‘মানুষের মধ্যে করোনা টেস্টের অনীহা দূর করাটাই এখন জরুরি’

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:১০

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর হওয়ার আগেই সংক্রমণ এড়াতে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করাসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে করোনার পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে যে অনীহা তৈরি হয়েছে তা দূর করতে টেস্টবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রিভেন্টিভ মেডিসিন ও জনস্বাস্থ্য বিষেশজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী ঢাকা টাইমসকে বলেন, শীতকালে করোনার প্রকোপ বাড়ার একটি সম্ভাবনা আছে। তবে এখনো বাংলাদেশ করোনার প্রথম ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি। তাই দ্বিতীয় ঢেউ আসার আগে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগোতে হবে।

লেলিন চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বাইরে করোনা নিয়ন্ত্রণ করার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো বেশি করে পরীক্ষা করা। কিন্তু আমাদের এখানে এ ব্যাপারে একটি সংকোচনমূলক নীতি গ্রহণ করেছে। মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, টাকা ধার্য করে দেয়া হলো, ভুল রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে এসব কারণে মানুষ আগ্রহ হারিয়েছে। শুধু তাই নয়, করোনার সঠিক তথ্য বের করতে করোনা জরিপও হয়নি।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আধুনিকায়ন, উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা এবং শিক্ষার সম্প্রসারণমূলক কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সেকেন্ড ওয়েভ (দ্বিতীয় ঢেউ) শুরু হয়ে গেছে। তবে সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবিলায় চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যবিভাগ প্রস্তুত রয়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করলে ডা. লেলিন বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় একবার বলেছেন করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। পরে মানুষ ঘর থেকে আগের মতোই বের হয়ে গেল। অথচ দ্বিতীয় ধাপ তো দূরে থাক এখনও আমরা প্রথম ঢেউ সামাল দিতে পারিনি।’

‘হয়তো এখন পরীক্ষা কম হচ্ছে তাই শনাক্তও কম হচ্ছে। এটাও বুঝতে হবে এখন যাদের পরীক্ষা হচ্ছে তাদের অনেকেই বিদেশে যাওয়ার জন্য রুটিন টেস্ট করাচ্ছেন। তার মানে করোনা যে খুব কমে গেছে সেটা বলা যাবে না। তাই বর্তমানের অবস্থাকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ হিসেবে বলাটাকে আমি বিজ্ঞানসম্মত মনে করি না। আমরা দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে দায়িত্বশীল, বিজ্ঞানসম্মত বক্তব্য আশা করি। না হলে মানুষের কাছে ভুল ম্যাসেজ যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে’Ñযোগ করে এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।

দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে সেক্ষেত্রে সংক্রমণ কমাতে চারটি পরামর্শও দিয়েছেন ডা. লেলিন। তিনি বলেন, মাস্ক পড়া ও স্বাস্থ্যবিধি যাতে মানুষ মেনে চলে এজন্য অতীতের থেকেও বেশি কাজ করতে হবে। সর্বোপরি এসব মানতে বাধ্য করতে হবে।’

‘দ্বিতীয়ত, সারাদেশে একটি নির্ভূল টেস্টবান্ধব পরিবেশ তৈরী করতে হবে। যাতে মানুষের ভোগান্তি কম হবে। সঠিক রিপোর্ট পাবে; তৃতীয়ত, করোনার র‌্যাপিড টেস্ট ভালো করে শুরু করতে হবে। বেশি বেশি করে পরীক্ষা করতে হবে।’

ডা. লেলিন বলেন, ‘করোনার সঠিক চিত্র তুলে আনতে সরকারি এবং বেসরকারি সংগঠনের সমন্বয়ে ঘরে ঘরে গিয়ে দেশব্যাপী করোনা জরিপ পরিচালনা করতে হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২৩সেপ্টেম্বর/ডিএম)