মুখগহ্বরের যত রোগ

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৪৬ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:২২

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

মুখগহ্বর খুবই স্পর্শকাতর একটা স্থান। সারাদিন নানা প্রকার খাবারের প্রবেশ ঘটছে। টক-ঝাল-মিষ্টি অথবা তামাক-অ্যালকোহল জাতীয় খাবারের অনবরত চর্বণ। তার উপর আবার ঠান্ডা-গরমের প্রবেশ। মাঝেমধ্যে দাঁতের কামড়তো লেগেই থাকে। আসলে মুখের ভিতরে হাই ফ্লাক্স এরিয়া রয়েছে, এখানে কোষগুলো দ্রুত মারা যায় ও নতুন কোষ জন্মায়। তাই মুখের ভিতরে অস্বস্তি এবং ক্ষত মোটামুটি স্বাভাবিক ব্যাপার হিসাবেই দেখা হয়। কিন্তু কখনও কখনও এই ধরনের ক্ষত বেশ ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তখন কিন্তু বিষয়টা তিল থেকে তাল হওয়ার মতো। ছোট ঘা ক্যানসার পর্যন্ত যেতে পারে।

ট্রমা ইন্ডিউসড আলসার

দাঁত, জিভ বা গাল কামড়ে ফেললে যে ধরনের ক্ষত বা আলসার হয়।

অ্যাপথাস

বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলেরই এই সমস্যা হতে পারে। এতে মুখের ভিতরে লাল ফোস্কা ফেটে যাওয়ার মতো একটা ক্ষত দেখা যায়, ব্যথা হয় যা ৭-১০ দিন থাকে। মাত্র ১০% অ্যাপথাস হয় ভিটামিনের অভাবে, তাই মুখের সব আলসারে ভিটামিন খাওয়া ভাল। ফেরিটিন বা আয়রনের স্বল্পতা থেকেও কিছু কিছু আলসার হতে পারে। এর গুরুত্ব বেশি। রক্তাল্পতার জন্য মুখে আলসার চিকিৎসা না করিয়ে ফেলে রাখলে ক্যানসার হতে পারে।

ওষুধের সাইড এফেক্ট

অনেকেরই কিছু ওষুধ খাওয়ার পর পরই মুখে ঘা দেখা দেয়। এটা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে হয়। হতে পারে ‘স্টিভেন জাংশন সিনড্রোম’। এতে মুখ থেকে ঠোঁট পর্যন্ত আলসার ছড়ায়। তখন স্টেরয়েড দিয়ে রোগীকে চিকিৎসা করতে হয়।

কিডনি বা লিভারের রোগ
 
ইউরেমিক আলসার, কিডনির অসুখ থাকলে তাদের দেখা দেয়।

ট্রম্যাটিক আলসার 

ভাঙা দাঁতের খোঁচা বারবার লাগতে লাগতে মুখের ভিতরে একই জায়গায় ক্রনিক আলসার হয়ে যায়। যা থেকে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

কেমিক্যাল বার্ন 

অনেকের খুব ভুল ধারণা রয়েছে যে, দাঁতে ব্যথা হলে ওষুধ না খেয়ে গালের কাছে রেখে দিলে নাকি ব্যথা কমবে তাড়াতাড়ি। কেউ কেউ আবার চুনও লাগায়। এতে মুখে আলসার হয়ে যায়। যাকে কেমিক্যাল বার্ন বলা হয়। 

লাইকেন প্লেনাস
 
এটাও রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি জনিত এক ধরনের মুখের আলসার। ওষুধ দ্বারা এর চিকিৎসা সম্ভব নয়। খুব ব্যথা-যন্ত্রণা হলে তখন লক্ষণ দেখে চিকিৎসা করা হয়। তবে সমস্যা ফেলে রাখা ঠিক নয়।

ওরাল ক্যানসার 

ক্যানসারও অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রথমে মুখের আলসার হিসেবেই দেখা দেয়। কখনও আবার আলসার না হয়ে, লিউকোপলেকিয়া (সাদা দাগ) বা স্পেকল্ড লিউকোপলেকিয়া (সাদা দাগের মধ্যে ছোট ছোট লাল দাগ) বা এরিথ্রোপ্লেকিয়া (লাল দাগ) রূপে দেখা দেয়। যা মুখ গহ্বরে, জিভে, গালে, ঠোঁটের ভিতরে, টাগরায়, গলায় চোখে পড়ে। সবসময় এই লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে দাগ দেখা গেলে তা ফেলে না রেখে চিকিৎসা করা জরুরি।

(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/এজেড)