বন্যায় বাড়তি দাম কমেনি সবজির, পেঁয়াজের পেছনে চাল

আল-আমিন রাজু, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:৩৭

সাম্প্রতিক বন্যায় ফসলের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রভাব এখনও কাটেনি সবজির বাজারে। আগস্টে বৃদ্ধি পাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে নানা রকমের কাঁচা সবজি। আর পেঁয়াজের দাম নিয়ে অস্থিরতাও নাকাল করছে ক্রেতাকে। রাজধানীবাসীর অনেকে এখন বাজারে গিয়ে হাল টানছেন চাহিদার। করোনাকালের বাস্তবতায় প্রয়োজনের পণ্য কিনেই বাজার করতে চান তারা।

১৯৯৮ সালের পর দেশের ইতিহাসের এ বছরই প্রথম আগাম বন্যা ও সবচেয়ে বেশি সময় ধরে বন্যা স্থায়ী হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ৩৩টি জেলায় প্রায় দুই মাস ধরে চলা বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কৃষকরা। অনেকের মাঠের ফসল নষ্ট হয়েছে আবার অনেকেই ফসল রোপনও করতে পারেননি। ফলে উৎপাদন কমেছে আশংকাজনক হারে।

খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, বন্যার প্রভাব পড়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের বাজারগুলোতে। পাইকাররা বেশি দামে সবজি বিক্রি করছেন আর খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতাদের বেশি দাম হাঁকতে।

পাইকাররা বলছেন, চাহিদার তুলনায় কম সবজি আসছে। কৃষকের ক্ষেতে সবজি উৎপাদন কমে গেছে। বন্যার কারণে ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে চাহিদা মতো সবজি আসছে না। ফলে মাঠের কৃষকদের থেকে বেশি দামে তাদের পণ্য কিনতে হচ্ছে। আর একারণে তারাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

এদিকে পেঁয়াজের দাম নিয়ে অস্থিরতায় ক্রেতাকে হতে হচ্ছে নাকাল। মাত্র কদিন আগেও ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। দাম বৃদ্ধির জন্য খুচরা ব্যবসায়ীরা বরাবরের মতো মোকাম সেন্ডিকেটকে দুষছেন।

তারা বলছেন, ভারতীয় পেঁয়াজ নিয়ে অস্থিরতার সুযোগে দেশের পেঁয়াজের ক্ষেত্রে ফরিদপুর, মাদারিপুর, খুলনা, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলার পাইকারি বাজার (মোকাম) এর ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে খুচরা ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে দেশি পিঁয়াজ ৯০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা, রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, আলু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচা আদা ১২০ টাকা, শুকনা আদা ২০০ টাকা করে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বন্যার কারণে বেড়ে যাওয়া প্রায় সব সবজির দাম গেল সপ্তাহের মতো আছে। তবে শীতের আগাম সবজির দাম যেন আকাশ ছোঁয়া। এর মধ্যে বাধাকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা প্রতি পিচ, শিম ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, ফুল কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মূলা ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লাউ ৫০ থেকে ৬০, টম্যাটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গাজর ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ভেন্ডি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেপে ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, শীত মৌসুমের সব সবজি বাজারে না আসা পর্যন্ত এমন দাম থাকবে। বন্যার পরে অনেক কৃষক আবারও নতুন করে উৎপাদন শুরু করেছে। তাদের ফসল বাজারে আসার পর দাম কমতে পারে।

এদিকে নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে চালের দাম। এক সপ্তাহ আগে মিনিকেট চালের বস্তা ২৪৫০ থেকে ২৫০০ টাকায় বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার ২৬০০ থেকে ২৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি বস্তা নাজিরশাইল ২৫০০, আটাশ ২৩৫০, পাইজাম ১৩৫০ করে বিক্রি হচ্ছে।

চালের দাম বৃদ্ধি কারণ হিসেবে কারওয়ান বাজারের চাল আড়তের ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘হঠাৎ করে আমাদের বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। দাম তো আমরা বাড়াই না। চালের দাম নির্ধারণ করেন মিল মালিকরা। তাদের কাছ থেকে আমাদের বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। তাই আমরাও বিক্রি করছি।’

চালের দাম কমার আপাতত কমার সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আগামী মৌসুমের আগে আর দাম কমবে বলে মনে হয় না। আবার নতুন করেও বৃদ্ধি হবে না। বর্তশান দামই বেশ কিছুদিন স্থায়ী হতে পারে।’

(ঢাকাটাইমস/২৪সেপ্টেম্বর/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :