আবাসনের দাবিতে সোহরাওয়ার্দীর চিকিৎসকদের আলটিমেটাম

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকরা তাদের আবাসনের ব্যবস্থা বাতিল করায় পরিবারের সুরক্ষা নিয়ে শুরু থেকে শঙ্কার কথা বলে আসছিলেন। চিকিৎসকদের দাবি, শুরুর দিকে সরকারের পক্ষ থেকে কোয়ারেন্টাইনের যে ব্যবস্থা ছিল তা বাতিল হওয়া পরিবারের অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাই নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালন করা চিকিৎসকরা কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

শনিবার আবাসনের দাবিতে চিকিৎসকরা হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়ুয়া, উপপরিচালক ডা. মামুন মোর্শেদ ও মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও করোনা ইউনিটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. শাহাদাৎ হোসেন রিপনের রুম ঘেরাও করেন।

পাশাপাশি প্রায় ৬৫ জন চিকিৎসক হাসপাতাল পরিচালক বরাবর একটি স্মারকলিপিও জমা দিয়েছেন।

এদিকে চিকিৎসকদের দাবির মুখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। যদিও মহাপরিচালক জানিয়েছেন এ বিষয়ে তার কিছু করার নেই। চিকিৎসকদের সরকারিভাবে কোয়ারেন্টাইন বাতিল করেছে মন্ত্রণালয়।

পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘চিকিৎসকদের দাবি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো বলে তাদের জানিয়েছি। ইতিমধ্যে আমি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং মন্ত্রণালয়কেও এটা জানাবো।’

উত্তম কুমার বলেন, ‘চিকিৎসকেরা আমাদের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন, তাদের আবাসিক সমস্যা সমাধানের জন্য।’

করোনা ইউনিটে কাজ করা একাধিক চিকিৎসক বলেন, ‘আমাদের হোটেল নেই, কোনো আবাসনের ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ করতে পারেনি। কিন্তু আমরা তো আমাদের পরিবারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক বলেন, ‘আমাদের আজ ডিউটি শেষ করে বাসায় যেতে হবে। একাধিক চিকিৎসকের পরিবারের একাধিক সদস্য আমাদের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন, মারাও গেছেন তিন চিকিৎসকের বাবা ও শ্বশুর। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো কোনো সমাধান আমরা পাইনি। আমরা কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। এর ভেতরে কোয়ারেন্টাইনের কোনো সমাধান না হলে, আমরা করোনা ইউনিটে আর ডিউটি করবো না। তবে হাসপাতালের নন-করোনা ইউনিটে ডিউটি করবো।’

করোনা প্রাদুর্ভাবের পর গত ১২ এপ্রিল রাজধানীর ছয় হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্য সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জন্য ১৯টি হোটেল নির্ধারণ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু গত ২৯ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত পরিপত্র অনুযায়ী করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসিক হোটেলের বিল পরিশোধ না করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে চিকিৎসকদের জন্য বরাদ্দ হোটেলের সুবিধাও বাতিল করে তারা।

পরিপত্র অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকার মধ্যে দায়িত্ব পালনকারী একজন চিকিৎসক দৈনিক দুই হাজার টাকা এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার ৮০০ টাকা, একজন নার্স ঢাকার মধ্যে এক হাজার ২০০ ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার টাকা এবং একজন স্বাস্থ্যকর্মী ঢাকার মধ্যে ৮০০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৬৫০ টাকা ভাতা পাবেন।

(ঢাকাটাইমস/১৯সেপেম্বর/বিইউ/জেবি)