কারাবাগ ইস্যু: আজারবাইজানের হেলিকপ্টার ফেলল আর্মেনিয়া

প্রকাশ | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৫৭ | আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:২৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

সীমান্তে বিবাদমান অঞ্চল নাগারোনো কারাবাগ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছে আর্মেনিয়া ও মুসলিম অধ্যূষিত আজারবাইজান। দীর্ঘ চার দশক ধরে চলা অমীমাংসিত অঞ্চল নিয়ে রবিবার সকালে দুদেশের মধ্যে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

উভয় পক্ষের হামলায় দুদেশের বেশ কয়েকজন বেসামরিক লোক প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও আজারবাইজানের সামরিক হেলিকপ্টার ও ড্রোন ভূপাতিতের দাবি করেছে আর্মেনিয়া।

সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে আজারবাইজানের হামলাকে দায়ী করে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনয়ান বলেছেন, ‘তারা আকাশ পথে হামলার সূচনা করেছে। আমরা তাদের (আজারবাইজানের) দুটি হেলিকপ্টার ও তিনটি ড্রোনকে ভূপাতিত করেছি।’

অন্যদিকে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, তারা হামলার সূচনা করেনি। আর্মেনিয়ানদের আকাশ পথে হামলার উত্তর দিয়েছে তারা। তাদের দাবি, হেলিকপ্টার ধ্বংস হলেও, পাইলট-ক্রুদের কোনো ক্ষতি হয়নি।

এক ‍বিবৃতিতে আজারবাইজানের প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র হেকমেট হাজিইয়েব বলছেন, ‘আর্মেনিয়ানদের হামলায় কিছু বেসামরিক লোক ও সেনা সদস্য হতাহত হয়েছে।’

এদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য দুদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘পরিস্থিতি শান্ত করতে আপনাদের আলোচনার টেবিলে বসা উচিত’।

অতীতে দেশদুটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। গেল চার দশক ধরে অমীমাংসিত অঞ্চলটি নিয়ে দুদেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। নাগারোনো কারাবাগ আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজেনের স্বীকৃত অঞ্চল হলেও, অঞ্চলটি এখনও নিয়ন্ত্রণ করে আর্মেনিয়ানরা।

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে অঞ্চলটিকে দখলে নেয় খ্রিষ্টান অধ্যূষিত আর্মেনিয়া। আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে কারাবাগকে দখল করে নিতে তারা প্রায় ৩০ হাজার লোককে হত্যা করে তারা। 

যদিও ১৯৯৪ সালে একটি শান্তি চুক্তির মাধ্যমে এই যুদ্ধের অবসান ঘটে। ফ্রান্স, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া এই শান্তি চুক্তি ২০১০ সালে ভেঙে যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে উত্তেজনা বৃদ্ধিতে দুদেশেই একে অপরকে দায়ী করে আসছে।

এদিকে আজারবাইজানের পক্ষে থাকা তুরস্কের প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘বেসামরিক মানুষের ওপর হামলার মাধ্যমে আর্মেনিয়ানরা যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে লঙ্ঘন করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে এই উসকানি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।’

এই নিয়ে গেল জুলাইয়ে সীমান্তে সংঘর্ষে উভয় পক্ষেরই ১৬ সেনা নিহত হয়। সেনা নিহতকে কেন্দ্র করে দেশটির আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে বিক্ষোভে রাস্তায় নামে লাখ লাখ সাধারণ জনগণ। বিক্ষোভে তারা নাগারোনো কারাবাগকে আর্মেনিয়ার হাত থেকে পুনরুদ্ধারের দাবি জানান।

ঢাকাটাইমস/২৭ সেপ্টেম্বর/এনএইচএস/ইএস