‘কোভিড স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্র আরও সঙ্কুচিত করছে’

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:০৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সরকার করোনা মহামারির সময় আরও বেশি কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠেছে। দেশগুলোতে সরকারের যেকোনো সমালোচনা বন্ধে জারি করা হচ্ছে নতুন আইন ও নিয়ম-কানুন। কোভিড-১৯ সংকটকালে সৃষ্ট পরিস্থিতি গোটা অঞ্চলে স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রকে আরও সংকুচিত করছে।

 ‘কোভিড-১৯ এর সংকটকালে ও তারপরে নেপালের গণমাধ্যমের অবস্থা’ বিষয়ক  ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আর্টিকেল নাইনটিন এই তথ্য জানায়। ১৫ সেপ্টেম্বর আর্টিকেল নাইনটিন ও মিডিয়া এডভোকেসি গ্রুপ নেপাল যৌথভাবে এই অনলাইন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আর্টিকেল নাইনটিন এর দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন নেপালের দৈনিক অন্নপূর্ণা পোস্টের সাবেক সম্পাদক হরি বাহাদুর থাপা, ফেডারেশন অব নেপালি জার্নালিস্টের প্রেসিডেন্ট গোবিন্দ আচারিয়া এবং ইংরেজি দৈনিক হিমালয়ন টাইমসের সদ্য পদত্যাগী সম্পাদক প্রকাশ রিমাল। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মিডিয়া এডভোকেসি গ্রুপ নেপালের নির্বাহী পরিচালক ববিতা বাসনেত। বাংলাদেশ ও নেপালের বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিক, সম্পাদক, মতপ্রকাশকর্মী ও মানবাধিকারকর্মীরা অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। 

সভাপতির বক্তব্যে ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি বাংলাদেশ ও নেপালের গণমাধ্যম শিল্পকে অভিন্ন সংকটের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এই সংকট থেকে উত্তরণে প্রাথমিকভাবে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম ব্যবস্থপানার সামগ্রিক মূল্যায়ন জরুরি। নতুন স্বাভাবিকে টিকে থাকতে হলে সাংবাদিকতার ডিজিটাল রূপান্তর ও গবেষণাভিত্তিক আধেয় (কন্টেন্ট) তৈরির পাশাপাশি গণমাধ্যমের আয় বাড়ানোর কৌশলের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে হরি বাহাদুর থাপা বলেন, ’নেপালে স্বাধীন সাংবাদিকতার ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। এখানকার গণমাধ্যম শিল্প এখনো নবীন। বিনিয়োগকারী ও মালিকদের বেশিরভাগই মূলত বণিক শ্রেণির। নিজেদের ব্যবসার স্বার্থে ও প্রভাব বিস্তার করতে তারা গণমাধ্যমকে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করে। বর্তমান সংকটকালে এরাই অন্যায্যভাবে কর্মী ছাঁটাই করছে।’

বাহাদুর থাপা বলেন, ’দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নেপালের বর্তমান সরকার কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠেছে। সরকারের যেকোনা সমালোচনা কঠোরভাবে দমন করা হচ্ছে। এটি সাংবাদিকদের মনে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে, যার কারণে বর্তমানে নেপালের গণমাধ্যমে সরকারের কোনো সমালোচনা হয় না।’ 

গোবিন্দ আচারিয়া বলেন, ’করোনা পরিস্থিতির দরুণ নেপালজুড়ে ৬০০ পত্রিকা ও সাতটি রেডিও স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। দুই হাজারেরও বেশি গণমাধ্যমকর্মী চাকরিচ্যুত হয়েছেন। আর বর্তমানে কর্মরত সাংবাদিকদের অন্তত ৫০ শতাংশ নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না। জীবিকার সংকটের পাশাপাশি কর্মরত সাংবাদিকদের করোনা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নির্ভরযোগ্য ও সঠিক তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রেও লড়াই করতে হচ্ছে।’

প্রকাশ রিমাল বলেন, বিজ্ঞাপন খাত থেকে আয় ৮০ শতাংশ কমে যাওয়ায় অনেক গণমাধ্যম অর্থনৈতিকভাবে ধুঁকছে। করোনার  অজুহাতে বেশিরভাগ গণমাধ্যম ৫-৬ মাস ধরে কর্মীদের বেতন দিচ্ছে না। সাংবাদিকরা যাতে তাদের ন্যায্য বেতন সময়মত পান – এটা নিশ্চিত করাই এই মুহূর্তের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।’

(ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/জেআর/জেবি)