সিরাজগঞ্জে বন্যায় সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:৩৩

রানা আহমেদ, সিরাজগঞ্জ

এ বছর বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ায় সিরাজগঞ্জের সাত উপজেলার গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ছয় উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের ২৭৪ কিলোমিটার সড়ক ও ১৪৫টি মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও ৬০টির বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠে এসকল ক্ষতি হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৭ কোটি টাকা।

স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও শিক্ষা কার‌্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উজানের ঢলে প্রথম পর্যায়ে যমুনা নদীতে ২৫ জুন পানি বৃদ্ধি পায়। পর্যায়ক্রমে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর, চৌহালী, তাড়াশ ও উল্লাপাড়ার ৬০টি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করে। এতে বন্যায় কোথাও ব্রিজ-কালভার্টের সংযোগ সড়ক ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আবার কোথাও ভেঙ্গে গেছে কালভার্ট। দীর্ঘায়িত পানিতে নিমজ্জিত অধিকাংশ সড়কের বিটুমিন উঠে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ। সব মিলিয়ে জেলার ২৭৪ কিলোমিটার সড়ক ও ১৪৫টি মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও ৬০টির বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে।

সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, এবারের বন্যায় জেলায় মোট ২৭৪ কিলোমিটারের মতো গ্রামীণ ও আঞ্চলিক সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখনো সব জায়গা থেকে পানি না নামায় সম্পূর্ণ ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে এই ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে। বন্যার পানি নেমে গেলে এখন পর্যন্ত সড়কগুলোতে যে ক্ষতি হয়েছে তাতে মেরামত বাবদ অন্তত ৬১ কোটি টাকা লাগবে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল্লাহ জানান, বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় জেলার ১৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে, যার ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে প্রায় ৬ কোটি টাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই বন্যার পানি সম্পূর্ণ নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করা হবে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, জুনের শেষের দিকে যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুরে বাড়তে থাকে। ২৮ জুন উভয় পয়েন্টেই বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এরপর ৪ জুলাই থেকে আবার কমতে শুরু করে এবং ৬ জুলাই বিপৎসীমার নিচে নেমে যায়। ৯ জুলাইয়ের পর দ্রুত বাড়তে থাকে এবং ১৩ জুলাই যমুনার পানি দ্বিতীয় দফায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে। টানা ২৫ দিন পর ৭ আগস্ট যমুনার পানি উভয় পয়েন্টেই বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। ১১ আগস্ট পর্যন্ত কমতে থাকলেও ১২ আগস্ট থেকে আবারও পানি বাড়তে শুরু করে। ২০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে আসে। তবে ২১ আগস্ট থেকে আবারও পানি কমতে শুরু করে। টানা ১২ দিন ধরে কমার পর ০২ সেপ্টেম্বর আবারও বাড়তে থাকে। তবে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে যমুনার পানি বিপদসীমা অতিক্রমের সম্ভবনা নেই। বৃষ্টিপাত কমলেই দ্রুত পানি কমবে বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/পিএল)