পৌর নির্বাচন: শেরপুরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রার্থীর ছড়াছড়ি

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৫২

সুজন সেন, শেরপুর

আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় পৌরসভার নির্বাচনকে সামনে রেখে সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী শেরপুর পৌরসভায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ছড়াছড়ি দেখা যাচ্ছে। উভয় দলে ডজনখানেক সম্ভাব্য প্রার্থীর সমর্থকদের ফেসবুকে ব্যাপক প্রচারণা চলছে। পাশাপাশি শহরের প্রায় প্রতিটি অলিগলিতে পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার প্রচারণা ইতোমধ্যে শহরবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় মনোনয়ন কে পাচ্ছেন- তা নিয়ে চায়ের আড্ডাসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন সারা দেশে ২৩৪টি পৌরসভায় আগামী ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরপরই অন্যান্য এলাকার মতো ১৫০ বছরেরও অধিক সময়ের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী শেরপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের তৎপরতা শুরু হয়।

আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন দুই দফার মেয়র, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, জেলা আইনজীবী সমিতি ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য-গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল হাসান উৎপল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান ও জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শ্রমিক নেতা আরিফ রেজা।

তাদের মধ্যে বর্তমান মেয়র লিটনের পক্ষে মাঠ পর্যায়ে প্রচার-প্রচারণা না থাকলেও দলের দায়িত্বশীল মহলসহ উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে তার যোগাযোগ। আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডডভোকেট আধার দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে রয়েছে তার নিবিড় সম্পর্ক। তিনি এখনও সরাসরি প্রচারণায় মাঠে না নামলেও তার পক্ষে ফেসবুকে প্রচারণা চলছে।

আওয়ামী লীগ নেতা উৎপল রাজনীতির পাশাপাশি নবারুণ শিক্ষা পরিবারের চেয়ারম্যান। তার পক্ষে ফেসবুক প্রচারণার পাশাপাশি শহরে চলছে লিফলেট প্রচারণা। সেই সঙ্গে সতীর্থ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় চলছে গণসংযোগ। রাজধানী ঢাকায় গার্মেন্টস ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আনিসুর রহমান ২০১৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলিতে সরাসরি স্থান করে নেন। গুঞ্জন রয়েছে, তারপর থেকেই গ্রিন সিগনাল পেয়ে মাঠে রয়েছেন তিনি।

শহরের বিভিন্ন এলাকার ধর্মীয়-সামাজিক প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি সম্প্রতি শহরের মোড়ে মোড়ে শোভা পাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে উৎপরের দর্শনীয় ব্যানার। সেই সঙ্গে থেমে নেই ফেসবুক প্রচারণার পাশাপাশি গণসংযোগও।

বয়সে সবচেয়ে তরুণ শ্রমিক নেতা আরিফ রেজা সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলীর ছোটভাই ও প্রয়াত শ্রমিক নেতা সেলিম রেজার ছেলে। তিনিও সম্প্রতি নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করে ফেসবুক প্রচারণার পাশাপাশি শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে টাঙিয়েছেন আকর্ষণীয় ব্যানার। এখন সম্ভাব্য ওই পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে কে পাচ্ছেন বা পাবেন দলীয় টিকেট সেটাই দেখার বিষয়।

এদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন শহর বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত পৌর চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত এ কে এম সাইফুল ইসলামের ছেলে প্রভাষক মামুনুর রশিদ পলাশ, জেলা বিএনপির আরেকজন সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবু রায়হান রূপম, জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও শহর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক মাস্টার, জেলা বিএনপির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক আশীষের ছেলে হাসানুর রেজা জিয়া এবং শহর বিএনপির সদস্য সচিব ও সাবেক ছাত্রনেতা রমজান আলী।

এদের মধ্যে আব্দুল মান্নান সরাসরি রয়েছেন বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগে। অন্যরা ফেসবুক প্রচারণার পাশাপাশি দলীয় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। তবে কয়েকদিন যাবত সাবেক ছাত্রনেতা রূপম তার সতীর্থ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের নিয়ে নেমেছেন গণসংযোগে। এতদিন বিএনপি থেকে মান্নানই দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন- এমন কথা শোনা গেলেও নানা সমীকরণে এখন সেটিও যেন অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/কেএম)