‘নতুন প্রজন্মের গাড়ি নির্মাণ শিল্প স্থাপনের পদক্ষেপ নিতে হবে’

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:০৩ | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:৩৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত ‘অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০২০’ এ যেন প্রতিযোগিতামূলক বাজার থাকে এমন দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। সংগঠনটি বলেছে, প্রস্তাবিত নীতিমালায় নতুন প্রজন্মের গাড়ি নির্মাণ শিল্প স্থাপন করা এবং ভালোমানের গাড়ি আমদানি উৎসাহিত করতে হবে।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম মিলনায়তনে প্রস্তাবিত ‘অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা (খসড়া) ২০২০: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আবদুল হক।

লিখিত বক্তব্যে আবদুল হক বলেন, ভালোমানের গাড়ি আমদানি উৎসাহিত করতে বাংলাদেশের উচিত হবে নতুন গাড়ির ক্ষেত্রে ন্যূনতম ইউরো ৫ নির্গমন মানদণ্ড নির্ধারণ করা এবং আমদানিকৃত সিবিইউএস এবং রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ক্ষেত্রেও তা প্রয়োগ করা। বর্তমানের বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই পরিবেশ দূষণ করে এবন কমবাশন ইঞ্জিন বিশিষ্ট মোটর গাড়ি নিষিদ্ধ করছে এবং ২০৪০ সালে মধ্যে কার্বন নির্গমন মুক্ত বৈদ্যুতিক বা সোলার কার তৈরির পরিকল্পনা করছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো যখন পুরনো প্রযুক্তিকে বিদায় জানাচ্ছে তখন বাংলাদেশে কমবাশিবল ইঞ্জিন বিশিষ্ট গাড়ি তৈরির কারখানা স্থাপন কখনোই প্রহণযোগ্য নয়। বরং বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ও বিশ্ব বাজারের রপ্তানির লক্ষ্য নির্ধারণ করে ইমিশন কন্ট্রোল স্ট্যান্ডার্ডস মেনে নতুন প্রজন্মের গাড়ি নির্মাণ শিল্প স্থাপন করার পদক্ষেপ নিতে হবে। 

আবদুল হক বলেন, প্রায় ৯০০ সদস্যের জাতীয়ভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন বারভিডার দেশে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে এবং অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে লক্ষাধিক লোক কর্মরত রয়েছেন। বারভিডা মানসম্পন্ন ও পরিবেশবান্ধব রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি করে থাকে। প্রস্তাবিত নীতিমালায় আমদানিকারকদের মধ্যে প্রতিযোগিতাকে নিঃশেষ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

আবদুল হক অভিযোগ করে বলেন,  প্রস্তাবিত নীতিমাটি দেশীয় গাড়ি নির্মাণের নামে একটি বড় রকমের স্ক্রু ড্রাইভিং শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ, যার মাধ্যমে ক্রেতাদেরকে উচ্চমূল্য দিয়ে নিম্নমানের গাড়ি কিনতে বাধ্য করা হবে, যেসব গাড়ি পরিবেশবান্ধব নয়।

বারভিডার সভাপতি বলেন, দেশের মোটরযান বাণিজ্য খাতে ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে খসড়া নীতিমালাটি চূড়ান্তকরণ এবং বাস্তবায়নের যথাযথ ভূমিকা রাখতে চাই। নীতিমালাটি যেন পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও চাহিদার সঙ্গে খাপ খাইয়ে তৈরি করা হয়। যেখানে লক্ষ্য হবে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা করে কর্মংস্থান ও বিনিয়োগ নিশ্চিত রেখে একটি প্রতিযোগিতামূলক ও টেকসই গাড়ি শিল্প প্রতিষ্ঠা করা।

দেশে একটি বাস্তবভিত্তিক, সম্মুখমূখী, ভারসাম্যপূর্ণ ও বাস্তবায়নযোগ্য অটোমোবাইল শিল্প নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে বারভিডা। এ লক্ষ্যে বারভিডা সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত প্রস্তাবিত ‘অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০২০’ এর খসড়াটি পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছে। প্রস্তাবিত নীতিমালায় দেশীয় গাড়ি নির্মাণের নামে স্ক্রু ড্রাইভিং শিল্প প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের ভোক্তাদের প্রয়োজন ও পছন্দের অধিকার খর্ব করে তুলনামূলক নিম্নমানের গাড়ি বেশি দাম দিয়ে কিনতে বাধ্য করার তৎপরতা গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে বারভিডা। এছাড়াও দেশে গাড়ি নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয় হলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখা দরকার বলেও বারভিডা মত প্রকাশ করেছে।

 ‘অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০২০’ প্রণয়নের উদ্যোগকে স্বাগত জানায় বারভিডা । বলা হয় বারভিডা সবসময়ই দেশে খাতভিত্তিক নতুন শিল্প স্থাপনের পক্ষে। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডের মোটরকার বা বাংলাদেশের ‘ন্যাশনাল কার’ বারভিডার জন্যও অনেক গর্বের বিষয় হবে। তবে যেকোনো শিল্প স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণের আগে সংশ্লিষ্ট খাতের বিদ্যমান শিল্পগুলোর অবস্থান, বিশ্বের অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা এবং দেশের বাস্তবতাকে বিবেচনায় নেয়া জরুরি বলে বারভিডা মত প্রকাশ করেছে।

এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বারভিডার সাবেক প্রেসিডেন্ট  মো. হাবিব উল্লাহ ডন ও মো. আব্দুল হামিদ শরীফ, ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম সম্রাট এবং কার্যনির্বাহী সদস্য  আবু হোসেন ভূইয়া (রানু) ও ইউনূছ আলী উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/জেআর/জেবি)