কুমিল্লায় পুলিশের সোর্সের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:১৯

কুমিল্লা মহানগরীর চর্থাথিরা পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা পুলিশের সোর্স খোকন মিয়ার বিরুদ্ধে নিজ স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে। নিজ স্বামীর বিরুদ্ধে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন এ অভিযোগ করেন।

অভিযোগে তিনি বলেন, ‌‘আমার স্বামীকে মাদক ব্যবসা থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য বহু চেষ্টা করি। কিন্তু আমি প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধর, কখনো দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে প্রচণ্ডভাবে মারধর করে সে।‘

তিনি জানান, মাদক ব্যবসার সঙ্গে খোকনের মা, ভাই, বোন, আগের সংসারের ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী, সবাই জড়িত রয়েছে। খোকন অত্যন্ত গরিব পরিবারের সদস্য ছিল। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর হতে কুমিল্লা এসে প্রথম রিকশা পরে মাইক্রোবাস চালিয়ে সংসার চালাত। পরে পুলিশের সোর্স হয়ে কাজ করতে থাকে খোকন। সদর দক্ষিণ থানায় তার নামে একটি হত্যা মামলাও রয়েছে। এলাকার খোকন নামে অন্য লোকের নামে মামলাটি সুকৌশলে পুলিশের মাধ্যমে হস্তান্তর করে সে মুক্তি পায়। বর্তমানে পুলিশ ও র‌্যাপিড একশান ব্যাটালিয়ানের সোর্স হয়ে কাজ করছে সে।

রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘খোকনকে মাদক কাজে বাধা দেওয়ায় গত কিছুদিন আগে সে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে টিউবলাইট ভেঙে আমার পেটে ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে, আত্মীয়-স্বজনরা দৌঁড়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে। আমি ছোট ছোট সন্তানের দিকে তাকিয়ে তার সংসার করছি। এ অত্যাচারের প্রতিকার চেয়ে সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কুমিল্লা সদর আসনের মাননীয় সাংসদ হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, পুলিশের আইজিপি, চট্টগ্রামের ডিআইজি, কুমিল্লার পুলিশ সুপার, র‌্যাব সিপিসি- ২, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ সদর সার্কেল, কোতোয়ালী থানা পুলিশ, চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ি বরাবর আবেদনও করেছি। উক্ত আবেদনের বিবাদীরা হলেন- আমার স্বামী ও চর্থার মিলন মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া,খোকন মিয়ার ছেলে ছোটন মিয়া, রিপন মিয়া, খোকন মিয়ার স্ত্রী রুবি বেগম, স্ত্রী মাহিমা আক্তার মাহি,চুমকি বেগম, আলেয়া বেগম, আলমগীর, মাহাআলম, শামীম আলম, শহিদুল ইসলাম, মোরশেদা বেগম, জলিল মিয়া, সোহেল, রতনমিয়া,মহসিন মিয়া, আনোয়ারা বেগম, সুফিয়া বেগম, হালিমা আক্তার, আবু নাসের খান, দোলন বেগম, এমদাদ হোসেন, মহাসিন সহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন।’

অভিযোগে তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্তরা সকলে মাদকদ্রব্য চোরাকারবারিতে নিয়োজিত। বিবাদী অন্যদের সহযোগিতায় চাঁদপুর নোয়াখালী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় মাদকদ্রব্য পাচার করে আসছেন আমার স্বামী। এ কাজে প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে ডিবি পুলিশের ভয় দেখায় এবং আমার স্বামী আমাকে নির্যাতন করে। এমনকি পুলিশের সোর্স হওয়ায় পুলিশ তাকে আটক করে না। আটক করলেও ছেড়ে দেয়। লকডাউনের সময় অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজন দাউদকান্দি থানায় আটক হলেও তারা টাকার মাধ্যমে ছাড়া পায়।’

ওই গৃহবধূ বলেন, ‘ পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ শুরুর পর থেকে আমার স্বামী খোকন রাতারাতি কোটিপতি হয়েছে। আমি তার ভয়ে গোবিন্দপুর বাপের বাড়িতে দুটি সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমি ছাড়াও সে আরো পাঁচটি বিয়ে করেছে। এর মধ্যেই দুজন তাকে ছেড়ে চলে যায়। আমি ছাড়া বর্তমানে তার মাহি আক্তার উর্মি এবং রুবি বেগম নামে দু’জন স্ত্রী রয়েছে। তারাও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। আমি প্রশাসনের কাছে তার সুষ্ঠু বিচারের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

(ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :