কাশ্মীরে ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা স্বীকার ভারতীয় সেনাবাহিনীর

জম্মু-কাশ্মীরে বিশেষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিন জনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। তিন শ্রমিককে এনকাউন্টার করা জওয়ানদের অভিযুক্ত হিসেবে মেনে নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খবর আল জাজিরার।

গত ১৮ জুলাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউন চলাকালীন জম্মু-কাশ্মীরের সোপিয়ানে তিন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে সেনারা। সেই এনকাউন্টারের পরে অভিযোগে ওঠে জওয়ানদের বিরুদ্ধে। বলা হয়, এনকাউন্টারের নামে জঙ্গি নয়, সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে সেনা। এনকাউন্টারের পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও নিহতদের পরিবার অভিযোগ করে, যে তিনজনকে এনকাউটারে মারা হয়েছে তারা তুতো ভাই। তারা শ্রমিকের কাজ করত। তারা জঙ্গি নয়।

তারপরেই দেশটির সেনাবাহিনীর তরফে একটি তদন্ত কমিটি বসানো হয়। তাতে দেখা যায় আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট বা এএফএসপিএ এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারা অনুমোদিত চিফ অফ আর্মি স্টাফের নির্দেশিকার অবমাননা করেছেন ওই জওয়ানরা।

সেনার তরফে এক মুখপাত্র জানান, 'অপারেশন আমশিপোড়া নিয়ে যে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা শেষ হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে অপারেশন চলাকালীন ১৯৯০ সালের আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট অবমাননা করেছেন জওয়ানরা।'

সেনার ওই মুখপাত্র জানান, 'সেই কারণেই তদন্তের পরে সেনার ডিসিপ্লিনারি কমিটি আর্মি অ্যাক্টের অধীনে অভিযুক্ত জওয়ানদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।'

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, তদন্তের সময় যে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে তাতে জানা গিয়েছে, অপারেশন আমশিপোড়াতে যে তিন অজ্ঞাতপরিচয় জঙ্গিদের খতম করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে তাদের নাম ইমতিয়াজ আহমেদ, আব্রার আহমেদ ও মহম্মদ ইব্রার। তাদের বাড়ি রাজৌরিতে। তাদের ডিএনএ রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে। জঙ্গি কার্যকলাপে তারা যুক্ত ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

এই ঘটনায় অভিযুক্ত জওয়ানদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জম্মু- কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহও।

এনকাউন্টারের পর তিন জনের ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় শুরু হয় বিতর্ক। নিহতদের পরিবার তাদের চিহ্নিত করে দাবি করে তারা তিন ভাই। ১৭ জুলাই সোপিয়ানের চৌগাম গ্রামের ভাড়া বাড়ি থেকে তারা নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল বলে দাবি করে পরিবার। তারা আরও দাবি করে, ১৭ বছরের ইব্রার, ২৫ বছরের ইমতিয়াজ ও ২০ বছরের আব্রার আহমেদ পেশায় শ্রমিক। তারা রাজৌরির সাকরি গ্রাম থেকে সেখানে কাজের জন্য গিয়েছিল।

ঢাকা টাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/একে