হিংসা ও ভুয়া তথ্য ছড়ানো বন্ধে কিম-কেটিদের অভিনব পদক্ষেপ

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:০০

বিনোদন ডেস্ক

তুমুল জনপ্রিয় মার্কিন মডেল কিম কার্দাশিয়ান, গায়িকা কেটি পেরিসহ বেশ কয়েকজন বিখ্যাত তারকা ঘোষণা দিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিংসা ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রতিবাদ জানাতে তারা তাদের ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটঅ্যাপসহ সব ধরনের সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেবেন।

মঙ্গলবার এক লিখিত বিবৃতিতে এমন জানান কিম কার্দাশিয়ান। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেভাবে ভুয়া খবর শেয়ার করা হচ্ছে, তার একটা গুরুতর প্রভাব মানুষের ব্যক্তি জীবনে পড়ছে। এটা আমেরিকার নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ওপারও প্রভাব ফেলছে। তাই তারকারা তাদের সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট সাময়িক বন্ধ রাখছে।

নাগরিক অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারীরা #StopHateforProfit (ঘৃণার বিনিময়ে মুনাফা অর্জন বন্ধ করো) এই হ্যাশট্যাগ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে। তারই অংশ হিসাবে এই অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছেন কিম। তিনি বলেন, একটা গোষ্ঠী আমেরিকাকে বিভক্ত করার উদ্দেশ্য নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, ভুয়া তথ্য শেয়ার করছে। তাতে আমরা চুপ করে বসে থাকতে পারি না।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বয়কট করার এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন কেটি পেরি, লিওনার্ন্দো ডিক্যাপ্রিও, সাচা ব্যারন কোহেন, জেনিফার লরেন্সের মতো বড় তারকারাও। কেটি পেরি তার ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘যারা হিংসা ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ছড়ানোর লক্ষ্যে পোস্ট দিচ্ছে, সেসব গোষ্ঠী বা পোস্টের ব্যাপারে এসব প্ল্যাটফর্মের উদাসীনতা সম্পর্কে আমি মুখ বুঁজে থাকতে পারি না।’

#StopHateforProfit campaign,-এর উদ্যোক্তারা এই আন্দোলন শুরু করেছিলেন জুন মাসে। তাদের অভিযোগ ছিল, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম ঘৃণা উদ্রেককারী মন্তব্য এবং ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য বন্ধ করার যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এই গোষ্ঠীটির মূল টার্গেট ফেসবুক। কারণ তারা ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপেরও মালিক।

জুন মাসে ফেসবুক জানায়, তারা ক্ষতিকর হতে পারে এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে এমন পোস্টের সংবাদ গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে সে সম্পর্কে সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে দেবে। এই মাধ্যমটির প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার মার্ক জাকারবার্গ ইতোমধ্যে বলেছেন, ফেসবুক ঘৃণা উদ্রেককারী কন্টেন্ট ছড়ানোর ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা নেবে

তিনি জানান, কোনও বিশেষ জাতিগোষ্ঠী, বর্ণ সম্প্রদায়, জাতীয় পরিচয়, ধর্ম বিশ্বাস, লিঙ্গ পরিচিতি বা অভিবাসন অবস্থানের যেকোনো মানুষকে যদি অন্যের জন্য হুমকি হিসাবে দাবি করে কোন বিজ্ঞাপন দেয়া হয়, ফেসবুক তা নিষিদ্ধ করে দেবে। কারণ, আমেরিকায় ২০২০ সালের নির্বাচন যে খুবই উত্তপ্ত হতে যাচ্ছে তা বোঝা যাচ্ছে। এ সময়ে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সবাইকে অবগত রাখতে ফেসবুক বাড়তি সতর্কতা নেবে।’

কিন্তু #StopHateforProfit আন্দোলন গোষ্ঠী ফেসবুককে আরও বেশি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে এবং ৯০টির বেশি সংস্থা ফেসবুকে তাদের বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিয়েছে। এই বয়কটের কারণে ফেসবুকের শেয়ার নাটকীয়ভাবে পড়ে গেছে। আমেরিকার গণমাধ্যম জানাচ্ছে জাকারবার্গের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ এর ফলে ৭২০ কোটি ডলার কমে গেছে।

বিশ্বব্যাপী নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এবং নীতি নির্ধারকরা সামাজিক মাধ্যমে ঘৃণা, বিদ্বেষ ও উস্কানিমূলক পোস্টের বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন। শুধু ফেসবুকে নয়, সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্ল্যাটফর্মে। এই সোশ্যাল মিডিয়াগুলো তাদের ক্রমবর্ধমান সমস্যা মোকাবেলায় কী ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে, সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে অনেক দেশই তদন্ত কাজ শুরু করেছে।

ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/এএইচ