বিশ্বজুড়ে আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা: আবদুর রহমান

প্রকাশ | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:২৯ | আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:৩৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে গেছেন। বিশ্বজুড়ে আজ বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মবার্ষিকী সামনে রেখে রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে চলমান এক চিত্রপ্রদর্শনীর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। ‘প্রজন্ম ৭১’ আয়োজিত চিত্রপ্রদর্শনীর আজ রবিবার তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।

শেখ হাসিনার সংগ্রামময় জীবন ও তার বিরুদ্ধে বারবার ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে  আব্দুর রহমান বলেন, ‘কুচক্রীরা একুশবার শেখ হাসিনাকে হত্যার নীলনকশা করেছিল। সর্বশেষ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তাকে নিঃশেষ করার সব ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত করা হয়েছিল।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ’৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের আস্ফালনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশ জঙ্গিবাদে ভরে গিয়েছিল। বাংলাদেশ গণতন্ত্রশূন্য দেশে পরিণত হয়েছিল। ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য নায়ক জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে গণতন্ত্রকে সেদিন একাত্তরের পরাজিত শক্তি মুজাহিদ, মতিউর রহমান নিজামীদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।

আব্দুর রহমান বলেন, ‘সেই অবস্থায় নেত্রী দেশে ফিরে আসেন। রাজপথে চিরপরিচিত মিছিল, সংগ্রাম, আন্দোলন, সংঘাতকে মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে পৃথিবীর বুকে উচ্চ আসনে বসিয়েছেন। আজকে সারা বিশ্ব বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং তার নেতৃত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।’

‘শেখ হাসিনা মানেই এই বাংলাদেশ, আজকের গণতন্ত্রের বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়নের বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা মানেই জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা মানেই সাম্প্রদায়িকতামুক্ত বাংলাদেশ, অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ।’ বলেন আবদুর রহমান।

১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রতিশোধ নিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন আবদুর রহমান। বলেন, ‘সেদিন যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছিল ঘাতকরা, তা কেবল বঙ্গবন্ধু কিংবা বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হত্যা করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তার পেছনে ছিল সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনে পরাজিত নরপশুরা সেই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছিল। তারা বাংলাদেশের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করেছিল। আমাদের চেতনা কেড়ে নিতে চেয়েছিল। আমাদের উপলব্ধিকে হত্যা করতে চেয়েছিল।’

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, করোনা দুর্যোগের সময় দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি জায়গা সচল ছিল জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে।

দেশে চলমান মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে দেশের অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাবের কথা তুলে ধরে নাদেল বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করেছেন। যেসব মেগা প্রজেক্ট রয়েছে, তার অনেকগুলোই আমাদের লোকচক্ষুর আড়ালে। কিন্তু যারা জানেন এই মেগা প্রকল্পগুলো যখন বাস্তবায়ন হবে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক প্রবৃত্তি কোন জায়গায় যাবে সেটা নিশ্চয়ই কল্পনা করতে পারি।’

নাদেল বলেন, ‘আজকে করোনাভাইরাসে সারা বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে গেছে। সেই জায়গায় জননেত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে ৭-এর উপরে আমাদের প্রবৃদ্ধি। তিনি আমাদের একটি মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে নিয়ে গেছেন। এরপর আমাদের উন্নত বিশ্বে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার।’

‘প্রজন্মের প্রার্থনা—শতায়ু হোক শেখ হাসিনা’ শীর্ষক চিত্রপ্রদর্শনীতে জায়গা পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির শৈশব, কৈশোর, ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক জীবনের ৭৪টি ছবি। গত শুক্রবার সকালে শুরু হওয়া প্রদর্শনী আগামীকাল শেষ হচ্ছে। কাল শেখ হাসিনার জন্মদিনের কেক কেটে অনুষ্ঠানের পর্দা নামবে।

‘গৌরব ৭১’ এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন বলেন, ‘আমরা এখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪টি ছবি প্রদর্শন করছি। এর মধ্যে প্রায় ৩০টি ছবি এর আগে অনেকেই দেখেননি। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে আমরা এই দুর্লভ ছবিগুলো সংগ্রহ করেছি।’

যারা দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে প্রধানমন্ত্রীর এই আলোকচিত্র দেখতে চায়, তাদের জন্য আগামীকাল প্রদর্শনী শেষে বাংলাদেশ তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ডিজিটাল মাধ্যমে ছবিগুলো এবং ছবির পেছনের গল্পগুলো প্রকাশ করা হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মারুফা আক্তার পপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমান, ডিকাব-এর সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২৭সেপ্টেম্বর/কারই/মোআ)