স্বামী ও স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কী সমস্যা?

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
| আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:৫১ | প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:১৫

বিয়ের মানেই দুজন মানুষের মিলন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু৷ সেই ভবিষ্যতের কথা ভেবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ দেখে নেওয়া। সম্বন্ধ করে বিয়ে হোক বা প্রেম করে, বিয়ের আগে সাধারণত দুই পরিবার, আত্মীয়, ছেলে-মেয়ের চাকরি এসব বিষয় নজর থাকে সকলের৷ তবে পাত্র-পাত্রীর রক্তের গ্রুপ জেনে নেয়াটাও জরুরি।

স্বামীর রক্তের গ্রুপ যদি পজেটিভ হয় তাহলে স্ত্রীর পজিটিভ হতে হবে। আর যদি স্বামীর রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হয় তাহলে স্ত্রীর পজিটিভ বা নেগেটিভ যেকোনো একটি হলেই হবে। এক্ষেত্রে স্ত্রীর গ্রুপ যদি নেগেটিভ হয় তাহলে তার স্বামীর রক্তের গ্রুপও নেগেটিভ হলে অনেক সমস্যা এড়ানো যাবে।

স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ মিলে গেলে কোনো সমস্যা হয় না। তবে স্ত্রী যদি নেগেটিভ হয় আর স্বামী যদি পজিটিভ হয় তাহলে 'লিথাল জিন' বা 'মারন জিন' নামে একটি জিন তৈরি হয় যা পরবর্তীতে জাইগোট তৈরিতে বাঁধা দেয় বা জাইগোটকে মেরে ফেলে। সেক্ষেত্রে মৃত বাচ্চার জন্ম হতে পারে। বাচ্চা হতে পারে বর্ণান্ধ।

এছাড়া যখন কোনো নেগেটিভ গ্রুপের মা পজিটিভ ফিটাস (ভ্রূণ) ধারণ করে তখন সাধারণত প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্ত ডেলিভারির সময় পজিটিভ ভ্রূণের রক্ত, সেন্টার ( গর্ভফুল ) এর বাঁধা ভেদ করে মায়ের শরীরে প্রবেশ করবে। মায়ের শরীরেও প্রসবের যে রক্ত প্রবেশ করবে, তা প্রসবের কয়েক মাসের মধ্যেই মায়ের শরীরে আরএইচ এন্টিবডি তৈরি করবে। যখন মা দ্বিতীয় সন্তান বহন করবেন। তখন যদি তার ভ্রূণের রক্তের গ্রুপ পুনরায় পজিটিভ হয়, তাহলে মায়ের শরীরে আগে যে এন্টিবডি তৈরি হয়েছিল সেটা প্লাসেন্টার বাঁধা ভেদ করে বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করবে। আর যখন এটি ভ্রূণের শরীরে ঢুকবে তখন ভ্রূণের লোহিত রক্তকণিকার সেল ভেঙ্গে যাবে। এ সমস্যাকে চিকিৎসা বিদ্যায় বলা হয় আরএইচ ইনকমপ্যাটিবিলিটি।

আগে কখনো অ্যাবরশন না হয়ে থাকলে অনেক সমস্যা এড়ানো যাবে। শুধু সচেতন থাকতে হবে। স্বামীর ব্লাডগ্রুপ পজিটিভ হলে, বাচ্চা জন্মের পরপরই বাচ্চার ব্লাড গ্রুপ পরীক্ষা করতে হবে। যদি নেগেটিভ হয় মায়ের মতো, তবে কিছু করার দরকার হয় না। আর পজিটিভ হলে এন্টি ডী ইনজেকশন নিতে হবে ডেলিভারির ৭২ ঘন্টার মধ্যে।

যখন কোনো নেগেটিভ গ্রুপের ব্যক্তিকে পজিটিভ গ্রুপের রক্ত দেওয়া হয় তখন প্রথমবার সাধারণত কিছু হয়না। তবে এর বিরুদ্ধে রোগীর শরীরে একটি এন্টিবডি তৈরি হবে। যার ফলে এই রোগী আবার কখনও যদি পজিটিভ গ্রুপের রক্ত নেয়, তবে তার রক্তের কোষগুলো ভাঙতে শুরু করবে। এ কারণে কাঁপুনি, জ্বর কিংবা কিডনি অকেজো থেকে শুরু করে মারাত্মক সব শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। এই সমস্যাকে চিকিৎসা বিদ্যায় বলা হয় এবিও ইনকমপ্যাটিবিলিটি।

হেপাটাইটিস-বি মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধি। পাত্র বা পাত্রী যে কোনো একজনের দেহে এ ভাইরাস থাকলে অন্যজনের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই সঙ্গে অনাগত সন্তানের মধ্যেও রোগটি সংক্রমিত হতে পারে। এটি অন্যতম এক ঘাতক ব্যাধি। তাই বিয়ের আগেই রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হওয়া উচিৎ পাত্র কিংবা পাত্রীর হেপাটাইটিস-বি আছে কি না। রক্ত পরীক্ষা করলেই জানা যাবে পাত্র-পাত্রী কেউ সিফিলিসের জীবাণু বহন করছে কি না। ভিডিআরএল পরীক্ষায় যৌন রোগ আছে কি না জানা যাবে।

ঢাকা টাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :