করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ব্লিচিংয়ের ব্যবহার বিপজ্জনক

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৩৮ | আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:১০

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহৃত ব্লিচিং পাউডারের ব্যবহার বেড়ে গেছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বারবার হাত ধুয়ে এবং একই সাথে যেসব জিনিসপত্র ধরা হচ্ছে সেগুলো জীবাণুমুক্ত করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। ছোঁয়াচে এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে লোকজন তাদের কনুই দিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করছেন, সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠা বা নামার সময় রেলিং ধরছেন না, বাসা-বাড়ি জীবাণুনাশক ব্লিচিং পাউডারের দ্রবণ দিয়ে পরিষ্কার করছেন, রাস্তাঘাটেও জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। অনেকে জুতার তলায়ও স্প্রে করছেন ব্লিচিং মেশানো পানি।

সাধারণত ব্লিচিং পাউডারে যে উপাদান থাকে তার নাম সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট। এই উপাদানটি ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াসহ বিভিন্ন জীবাণু ধ্বংস করতে সক্ষম। ঘরের ফ্লোর বা বাথরুমের ফ্লোর ব্লিচিং পাউডার দ্রবণ দিয়ে পরিষ্কার করলে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সংক্রমণ দূর হয়। ইনফ্লুয়েঞ্জার জীবাণু ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা ঘরের ফ্লোর বা বাথরুমে থাকতে পারে। করোনাভাইরাস ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। ব্লিচিং পাউডার এসব ভাইরাসকে সহজে দূর করতে পারে।

আমেরিকার এনভাইরনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি জানিয়েছে, সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট কোভিড-১৯ রোগের জন্য দায়ী ভাইরাস সার্স-কোভ-২ ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে পারে। তবে ফ্লোর বা বাথরুমে ব্লিচিং পাউডার দ্রবণ দেয়ার পর তা যেন ১০ মিনিট বা তার চেয়ে বেশি সময় বাতাসে শুকায়, তা নিশ্চিত হতে বলেছে এজেন্সিটি।

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কানেকটিকাট স্কুল অব মেডিসিনের একদল গবেষক দাবি করেন, মাত্র ১৫ সেকেন্ডেই করোনা জীবাণু ধ্বংস করতে পারে নির্দিষ্ট মাত্রার পোভিডোন-আয়োডিনের দ্রবণ। তবে এর সঙ্গেই তারা সতর্ক করে দেন, বাড়িতে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে আয়োডিনের দ্রবণ ব্যবহার করে নাক ও মুখ জীবাণুমুক্ত করার চেষ্টা অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে!

একইভাবে অনেকেই করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বিভিন্ন সুরক্ষা ব্যবস্থা বা টোটকার ওপর নির্ভর করছেন, নিয়মিত ব্যবহার করছেন। এগুলোর অধিকাংশই অবৈজ্ঞানিক উপায়ে প্রয়োগ করা হচ্ছে, নয়তো এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে না জেনেই সেগুলো প্রয়োগ করা হচ্ছে। যেমন- করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে অনেকেই ব্লিচের (ক্লোরক্স, ব্লিচ ক্লোটেক ও ক্লোবেক্স) ব্যবহার করছেন। ব্লিচ বা এই জাতীয় জীবাণুনাশক শরীরে, হাতে, নাকে-মুখে স্প্রে করা অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে বলে সম্প্রতি সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ক্লোরক্স, ব্লিচ বা এই জাতীয় কোনো জীবাণুনাশকই করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে শরীরে স্প্রে করা যাবে না। এর ফলে চোখ ও ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। শিশুদের স্বাস্থ্যের পক্ষেও এগুলো অত্যন্ত ক্ষতিকর!

বিভিন্ন জায়গায় মিথানল, ইথানল বা ব্লিচ পানীয় হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে, করোনার কবল থেকে সুরক্ষিত থাকতে মানুষ এ সব কিনছেনও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, এই সমস্ত জীবাণুনাশক পান করলে ফল হিতে বিপরীত হতে পারে। এগুলো ক্ষতিকর তো বটেই, প্রাণঘাতীও হতে পারে! তাই করোনা থেকে বাঁচতে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাটাই শ্রেয়।

(ঢাকাটাইমস/২৩ সেপ্টেম্বর/আরজেড/এজেড)