কক্সবাজার পুলিশের খোলনলচে বদল

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৭:৩৬ | প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২২:৫৫

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় নতুন আঙ্গিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। ইতিমধ্যে জেলার পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার, সব থানার ওসি, এসআই, এএসআই ও প্রায় সব কনস্টেবলকে অন্য রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে। তাদের জায়গায় যোগ দিচ্ছেন নতুন সদস্য।

সর্বশেষ কক্সবাজার জেলা পুলিশের এসআই, এএসআই ও কনস্টেবল মিলে ১৩০৯ জনের বদলির আদেশ হয়। পুলিশ সদর দপ্তর ও চট্টগ্রাম রেঞ্জ থেকে পৃথক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই আদেশ জারি করা হয়। অবশিষ্ট যারা থাকবেন তাদেরও পর্যায়ক্রমে বদলি করা হবে।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ঢাকাটাইমসকে জানান, কক্সবাজার জেলা পুলিশকে নতুন আঙ্গিকে সাজানো হচ্ছে। এ জন্য কক্সবাজার পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সবাইকে বদলি করা হচ্ছে।

ডিআইজি ঢাকাটাইমসকে বলেন, জেলা পুলিশের সকল সদস্যকে আজ বদলি করা হয়েছে। এখন সবাই নতুন সদস্য। আগে পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার, ওসি পর্যায়ে রদবদল করা হয়েছে। জেলায় এখনো সবাই নতুন অফিসার।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান নিহতের পর শুক্রবার পর‌্যন্ত কক্সবাজার জেলা পুলিশের ১ হাজার ৪১৩ জন সদস্যকে বদলি করা হয়। এর মধ্যে রয়েছেন পুলিশ সুপার, তিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, চার সহকারী পুলিশ সুপার, পরিদর্শকসহ ২৭২ জন কর্মকর্তা এবং ১ হাজার ১৪১ জন কনস্টেবল।

গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা। এ ঘটনার পর কক্সবাজার পুলিশের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিপুল সমালোচনা হয়। ক্রসফায়ার বাণিজ্য, মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ততাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে আসে গণমাধ্যমে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজার জেলা পুলিশকে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ সদর দপ্তর।

গত ৩১ জুলাই মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডে জড়িত টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপসহ আটজন গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তী সময়ে অভিযুক্ত এপিবিএনের তিন সদস্য ও স্থানীয় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সবাই বর্তমানে কারাগারে।

জানা গেছে, বদলি পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ শীর্ষ ৮ কর্মকর্তা, ৮ থানার ওসিসহ ৩৭ পরিদর্শক, ১৫৮ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), ৯২ জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই), ১১৪১ জন নায়েক ও কনস্টেবল। সবাইকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের বাইরে ভিন্ন রেঞ্জে বদলি করা হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, বদলিজনিত শূন্য পদ পূরণে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে যোগ দিচ্ছেন ৮ থানার ওসিসহ ৩৭ জন পুলিশ পরিদর্শক, ৮৫ জন এসআই-এএসআই ও ৭৩৪ জন কনস্টেবল। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কক্সবাজার জেলা পুলিশে সম্পূর্ণ নতুন জনবল যোগ দেবে।

কক্সবাজার জেলার পুরো পুলিশ বাহিনীতে পরিবর্তন করা হচ্ছে জানিয়ে নবাগত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পর্যায়ক্রমে বদলি হওয়া সদস্যরা ছাড়পত্র নেবেন এবং নিয়োগকৃতরা যোগদান করবেন।

কক্সবাজারের আগের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেনকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসাবে বদলি করা হয়। তার জায়গায় হাসানুজ্জামানকে আনা হয় ঝিনাইদহ থেকে।

গত ২১ সেপ্টেম্বর বদলি করা হয় কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, সদর সার্কেলের মো.আদিবুল ইসলাম, সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজওয়ান আহমেদ, মহেশখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রতন কুমার দাশ গুপ্ত, ট্রাফিক পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার বাবুল চন্দ্র বণিক, চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মো. মতিউল ইসলাম এবং ডিএসবির সহকারী পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলামকে।

তাদের পরিবর্তে যোগ দেন পুলিশ হেডকোয়ার্টাসের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম, পুলিশ হেডকোয়ার্টাসের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মামুন আল ইসলাম, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার পংকজ বড়ুয়া, চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার মো. জাহেদুল ইসলাম, চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার কাজি শাহবুদ্দিন আহমেদ, র‌্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার মো. তফিকুল ইসলাম এবং খাগড়াছড়ির সহকারী পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম শাহনেওয়াজ।

(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :