যুক্তিহীন উক্তির খপ্পরে ইউটিউব

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:১২

বিনোদন প্রতিবেদক

গোটা বিশ্ব এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। প্রযুক্তি মানুষকে সবকিছু সহজ করে দিয়েছে। ফলে এক শ্রেণি এই প্রযুক্তির অপব্যবহার করছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল ইন্টারনেটের অন্যতম মাধ্যম ইউটিউব। বর্তমানে সবার হাতে হাতে স্মার্ট ফোন। ডিজিটাল রোগে আক্রান্ত অনেকেই। জনে জনে চ্যানেল। যখন যেখানে খুশি সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই যা ইচ্ছে তাই আপলোড করা যাচ্ছে। যার শিরোনাম থাকে উদ্ভট। নেই কোনো নিয়ন্ত্রণ, নেই জবাবদিহিতা। যার ফলে অনেকেরই সম্মানহানি হয়। সমাজে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। ইউটিউবে সরকারবিরোধীও অনেক অপপ্রচারও হচ্ছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের যথার্থ শ্লোগান ছিল ‘সত্য মিথ্যা যাচাই আগে, ইন্টারনেটে শেয়ার পরে’। কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে উল্টোটা। যাচাই-বাছাই না করেই উদ্ভট শিরোনাম জুড়ে আপলোড করা হচ্ছে বিভিন্ন ভিডিও এবং পোস্ট। যার শিরোনামের সাথে কনটেন্টের কোনও মিল নেই।

সম্প্রতি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংগঠনের মধ্যে এফডিসিতে ব্যক্তিগত কিছু ঝামেলা তৈরি হলে সেটি ইউটিউবের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসায় চলচ্চিত্রের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক লোক জানিয়েছেন। অভিনেত্রী কবরী, অভিনেতা শিবা সানু, আনিসুর রহমান মিলনসহ কয়েকজন তারকা বলছেন, ব্যক্তিগত বিষয় কেন ইউটিউবের মাধ্যমে বাইরের লোকজন জানবে? নিজেদের ব্যাপার নিজেদের মধ্যেই মিমাংসা করতে হবে।

ইউটিউবের জন্য কোনো অফিস লাগে না, খরচ লাগে না, কর্মচারী লাগে না। ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই চ্যানেল মালিক। এসব চ্যানেলের কারণে হৃাস পাচ্ছে টিভির দর্শক। আবার এক শ্রেণির মানুষ এসব ভিত্তিহীন তথ্য বিশ্বাস করছেন। যার ফলে বিপাকে পড়েন সম্মানী কিছু লোক।

ক্যামেরা, কথা ও ইউটিউব চ্যানেল সহজলভ্য হয়ে যাওয়ায় যার যেভাবে খুশি নিজ গতিতে কথা বলেই যাচ্ছেন। কথা যাই হোক, তাদের টার্গেট ভিউয়ার্স। আর এসব কল্পকাহিনি অনেকেই যাচাই-বাছাই না করেই নেট দুনিয়ায় লাইক শেয়ার করে অন্যের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। যা অন্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।

ইন্টারনেটের কারণে হারিয়ে গেছে খেলার মাঠ। তরুণদের একমাত্র খোরাক ইন্টারনেট। যার ফলে কমে গেছে খেলার মাঠ, কমে যাচ্ছে খেলাধুলার সুযোগও। মাঠের খেলাধুলা ছেড়ে বর্তমান তরুণ প্রজন্ম ঝুঁকেছে ইউটিউবের দিকে, ইন্টারনেটের দিকে। ফলে বিনোদনের ডিজিটালের মাধ্যমটি মানসিক ভাবে চাপে ফেলছে।

ইন্টারনেট নির্ভর বিনোদনকে আপনি কীভাবে দেখেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শিল্পী সমিতির সভাপতি ও অভিনেতা মিশা সওদাগর বলেন, আমি এটাকে খারাপভাবে দেখি না। মাধ্যমে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ভবিষ্যতে হয়তো আরো পরিবর্তন হবে। আর মাধ্যম পরিবর্তন হয়ে যেটা এসেছে, তার অনেকগুলো ভালো দিক যেমন আছে, তেমনই খারাপ দিকও আছে। যেমন দেখুন, আগেও টিভি ছিল, এখনও আছে। কিন্তু আগে একটা ‘কনটেন্ট’ অনেকখানি ‘এডিট’ হয়ে যেত, এখন সেটা ‘আনএডিটেড’ অবস্থায় চলে যাচ্ছে, বিশেষ করে ইন্টারনেটে। অনেক চ্যানেলেই আমরা আজকাল দেখছি যে, যা ইচ্ছে তাই দেখাচ্ছে। আগে যেখানে খারাপ কনটেন্ট ঢুকে যাওয়াটা কঠিন ছিল, এখন সেখানে সেটা হরহামেশাই হচ্ছে।

এতে যেটা হয়েছে, আগে পাঁচজন মানুষ যে খারাপ কনটেন্টটা দেখত, এখন সেটা ৫০ জন মানুষ দেখছে। ইন্টারনেটে অবশ্য আজও অনেক ভালো কিছু দেখার আছে। কিন্তু সমস্যা হলো, খারাপের মাত্রাটা এখন সহজলভ্য হয়ে গেছে। মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা মনে করছেন, ইউটিউবের জন্য নীতিমালা সময়ের দাবি। তা না হলে এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে অনেক বড় ক্ষতি হবে।

ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/এলএম/এএইচ