যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রী-শ্বশুরসহ চারজনকে কুপিয়ে জখম

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৫৩ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:১৭

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
ঢাকাটাইমস

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বপন মিয়া নামে ২৫ বছর বয়সী এক যুবক তার স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্ত্রীর বড় বোনকে কুপিয়ে আহত করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের স্বল্প মহেড়া তালুকদার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন স্ত্রী শিলা আক্তার (১৯), শ্বশুর সিরাজুল ইসলাম শিরু (৬০), শাশুড়ি সূর্যভানু (৫৫) ও স্ত্রীর বড় বোন রাজিয়া আক্তার ফুলে (২৫)। আহতদের মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর মাদকাসক্ত জামাই স্বপনকে স্থানীয় জনতা একটি ঘরে আটকে রাখে। খবর পেয়ে মির্জাপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক স্বপনকে  থানায় আনতে গেলে টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে এমনটা ভেবে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে ঘিরে রাখে। পরে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে রাত এগারোটার দিকে স্বপনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ছয় মাস আগে উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের গুরান গ্রামের স্বপন মিয়ার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী মহেড়া ইউনিয়নের স্বল্প মহেড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম শিরু মিয়ার মেয়ে শিলা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্ত্রী শিলা আক্তার জানতে পারে তার স্বামী মাদকাসক্ত এবং আগেও একটি বিয়ে করেছিল। মাদকাসক্ত স্বপন বিয়ের কিছু দিন পর শ্বশুর বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য স্ত্রীকে চাপ দিচ্ছিল। টাকা না আনায় মাঝেমধ্যে স্ত্রী শিলা আক্তারকে শারীরিক নির্যাতন করতেন স্বপন। এক মাস আগে এক লাখ টাকা দাবি করে তা না আনায় স্ত্রী শিলার ওপর নির্যাতন করলে তিনি বাবার বাড়ি চলে যান।

বৃহস্পতিবার স্বপন শ্বশুর বাড়ি গিয়ে স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। শ্বশুর ও শাশুড়ি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্বপন ক্ষিপ্ত হয়ে তার কাছে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও জেইটাসকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের বাড়ির লোকজন এগিয়ে গিয়ে স্বপনকে একটি ঘরের মধ্যে আটক করে। খবর পেয়ে মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশারের নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে স্বপনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে টাকা নিয়ে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেবে এমনটা ভেবে স্থানীয়রা স্বপনকে পুলিশের কাছে দিয়ে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় স্থানীয় চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া স্থানীয় জনতাকে আশ্বস্ত করতে চাইলেও তারা স্বপনকে পুলিশের হাতে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে রাত সাড়ে দশটার দিকে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সায়েদুর রহমান ও পরিদর্শক তদন্ত গিয়াস উদ্দিনসহ অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে উত্তেজিত জনতার কাছ থেকে উদ্ধার করে স্বপনকে থানায় নিয়ে আসে।

মহেড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আহতদের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় টাঙ্গাইল সদর হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে।

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সায়েদুর রহমান মাদকাসক্ত স্বপনকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর