‘ছাত্র ইউনিয়ন স্বাধীনতাবিরোধীদের মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে’

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২৩:২০

স্বাধীনতা সংগ্রামে গৌরবান্বিত ভূমিকা পালন করা ছাত্র ইউনিয়ন বর্তমানে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির মুখপত্রে পরিণত হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ।

সোমবার রাতে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ লিপিতে এ দাবি করা হয়৷।

গতকাল ধর্ষণবিরোধী এক সমাবেশে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস 'স্বাধীনতাবিরোধী ছাড়া অন্য কোনো নারী যদি নির্যাতনের শিকার হয়...তা প্রতিহত করবো' এমন একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন। সে বক্তব্যের প্রতিবাদে আজ (সোমবার) সকালে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা 'সনজিত ধর্ষণ-নারী নিপীড়নকে বৈধতা দিয়েছেন' উল্লেখ করে তাকে (সনজিত) শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে দেখতে চায় না মর্মে বিবৃতি দিয়েছে। ছাত্র ইউনিয়নের এমন বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই প্রতিবাদস্বরূপ এই বিবৃতি দেয় ঢাবি ছাত্রলীগ

প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে গৌরবান্বিত ভূমিকা পালন করা ছাত্র ইউনিয়ন যে বর্তমানে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির মুখপত্রে পরিণত হয়েছে তা প্রমাণ হয় একাত্তরের মহান স্বাধীনতার সংগ্রাম, ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মিথ্যাচারকে ‘রাষ্ট্রীয় বিতর্কিত বিষয়’ বলে উল্লেখ করার মাধ্যমে। সাম্প্রতিক যৌথ বিবৃতি সেই ধারাবাহিকতারই আরেকধাপ পতন বলে আমরা মনে করি।’

‘ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের একটি বক্তব্যকে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে কুরুচিপূর্ণ ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে রঙ মাখিয়ে বিভ্রান্তিকর যে প্রচারণা বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নামে প্রচারিত হয়েছে, তা ছাত্র ইউনিয়নের গৌরবজনক ঐতিহাসিকতার হতাশাজনক পরিণতি বলে আমরা মনে করি। আমরা উদ্বেগের সাথে আরও মনে করি, সাম্প্রদায়িক-প্রতিক্রিয়াশীল, স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠীর কাছে ছাত্র ইউনিয়নের বর্তমান নেতৃত্ব তাদের সংগঠনকে যেভাবে লজ্জাজনক ইজারা ও দখলদারিত্ব প্রদান করেছে সাম্প্রতিক যৌথ বিবৃতি তারই প্রমাণ বহন করে।’

প্রতিবাদে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই মিথ্যাচার ও বানোয়াট যৌথ বিবৃতিকে প্রত্যাখ্যানপূর্বক মনে করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ধর্ষিত হওয়ার ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে নীরব থেকে ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ ধর্ষকদের পক্ষে তাদের সাংগঠনিক অবস্থান প্রমাণ করেছে। পাশাপাশি ধর্ষকদের সাথে নিজেদের রাজনৈতিক মিত্রতাকে তারা ধর্ষিতার আর্তনাদের থেকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। যা এই সংগঠনের দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করে।’

‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন ও নারীর মানবিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার বিপক্ষে সোচ্চার। বিপরীতে ছাত্র ইউনিয়ন ধর্ষণকারীদের পক্ষে নীরবতা পালন করে, ধর্ষণকারীদের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতা গড়ে, আকারে-ইঙ্গিতে থেকে প্রকাশে ধর্ষণকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে নিজেদের সাংগঠনিক অবস্থান পরিষ্কার করেছে। এমনকি নিজ সংগঠনের ভেতরে সংঘটিত নারী নির্যাতনের ঘটনারও কোনো প্রতিকার পূর্বে তারা করেনি যার ফলশ্রুতিতে তাদের কেন্দ্রীয় অফিসে নির্যাতিতাকে অবস্থান ধর্মঘট পালন করতে হয়েছে।’

ছাত্র ইউনিয়ন ধর্মীয় উগ্র গোষ্ঠীর সমার্থক হয়ে পরিচালিত হচ্ছে দাবি করে প্রতিবাদে আরও বলা হয়, সুষ্ঠু-স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা, সহমর্মিতাকে পাশ কাটিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ কর্তৃক যে হীন প্রতিহিংসা দৃশ্যমান তা সামগ্রিক ছাত্র রাজনীতির জন্য নেতিবাচক বলে আমরা মনে করি। স্বাধীনতা বিরোধী, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, ধর্মীয় উগ্র গোষ্ঠীর সমার্থক হয়ে পরিচালিত ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের এমন কর্মকাণ্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কোনোভাবেই মেনে নেবে না।

ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদকে তাদের পূর্বের ঐতিহাসিক ধারায় ফেরার আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগ প্রতিবাদ লিপিতে বলেন, নেতৃত্বের দুর্বলতা কাটিয়ে প্রগতিশীল রাজনৈতিক কৌশল বিনির্মাণের মাধ্যমে, সংগঠন থেকে বিভিন্ন অপশক্তি উৎখাত করে ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ তাদের পূর্বের ঐতিহাসিক ধারায় প্রত্যাবর্তন করবে, সে সুদিনের প্রত্যাশা রইলো।

(ঢাকাটাইমস/২৮সেপ্টেম্বর/এমআই/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :