পিবিআইয়ের নির্যাতনে হত্যা মামলার আসামির মৃত্যুর অভিযোগ

বাগেরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:১৯

বাগেরহাটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হেফাজতে থাকা হত্যা মামলার এক আসামির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে তার মৃত্যু হয় বলে দাবি নিহতের পরিবারের। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পিবিআই বলছে, তাদের হেফাজতে নয়, অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতেই নিহতের ময়নাতদন্ত বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন হয়। পরে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পিবিআই।

নিহত ওই আসামির নাম রাজা ফকির (২০)। তিনি শহরের খানজাহান আলী ডিগ্রী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি বাগেরহাট সদর উপজেলার ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের হযরত খানজাহান (রহ.) মাজারের দিঘির পূর্বপাড়ের আল মর্তুজা ফকির ওরফে বাবু ফকিরের ছেলে।

জানা গেছে, গত বছরের ১৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় সদর উপজেলার মাজার মোড় এলাকায় তামিম মল্লিক নামে এক তরুণ ছুরিকাঘাতে খুন হয়। ওই সময়ে মাজারের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজে যে তরুণকে দেখা গেছে সেই তরুণ এই রাজা ফকির। ঘটনার পরদিন নিহতের পরিবার রাজা ফকিরকে আসামি করে বাগেরহাট মডেল থানায় একটি মামলা করে। ঘটনার পর থেকে রাজা ফকির এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

পিবিআই’র ভাষ্য, গত রবিবার রাতে বরিশালের পটুয়াখালী থেকে রাজাকে গ্রেপ্তার করে তারা। এরপর সোমবার দুপুরে অসুস্থ বোধ করায় তাকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়। সন্ধ্যায় তার মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজনেরা হাসপাতালে ছুটে আসেন।

এসময় রাজার বাবা আল মর্তুজা ফকির ওরফে বাবু ফকির তার ছেলেকে নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলে তো ছুরি মারছে। ওই হত্যার সঙ্গে সে জড়িত, ভিডিওতে তা প্রমাণিত। তাকে ধরে আনা হলো। আদালত তার বিচার করত। নির্যাতন করে কেন তাকে মেরে ফেলা হলো? পটুয়াখালীতে রাজা এক আত্মীয়ের বাড়ি ছিল। সেখান থেকে আনার পথে ওর ওপর নির্যাতন করা হয়। বাগেরহাটে এসেও রাজার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। বাদী পক্ষের সহায়তায় পুলিশ আমার ছেলেকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’

নিহত রাজা ফকির হাসপাতালে ভর্তি ছিল কিনা জানতে চাইলে বাগেরহাটের সিভিল সার্জন হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের জানান, সোমবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে ওই তরুণকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন পিবিআইয়ের সদস্যরা। সে সময় দায়িত্বরত চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত পান। নিয়ে আসা পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসককে জানিয়েছিলেন, হঠাৎ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রাতেই তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে জানা যাবে।

তবে এ বিষয়ে পিবিআই বাগেরহাট কার্যালয়ের কোন কর্মকর্তা গনমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন নি।

তবে ওই কার্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, রাজা পুলিশ হেফাজতে মারা যায় নি। তার উপর কোন নির্যাতনও হয়নি। এক বছর ধরে সে পলাতক ছিল। পটুয়াখালী থেকে তাকে বাগেরহাটে নিয়ে আসার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৯সেপ্টেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :