‘বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিকে পূর্ণতা দিয়েছে’

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:০১

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকাটাইমস

জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো বাংলায় দেয়া বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিকে সেই সময়ই পূর্ণতা দিয়েছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।

বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণের ৪৭ বছরে এসে জাতিসংঘের ভাষণটি ‘ইতিহাসের জন্য একটি মাইলফলক’ মন্তব্য করে অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘তিনি যখন বাংলায় ভাষণটি দিলেন তখন আমরা মাত্র জাতিসংঘের সদস্য হয়েছি।’

‘বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বে যে ধরণের ধারণা করা হতো বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর সেই ধারণা অনেকখানি পাল্টে যায়। বাংলাদেশর মানুষ কি ধরণের ত্যাগ শিকার করে দেশ স্বাধীন করেছে; সেসব কিছু তাঁর সেই ভাষণে তুলে ধরেন’─যোগ করেন অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।

জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই ভাষণটি ছিল সমগ্র বিশ্বের অধিকারহারা শোষিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ভাষণ। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার একটি বলিষ্ঠ উচ্চারণ ও সাহসী পদক্ষেপ।

এই ভাষণের মধ্য দিয়ে ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ অর্থাৎ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রের যে মূলনীতি সেটা স্পষ্ট হয়ে যায় উল্লেখ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এর বিশ্লেষক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতিও তেমনই। তাঁর ভাষণে সেটা আরো জোড়ালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ একটি নতুন এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে এর যে আত্মমর্যাদা এবং তাদের সংগ্রামের নানা বিষয় এই ভাষণে উঠে এসেছে।’

‘একদিকে বাংলাদেশের স্বাধীন সার্বভৌমত্ব ও আত্মমর্যাদার বিষয়টি উঠে এসছে। অন্যদিকে বহির্বিশ্বে তখন যে ধরণের অসহযোগিতা চলছিলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যসহ আরো অনেকগুলো দেশে; তাদেরও একটি বার্তা দিলেন বঙ্গবন্ধু। যেখানে তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন বাংলাদেশ অন্য কোনও রাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত হবে না। বাংলাদেশ হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি রাষ্ট্র’।

অধ্যাপক দেলোয়ারের মতে, নতুন একটি রাষ্ট্রের জন্য যা গুরুত্বপূর্ণ তার সবকিছুই সে ভাষণে বঙ্গবন্ধু অলোচনা করেছেন। যে কারণে পররাষ্ঠ্রনীতিতেও বঙ্গবন্ধুর  ভাষণটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া ওই ভাষণের মাধ্যমে পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের যেসকল দেশ বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে তাদেরকেও বঙ্গবন্ধু পরিষ্কার একটি বার্তাটি দেন মন্তব্য করে অধ্যাপক দেলোয়ার ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘তাঁর এই ভাষণের মধ্যে অন্যান্য ক্ষদ্র জাতিরাষ্ট্র যারা অপেক্ষাকৃত ছোট তারাও নিজেদেরকে প্রমাণ করার প্রয়াস পেয়েছিলো।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই শিক্ষক বলেন, ‘মূলত বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘের এই ভাষণের মধ্য দিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রনীতিকে পূর্ণতা দিয়েছে। একটি নতুন রাষ্ট্র কোন চিন্তা-চেতনা নিয়ে এগোবে সবই ছিলো তাঁর সেই ভাষণে। আর একারণে আমাদের জাতীয় জীবনেও বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিক।’

(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/ডিএম)