মনে কষ্ট নিয়ে চলে গেলেন আল্লামা শফী

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:১০ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রবীণ আলেম ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী শুক্রবার সন্ধ্যায় ইন্তেকাল করেছেন। তার ইন্তেকালের খবরে সারাদেশে আলেম-উলামা ও মাদ্রাসা ছাত্রদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শতবর্ষী এই মানুষটির চলে যাওয়া অনেকটা স্বাভাবিক হলেও শেষ মুহূর্তে তার মনে কষ্ট ছিল বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। ৩৪ বছর ধরে দেশসেরা যে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক পদে তিনি ছিলেন সেই হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে মাত্র একদিন আগে পদত্যাগ করেন তিনি।

ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে আল্লামা শফী স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ঘোষণা দিলেও এর জন্য অনেকটা বাধ্য হন তিনি। ছাত্ররা তার ছেলে আনাস মাদানীকে বহিষ্কারের পাশাপাশি তাকেও মহাপরিচালক পদ থেকে সরে যাওয়ার দাবি তুলেছিল। শেষ পর্যন্ত ছাত্রদের বিক্ষোভ-ভাঙচুরে অনেকটা বাধ্য হয়ে তিনি পদত্যাগ করেন।

আল্লামা আহমদ শফীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি যখন তাকে মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবি উঠছিল বিভিন্ন মহল থেকে তখন তিনি আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘আমি এই প্রতিষ্ঠানের জন্য কী না করেছি! আজ আমাকেই সরিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা হচ্ছে।’

তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, বয়সের কারণে দায়িত্ব পালনে অপারগ হয়ে যাওয়ায় তারা আল্লামা শফীকে বাদ দেয়ার দাবি তুলেছিলেন। তবে তাকে মাদ্রাসা থেকে একদম বাদ দেয়ার পক্ষে ছিলেন না তারা। মাদ্রাসার প্রধান মুরব্বি হিসেবে আল্লামা শফীকেই রাখার পক্ষে ছিলেন তারা। মূলত তার ছেলে আনাস মাদানীর বিরুদ্ধেই ছিল ছাত্রদের প্রধান ক্ষোভ।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী ২০১৩ সালে হেফাজতের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। ৫ মে শাপলা চত্বরের ঘটনার পর তার নামে অনেক মামলা হলেও সরকার তাকে গ্রেপ্তার করেনি। পরবর্তী সময়ে সরকারের তার সম্পর্কের উন্নতি হয়। কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদ মূলত তার হাত ধরেই আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে তাকে অনেক শ্রদ্ধা করতেন। আল্লামা শফীর নেতৃত্বে শীর্ষ আলেমদের দাওয়াত করে নেন কয়েক বার।

আলেম-উলামার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে এতটা প্রভাবশালী আলেম আর বিগত হননি। তিনি আলেম-উলামা ও মাদ্রাসা ছাত্রদের কাছে অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তবে শেষ সময়ে এসেছে তার আশপাশে কিছু সুবিধাবাদী লোক তাকে ব্যবহার করে নানা অপকর্মে জড়ায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে সবার কাছে তার অবস্থান অনেকটা নড়বড়ে হয়ে যায়।

তবে বিশিষ্ট এই আলেমের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান গোটা ইসলামি অঙ্গন। যে ছাত্ররা তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন তারাই এখন আক্ষেপ প্রকাশ করছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/জেবি)