প্রণোদনার বদলে প্রবঞ্চনা জোটে তাদের…

খোরশেদ আলম, শেরপুর
| আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:৩০ | প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:০৮

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের রাংটিয়া, শালচুড়া, ডেফলাই, গান্ধিগাঁও, নকসী, হালচাটি, গজনী, বাকাকুড়া, পানবর, জোকাকুড়া, তাওয়াকুচা ও ভালুকাসহ বিভিন্ন পাহাড়ী গ্রামগুলোতে কোচ সম্প্রদায়ের ৬ শতাধিক পরিবারের ২ হাজার লোকের বাস। কৃষির ওপর নির্ভরশীল এ সনাতন ধর্মাবলম্বী ও মাতৃতান্ত্রিক সম্প্রদায়ের নারীরাই মাঠে ময়দানেসহ সংসারের সকল কাজকর্ম করে থাকেন। তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এ রেওয়াজের অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে। নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও এখন নানা কর্ম করছেন। কিন্তু অভাব সঙ্গ ছাড়েনি তাদের। সরকারি-বেসরকারি নানা ক্ষেত্রেই প্রণোদনার বদলে প্রবঞ্চনার শিকার হতে হয় তাদের।

বাকাকুড়া গ্রামের আদিবাসী নেতা ধীমান চন্দ্র কোচ জানান, দেশ স্বাধীনের পর থেকেই প্রভাবশালীরা তাদের অনেকের জমিজমা জবর দখল করে নেয়। শুধু তাই নয় গত দুই যুগ ধরে পাহাড়ী গ্রামগুলোতে উপর্যুপরি বন্যহাতির তাণ্ডবে কোচ সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের জমিতে ফসল ফলাতে পারে না। ফলে জীবিকার তাগিদে জমিজমা বিক্রি করে ভূমিহীন ও দিনমজুরে পরিণত হয়েছে তারা। জমি বিক্রির টাকাও তারা সঠিকভাবে হাতে পায়নি।

গজনী গ্রামের মনেন্দ্র চন্দ্র কোচ ও হালচাটি গ্রামের সুরেন্দ্র চন্দ্র কোচ জানান, তাদের সম্প্রদায়ের লোকেরা পাহাড় থেকে জ্বালানি কাঠ এনে বাজারে বিক্রি ও শ্রম বিক্রি করে পরিবারের সদস্যদের জীবিকা নির্বাহ করেন। একদিন কাজে না গেলে সেদিন তাদের ঘরে চুলা জ্বলে না। সেদিন পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে হয় তাদের অনাহারে-অর্ধাহারে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আবাসন সংকটেও রয়েছে সিংহভাগ কোচ সম্প্রদায়। এদের নেই কোনো জমি। বনের জমিতে ঝুপড়ি ঘর তুলে কোন রকমে দিনাতিপাত করেন। বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) আদিবাসীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে এলেও কোচ সম্প্রদায়েরা তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

নকসী গ্রামের প্রফুল্ল কোচ ও জহীন কোচ জানান, তাদের নারী শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত মজুরি বৈষম্যের শিকার হন। সরকারি সাহায্য-সহযোগিতার ক্ষেত্রেও তারা চরমভাবে বৈষম্যের শিকার। ফলে অভাবের তাড়নায় সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারছেন না তারা। এ অর্থনৈতিক দৈন্যের কারণে এ সম্প্রদায়ের লোকদের সংস্কৃতিও আজ বিলুপ্তির পথে।

(ঢাকাটাইমস/২১সেপ্টেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :