শেখ হাসিনা বিশ্বের কাছে অনুপ্রেরণার নাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:৫৭ | প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:৪৬

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের কাছে এখন অনুপ্রেরণার নাম। বিশ্বনেতা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া জাতির জনকের কন্যা বাংলাদেশকে গর্বিত করেছেন। নারী ক্ষমতায়ন থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের সাক্ষর রেখেছেন। বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল করতে গিয়ে কোনো দিন কারো কাছে মাথানত করেননি। শেখ হাসিনার হাতেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র সবচেয়ে নিরাপদ। সেই গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মবার্ষিকী ছিল গতকাল। যিনি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট একমাত্র বোন ছাড়া পরিবারের আত্মীয়-স্বজন সবাইকে হারিয়ে বুকভরা ব্যথা নিয়ে অসীম সাহসে গণমানুষের মুক্তির দূত হিসেবে শোকার্ত বাংলাদেশের ব্যথাতুর মানচিত্রের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছিলেন। সোমবার ২৮ সেপ্টেম্বর ভোরের পাতা সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে এমনটাই বলছিলেন বক্তারা। গতকাল ছিল প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন।

ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজনের ১১১তম পর্বে আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সংসদ সদস্য এবং সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী লে. কর্ণেল (অব.) ফারুক খান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আব্দুর রশিদ, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম, জার্মান দূতাবাসের বাংলাদেশ সরকার অনারারি কনস্যুলেট ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া।

দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।

কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার জন্ম না হলে আমরা আজকের এই অবস্থানে আসতে পারতাম না। আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এই দোয়াই করি, শেখ হাসিনা যেন শতায়ু হন। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা বঙ্গবন্ধু করে যেতে পারেননি, তার কন্যা আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং রাজনৈতিক মুক্তি দিয়ে যাচ্ছেন। ছোট বেলায় হিন্দিতে বলতাম, শ সাল জিয়ো। আজ শেখ হাসিনার জন্য এটাই বলতে চাই। এই করোনার সময়ে শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশকে সামলে নিয়েছেন তা সত্যিই অভূতপূর্ব। দেশের আজকে রেমিটেন্স ৩৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

আমি আজকে ভোরের পাতার সম্পাদক ড. কাজী এরতেজা হাসানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আজকের এই আনন্দের দিনে এমন একটি আয়োজনে আমাকে যোগদান করা সুযোগ দেয়ার জন্য। আমি মনে করি আজকের এই দিনে শেখ হাসিনা হাসলেই বাংলাদেশ হাসে, শেখ হাসিনা কাঁদলেই বাংলাদেশ কাঁদে। আমরা তাকে আর কাঁদকে দেখতে চাই না। তার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ এ দেশে সমাপ্ত হচ্ছে।

ফারুক খান বলেন, আজ আন্তর্জাতিকভাবে শেখ হাসিনা স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। আজকে তার জন্মদিনে এমন আয়োজনের জন্য ভোরের পাতাকে ধন্যবাদ। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, তৈরি হও, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, ২০৪১ সালের আগেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। আজকের এই দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে তার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রধান শক্তি সহযোগী সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। আমি বলতে চাই, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বৈঠকে বলেছিলাম, বিদেশে গেলে এখন আমাদের কাছে জানতে চান, শেখ হাসিনার কাছে কি এমন ম্যাজিক আছে? বিশ্বের অনেক বড় বড় নেতা যেখানে ব্যর্থ হচ্ছেন সেখানে শেখ হাসিনা কীভাবে সফল হলেন। তার কাছে এমন কি ম্যাজিক আছে? এমনকি বিশ্বের সেরা কর্মঠ, সৎ এবং ডাইনামিক নেত্রীতে স্বীকৃতি পেয়েছেন শেখ হাসিনা।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমাদের নেত্রী আওয়ামী লীগের সভাপতি, তিনি আন্দোলন সংগ্রামের নেত্রী। তিনি আমাদের আস্থার স্থল, তিনি আমাদের আশ্রয়ের ঠিকানা। ২৭ বছর ১০ মাস ২৭ দিন বয়সে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালোরাতে পিতামাতা, ভাইবোনসহ পরিবারের সব সদস্যদের হারান তিনি। এরপর শুরু হয় নির্বাসিত জীবন। ১৯৮১ সালের ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৩৩ বছর ৪ মাস ১৭ দিন বয়সে তিনি দেশের সর্বপ্রাচীন এবং সর্ববৃহৎ দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। একই বছরের ১৭ মে তিনি নিজের ছোট দুই সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিজের ছোট বোন শেখ রেহানার কাছে রেখে শুধু মাত্র এদেশের মানুষের জন্য ফিরে আসেন। এসেই শুরু হয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম। আমাদের নেত্রীর রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাবো, টানা ১৫ বছর তিনি নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম ও আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেন। এ সময় তাকে ৮ বার গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপর ওয়ান ইলেভেনের সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সর্বশেষ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জনগণের নেত্রী হিসাবে ৮৬ সালে এবং ৯১ সালে তিনি সংসদে বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। এরপর ১৯৯৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসেন। এরপর তিনি আবারো ২০০১ সালে ষড়যন্ত্র করে তাকে বিরোধী দলের নেতা হয়েই সংসদে যেতে হয়েছে। জীবনযাপনে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকেই মানেন। ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে তাকে এতটুকু আসতে হয়েছে। ১৯ বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। ভোট এবং ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে অনেক বাঁধা পেরুতে হয়েছে। ইডেন কলেজ থেকে ছাত্র রাজনীতির শুরু করে অবিচল আস্থা নিয়ে তিনি দীর্ঘ ৪৬ বছর ধরে দেশের সেবা করে যাচ্ছেন। আমার রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম সেরা অনুভূতি হচ্ছে, দেশে ফেরার পর তার প্রথম বরিশাল সফরে তার সফরসঙ্গী হয়েছিলাম। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের কাছে অনুস্মরণীয়, তার কারণেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ধার্মিক। ফজরের নামাজ আদায় করেই দিন শুরু করেন। নিখাদ দেশপ্রেম নিয়ে তিনি বাঙালি জাতির ঐক্যের প্রতীক, আমাদের আস্থার ও ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল।

মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ বলেন, আমি আজকের দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার যে দক্ষতা তা আমাদের মুগ্ধ করে। আমি কিছুটা অবাকও হই। শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রেখে মানুষ এখন শান্তিতে ঘুমাতে পারে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই। এমনকি সেদিন পাকিস্তান থেকে আনা আর্জেস গ্রেনেড ব্যবহার করেছিল আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃত্বকে হত্যা করার জন্য। তখন খুনিদের পালিয়ে যেতে সহয়তা করার জন্য পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছিল। সেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা গ্রেনেড থেকে বেঁচে গেলও তার গাড়িতে গুলি চালানো হয়েছিল। কিন্তু মানবঢাল তৈরি করে নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়েছিলেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ পরিপূর্ণভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে ৯৫ হাজার পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে। এ ঘটনায় পাকিস্তান যে লজ্জা পেয়েছিল, সেই আক্রোশ থেকেই সেটার প্রতিশোধ নিতে পশ্চিমা শক্তি যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি, তারাই এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। এখনো পাকিস্তান ভাব ধারার মতাদর্শের লোক বাংলাদেশে বাস করছে। তারা এখনো পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন করার স্বপ্ন দেখে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরই পাকিস্তান স্বীকৃতি দিল। এমনকি পাকিস্তান বিভিন্ন দেশকে অনুরোধ করেছিল স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। আপনারা যদি দেখেন, আত্মস্বীকৃত খুনিরা এই হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের পিছনে কারা জড়িত তাদের নাম বলেছে। কিন্তু এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মুখোশ উন্মোচন হয়নি। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। কর্নেল হামিদের লেখা বইটিতে খুনিদের সাথে জেনারেল জিয়াউর রহমানের সখ্যতার বিষয়টা তুলে ধরেছেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শুধু জাতির পিতাই ছিলেন না, তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিও ছিলেন। তার নিরাপত্তা ঘাটতি ছিল সত্যি। তেমনি হত্যাকাণ্ডের পর বিভিন্ন বাহিনীর নির্লিপ্ত কেন ছিল সেটা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। বাংলাদেশকে ঘিরে এখনো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। এই ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য আমাদের যথেষ্ঠ কৌশলী হতে হবে। সময় এসেছে, কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের মুখোশ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করার। তিনি বৈরী পরিবেশকে অনুকূলে আনতে পারেন। তার দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

মোহম্মদ শামস্-উল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর সামনে স্বাধীন দেশে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। তিনি ধনী ও গরিবের মধ্যে একটা সামঞ্জস্য তৈরি করার মাধ্যমে সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। তিনি ১৯৭২ সালে কৃষকদের এক লাখ বলদ, ৫০ হাজার গাভী এবং ৩০ কোটি টাকা কৃষি ঋণ দিয়েছিলেন। এর পরের বছর ২৫ বিঘা জমির খাজনা মওকুফ করে দিয়েছিলেন। এক সময় অনেকে ভাবতো, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। ১৯৭৩ সালে দুই ধাপে বন্যা হয়েছিল। এদেশের খাদ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার কাজ করছিলেন তখনই ষড়যন্ত্র করেছিল। বঙ্গবন্ধুর দুর্বলতা ছিল তিনি বাঙালিকে অতিরিক্ত বিশ্বাস করতেন এবং ভালোবাসতেন। গ্রীক সাহিত্যের জুলিয়াস সিজারের মতো তার বন্ধু যখন পিঠে ছুরি মেরেছিল ব্রুট। তেমনি বঙ্গবন্ধুও খুনিদের বলেছিলেন, তোরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাবি? বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবে না। প্রকৃতপক্ষে বাঙালিকে দাবায়ে রাখা সম্ভব হয়নি। তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা মোকাবিলায় অত্যন্ত সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। এতেও অনেকে ঈর্ষান্বিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনে যারা ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে কুশীলব হিসাবে কাজ করেছে, তাদেরও বিচার করতে হবে। আমাদের রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে, ১৯৭২ সালে বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা, আজ বাজেট ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। আমি বলতে পারি, যত চ্যালেঞ্জই আসুক না কেন, ষড়যন্ত্র হোক না কেন; আমাদের দাবায়ে রাখা সম্ভব হবে না। আমাদের রিজার্ভ অল্প দিনের মধ্যেই ৩৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। আজকে একটা কথাই বলতে চাই, যার জন্য আমরা এই দেশ পেয়েছি, সেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আরো বেশি বেশি করে জানতে হবে, গবেষণা করতে হবে। তাকে জানলেই আমরা আলোকিত হবো, সমৃদ্ধ হবো এবং আমাদের দেশপ্রেম বাড়বে। এ কারণেই আমরা বঙ্গবন্ধু কর্ণার করেছি। বঙ্গবন্ধুকে জানার কোনো বিকল্প নেই। আজকের এই দিনে আমরা বুক ফুলিয়ে বলতে পারি আমরা বাংলাদেশি। কারণ তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে, এগিয়ে যাবে। এই করোনার সময়েও আমরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রধানমন্ত্রীকে যে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, সেটার অবদানও শেখ হাসিনা এবং তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের। আঁধারের পাখি হয়ে তিনি আমাদের আলো দেখাচ্ছেন। পদ্মা সেতু আজ অধরাই থাকতো, যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগ না নিতেন। অগ্রণী ব্যাংক পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করছি। যত বিদেশী মুদ্রা লাগবে, সেখানে অগ্রণী ব্যাংক দিয়েছে। আমরা এখনো এক ডলারও বাংলাদেশের কাছে চাইনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু যে ভিশনারী লিডার তা নন, তিনি একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতা, তিনি চ্যালেঞ্জ নিতে জানেন। এমন নেতা বর্তমান বিশ্বে দেখা যায় না। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ট্রাস্ট্রেও আমরা অবদান রেখেছি কোনো ধরণের ফি নিই নাই। লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পে অবদান রাখতে পেরে আমরা গর্বিত। আমরা আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছি।

হাসনাত মিয়া বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানে আমাকে দাওয়াত দেয়ার জন্য আমি ভোরের পাতার সম্পাদক ড. কাজী এরতেজা হাসানের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি বলতেই চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসলেই বাংলাদেশ হাসে। আমি নেত্রীকে ফোন করেছিলাম। তাকে বলেছিলাম, তিনি হাসলে পুরো পৃথিবী হাসে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তার হাত ধরেই বাংলাদেশ শুধু গণতান্ত্রিক মুক্তি আসেনি। তার কারণেই এখন দেশে খাদ্যের অভাব নেই, বিদ্যুতের অভাব নেই। কৃষক সারের জন্য গুলি খেয়ে মারা যায়নি। শেখ হাসিনা এতটাই মানবিক নেত্রী, তিনি হয়তো আনুষ্ঠানিকভাবে নোবেল পাননি, কিন্তু মানুষের মনের নোবেল পেয়েছেন তিনি। আল্লাহর অশেষ রহমতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমাদের বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানিতে ছিলেন। সেদিন আল্লাহর ওহি নাজিল হয়েছিল বলেই বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বেঁচে গিয়েছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারণে আমরা বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছিলাম। ঠিক তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনা চাইলেই বিদেশে থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসেন নানা বাধাকে ডিঙিয়ে। তখন আওয়ামী লীগের অবস্থা খুবই বাজে ছিল। ইডেন কমপ্লেক্সে যে সম্মেলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয়েছিল, তখন সেখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি দেশে ফিরে না আসতেন, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যরকম হতো। উনার ভিশনারি নেতৃত্বের কারণে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে গেছে। আমি যখন মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল, তখন দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার। তিনি রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। তখন বঙ্গবন্ধুর নামও নেয়া যেত না। তখন মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে প্রায় ৫ হাজার লোকের সমাগম করে শেখ রাসেল স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিলাম। আমার সৌভাগ্য হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার পাশে থেকে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছি। জার্মানি থাকা অবস্থায়ও জার্মান পার্লামেন্টে ওয়ান ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য কথা বলেছি। তার কারণেই বাংলাদেশ আজ নারী উন্নয়নে রোল মডেল। শেখ হাসিনার কারণেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছে। তাকে কতবার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এক সময় আওয়ামী লীগে ভাঙন সৃষ্টির জন্য সামরিক জান্তারা কত কিছু করেছে, কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আরো শক্তিশালী হয়েছে। শেখ হাসিনা নিজের দলের অন্যায়কারীদেরও ছাড় দিচ্ছেন। তার কারণেই আমরা জানতে পারছি, কারা অপরাধী। তাদের শাস্তিও দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চতুর্থবারের মতো সরকার প্রধান হয়ে তিনি বাংলাদেশকে পরিচালনা করছেন অত্যন্ত সুদক্ষভাবে। আজকে জার্মান সরকার বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করছে। এমনকি জাপান সরকার দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচে বেশি বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশে। এই বিনিয়োগের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ৭৪ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছেন, কিন্তু দেখুন তিনি কতটা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। উনি সুস্থ থাকলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

(ঢাকাটাইমস/২৯সেপ্টেম্বর/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

গণমাধ্যম বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

গণমাধ্যম এর সর্বশেষ

আরআরএফের সভাপতি মিজান, সম্পাদক নিশাত ও দপ্তর সম্পাদক মেহেদী

সাংবাদিক নেতা রমিজ খানের ইন্তেকাল, বিএফইউজের শোক

ঈদের ছুটি না পাওয়া গণমাধ্যমকর্মীদের যথাযথ সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজের

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য

নড়াইল জেলা সাংবাদিক ইউনিটি-ঢাকার নতুন কমিটি গঠন

সাংবাদিক মিনার মাহমুদের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সাংবাদিক সাব্বিরের ওপর নৃশংস হামলায় ঢাকাস্থ গাজীপুর সাংবাদিক ফোরামের নিন্দা

বাংলানিউজকর্মী মিথুনের ক্যানসার চিকিৎসায় এগিয়ে এলো বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন

আজ ভোরের পাতা সম্পাদকের পিতার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী

সাংবাদিক মোহসিন কবিরকে মারধরের ঘটনায় ডিআরইউর প্রতিবাদ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :