দেশে ছয় লাখ টন পেঁয়াজ মজুদ আছে: বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:৪৯ | আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আগামী এক মাসের চাহিদা অনুযায়ী দেশে প্রায় ছয় লাখ টন পেঁয়াজ মজুদ আছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসী। আর এক মাস সময় পেলেই বিকল্প বাজার থেকে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ এনে পরবর্তী চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে জানান তিনি।

বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে আগামী মৌসুম পর্যন্ত ১০ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। তার মধ্যে আমাদের প্রায় ৬ লাখ টন পেঁয়াজ আছে। ঘাটতি ৪ লাখ টন।’ আর এ ঘাটতি এক মাসের মধ্যেই মিটিয়ে ফেলা সম্ভব বলে জানান তিনি।

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভারত গত মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) হঠাৎ করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এরপর ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই দেশের বাজারে পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা ছুঁয়ে ফেলে।

অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্য বৃদ্ধি ও মজুদে ঘাটতির কারণে গত বছর এই সেপ্টেম্বরেই প্রথমে পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য বৃদ্ধি এবং পরে রপ্তানি বন্ধ করেছিল ভারত। এরপর বাংলাদেশের বাজারে হু হু করে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম, ৫০-৬০ টাকা কেজি দামের পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২৫০-৩০০ টাকায়।

পরে মিয়ানমার, পাকিস্তান, চীন, মিশর, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নানা রঙের ও স্বাদের পেঁয়াজ আমদানি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে সরকার। নতুন পেঁয়াজ ওঠার পর গত মার্চে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ভারত।

এখন আবার পেঁয়াজ রপ্তানি না করার ঘোষণা দেয় ভারত। নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণ সম্পর্কে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “দাম বেড়ে গেছে এবং অভ্যন্তরীণ বাজারেও ঘাটতি রয়েছে। মওসুমের কারণে এই ঘাটতি দেখা দিলেও কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেই গত কয়েক মাসে বিপুল রপ্তানি হয়েছে।’ ভারত সরকারের পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধের ঘোষণার পর স্থলবন্দরগুলো দিয়ে পেঁয়াজ আসা বন্ধ হয়ে গেছে।

দাম আরও বাড়তে পারে- এমন আশঙ্কায় ঢাকার বাজারে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন পেঁয়াজ কিনতে। অনেকে বেশি বেশি করে কিনেছেন। এ সুযোগ নেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিক্রিও বহুগুণ বেড়েছে।

তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে আগামী এক মাসের পেঁয়াজ মজুদ আছে। আর এ সময়ের মধ্যেই বিকল্প বাজার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে সরবরাহ স্বাভাবিক করা যাবে। তবে, এ সময়টুকুর অপেক্ষায় না থেকে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়াতেই সিন্ডিকেটে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা অলরেডি মিয়ানমার, চীন ও তুরস্কের সঙ্গে কথা বলেছি। এক মাস সময় পেলেই সেখান থেকে পেঁয়াজ আনতে পারবো। আর এক মাসের জন্য যে পরিমাণ প্রয়োজন, সেটা আমাদের মজুদ আছে।

তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের একটি অংশ সুযোগ নেয়ায় এবং সাধারণ ক্রেতারা 'প্যানিক বায়িং' করায় পেঁয়াজের বাজারে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বাজারের ঘাটতি মেটাতে আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে বলে জানান মন্ত্রী।

বর্ডারে আটকে থাকা পেঁযাজ দু’একদিনের মধ্যে প্রবেশ করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের এক মাস কষ্ট সহ্য করতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য জেল-জরিমানা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমার থেকে ১২-১৩শ টন পেঁয়াজ লোড হয়েছে, যা কিছুদিনের মধ্যে আসবে। একমাস আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে। এক মাসের মধ্যে সাপ্লাই চেইন ফুল করে দেব।

(ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/ইএস)