মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বাঁধে ভাঙন, ফসলহানির আতঙ্ক

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:২৮

চাঁদপুরের মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধের কাচারীকান্দি এলাকায় আকস্মিক ভাঙন দেখা দিয়েছে। আপাতত স্থানীয়দের সহযোগিতায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও প্লাস্টিকের ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এদিকে ভাঙন ও পানিতে ফসলহানির আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন এলাকার কৃষকরা।

স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মতলব উত্তর উপজেলা ফরাজিকান্দি ইউনিয়নের জনতা বাজার সংলগ্ন কাচারীকান্দি এলাকা দিয়ে মেঘনা নদী লাগোয়া মূল বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। অল্প সময়ের মধ্যে নদীর তীরবর্তী অংশের ২০০ মিটার অঞ্চল ভেঙে নদীতে বিলীন হতে থাকে। বাঁধের ৮০ মিটার এলাকা ভেঙে গেছে। চারদিকে খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতেই শতাধিক যুবক নিজ উদ্যোগে ৮/১০টি ট্রলি গাড়িতে করে জনতা বাজার, চরমাছুয়া এলাকায় কয়েক সহস্রাধিক বালিভর্তি জিও ব্যাগ এনে বাঁধ রক্ষার কাজে নেমে পড়েন। স্থানীয় আমিরাবাদ বাজারে বাঁশের বাজার থাকায় সেখানে থেকে বাঁশ এনে এরই মধ্যে পাইলিংয়ের ব্যবস্থাও করেন তারা। যুবকরা রাত ৩টা পর্যন্ত প্রাণপণ চেষ্টা করে বাঁধ রক্ষা করেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বেড়িবাঁধের ভেতরের ১৭ হাজার ৫৪৮ হেক্টর জমিতে ধান, পাট, আখ, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল রয়েছে। এছাড়া বাঁধের ভেতরে কৃষকসহ প্রায় ৪ লাখ লোকের বসববাস।

এ বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্নেহাশিস দাস বলেন, ‌খবর পেয়ে শনিবার রাতেই ঘটনাস্থলে চলে যাই। গিযে দেখি, এলাকাবাসীরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে গভীর রাত পর্যন্ত বাঁধ রক্ষায় কাজ করে। এ কাজে সার্বিক সহায়তা করেন মতলব উত্তর থানার ওসি নাসির উদ্দিন মৃধা ও তার সঙ্গীয় ফোর্স।’

জেলা যুবলীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক গাজী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘শনিবার রাতে হঠাৎ হইচই শুরু হলে আমরা লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসি। সেখানে এলাকার যুবক এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত যুবকদের নিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করি।’

এদিকে খবর পেয়ে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন চাঁদপুর-২ নির্বাচনী আসনের সাংসদ নুরুল আমিন রুহুল, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পূর্ব রিজিওন) কাজী তোফায়েল হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী (পূর্বাঞ্চল, কুমিল্লা) জহির উদ্দিন আহমেদ, মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) আহসান হাবীবসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ‘শুক্রবার আমিরাবাদ বাজারের কাছে বাঁধে ভাঙনে ৮০ মিটার এলাকা ভেঙে যায়। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ১ হাজার ব্যাগ জিও ব্যাগ এবং ৬ হাজার সিথেটিক ব্যাগ ডাম্পিং করি। এতে করে রাতেই ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আসে। আবার শনিবার ভোর থেকে নতুন করে ঠিকাদারের মাধ্যমে বস্তাভর্তি করা শুরু হয়েছে। এখন ভাঙন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আতঙ্কের কিছু নেই। এরপরও আমরা সতর্ক আছি। আশা করি, কোন সমস্যা হবে না।’

সাংসদ নুরুল আমিন রুহুল বলেন, ‌‘এখানে প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার একটা ডিপিপি হবার কথা। অতি দ্রুত এই বেড়িবাঁধ সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় কাজটি দ্রুত গতিতে না করলে যেকোনও সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। এর আগেও দুই বার ভেঙেছে। আর সব মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হবে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পানি সম্পদ মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আর্কষণ করছি।’

(ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :