শেরপুরে নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মীর পাশে প্রশাসন

প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২৩:৫০

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

শেরপুরের শ্রীবরদীতে আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মীর পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সোমবার বিকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্যাতিত শিশু সাদিয়া পারভিনের পরিবারের হাতে ১৫ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

এ দিন ইউএনও নিলুফা আক্তার ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডিএম শহীদুল ইসলাম ওই শিশুর চিকিৎসাসহ আইনি সহায়তা প্রদানে পাশে থাকার ঘোষণা দেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানা যায়, শ্রীবরদী পৌরশহরের মুন্সীপাড়া এলাকার সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাদিয়া পারভিন (১০) উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত। ওই নেতার স্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুর মাঝে মধ্যে সাদিয়াকে নানা অজুহাতে মারধর করত। এমনকি গরম খন্তি দিয়ে ওই শিশুর মাথা, পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করত। এতে দগদগে ক্ষত হয় সাদিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থান।  গেল শুক্রবার সাদিয়াকে মারপিট ও গরম খন্তি দিয়ে আঘাত করলে সে গুরুতর আহত হয়। পরে এক প্রতিবেশী ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করলে পুলিশ পৌর শহরের বিথি টাওয়ারের ছয় তলা বাসা থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করে। রাত দেড়টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এক সময় সাদিয়ার অবস্থার আরো অবনিত হলে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে ওই শিশুকে জেলা হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি করা হয়।

সাদিয়ার বাবা সাইফুল ইসলাম জানান, সাদিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত। সাদিয়া এখন হাসপাতালের শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই আওয়ামী লীগ নেতার বাসা থেকে তার স্ত্রী ঝুমুরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোর্পদ করে। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠায়। এ মামলার তদন্তের প্রয়োজনে গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে তিনি জানান।

এ ঘটনাটি গণমাধ্যম ও ফেসবুকে প্রকাশ হলে জেলার সর্বত্র প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সাদিয়ার নির্যাতনের ঘটনা টক অব দা টাউনে পরিণত হয়।

বিষয়টি জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব খোঁজ খবর নিচ্ছেন জানিয়ে ইউএনও নিলুফা আক্তার বলেন, আমরা ওই শিশুর চিকিৎসার জন্যে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি। এ সময় তিনি এমন বর্বরোচিত নির্যাতনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।

এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডিএম শহীদুল ইসলাম বলেন, এটি  জঘন্যতম ঘটনা।

(ঢাকাটাইমস/২৮সেপ্টেম্বর/এলএ)