্ত কান্টু হাওলাদার জানান, ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা ২০১১ সালে সড়ক ও জনপথ থেকে এ জায়গা লিজ নিয়ে গাছ লাগায়। কিন্তু বন বিভাগ সেই গাছ টেন্ডার দিয়ে বিক্রি করে দেয়। এ নিয়ে ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা হাই কোর্টে মামলা করলে কোট তাদের পক্ষে রায় দেয়। পরে বন বিভাগ এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে রিট করে। সুপ্রিম কোর্ট গত ৮ সেপ্টেম্বর ৩০ দিনে মধ্যে ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থাকে গাছ অপসারণ করতে বলে। তাই আমি গাছ কেটেছি।

গাছের টেন্ডার পাওয়া ঠিকাদার গালিব ইবনে ফেরদাউস জানান, আমি সরকারি নিয়ম মেনে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে এ গাছগুলো পেয়েছি। এ গাছগুলো সরকারি নিয়মে এখন আমি মালিক। কিন্তু স্থানীয় কান্টু হাওরাদার নামে এক লোক গায়ের জোরে সরকারি কোনো নিয়ম নীতি না মেনে গাছ কাটতে যায়। পরে সে নিজেকে ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার লোক বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু সে সমাজ উন্নয়ন সংস্থার কোনো পদে আছে জিজ্ঞেস করলে সে কোনো উত্তর দিতে পারেনি।

ভোলা বন বিভাগের সদর রেঞ্জের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা কাউকে গাছ কাটতে বাধা প্রদান করিনি। সেখানকার উপকার ভোগীরা গাছ কাটতে বাধা দিয়েছে। এ রাস্তায় ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা কোনো গাছ লাগায়নি। এগুলো বন বিভাগের লাগানো গাছ। আর এ জন্যই আমরা সরকারি নিয়মে এগুলো টেন্ডার দিয়েছি। সে অনুযায়ী ঠিকাদারকে ওয়ার্ক অর্ডারও দিয়েছি। পরে ভোলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি এনজিও আদালতে মামলা করে। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আদালত থেকে যদি তারা রায় পায়, তবু সরকারি নিয়মে সড়ক ও জনপথ বন বিভাগকে বললে তারা বন বিভাগ চিঠি দিয়ে গাছের মূল্য নির্ধারণ করে দেবে। সে অনুযায়ী টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গাছ কাটতে হবে। এককভাবে কোনো সংস্থা বা ব্যক্তি গিয়ে সরাসরি গাছ কাটতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব।

(ঢাকাটাইমস/১৩সেপ্টেম্বর/এলএ)