করোনা আক্রান্ত রোগীর কাশিতে ১০ জন আক্রান্ত হতে পারে

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:৪৯

সারা বিশ্ব করোনাভাইরাসের প্রকোপে স্তব্ধ। প্রতিদিন মৃত্যু হচ্ছে হাজার হাজার মানুষের। বিপর্যস্ত বিশ্বের অর্থনীতি। চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস এখন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ত্রাস। ১৯৬৮ সালে প্রথম খোঁজ মেলে গ্লাইকোপ্রোটিন দিয়ে তৈরি মুকুট সদৃশ্য করোনাভাইরাসের।

সম্প্রতি করোনাভাইরাস বাতাসে ছড়ানোর মডেল নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে তারা দেখেছেন কোনো ব্যক্তির কাশির সময় তার চারপাশে অ্যারোসল ‘মেঘ’ তৈরি হয়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে ও মিশে যায়। তবে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক মিনিট সময় লাগে। এই সময়ের মধ্যে ওই ঘনীভূত মেঘের মতো এলাকা দিয়ে কেউ হেঁটে গেলে তত্ত্ব অনুযায়ী এসব ভাইরাল কণা তার শ্বাসের সঙ্গে ঢুকে পড়ে।

করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত কেউ কাশি দিয়ে চলে যেতে পারে, তবে তবে তিনি করোনাভাইরাস বহনকারী অত্যন্ত ছোট অ্যারোসোল কণাকে পেছনে রেখে যান। এসব কণা আশপাশের অন্যদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ঢুকে যেতে পারে।

গবেষণার ভিত্তিতে ফিনল্যান্ডের গবেষকেরা এখন মানুষজনকে যেসব এলাকায় বেশি জনসমাগম হয় এবং অন্দরের যেসব জায়গায় বেশি লোকজন চলাচল করে, সেগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন।

গবেষকেরা ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট অ্যারোসোল কণার গতিবিধির মডেল তৈরি করেছেন, যাতে এত ক্ষুদ্র কণাও আছে, যা বাতাসে ভেসে থাকতে পারে এবং কোনো পৃষ্ঠে পড়ার চেয়ে বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে চলাচল করে।

উল্লেখ্য, বাতাসে গ্যাসের মধ্যে তরল বা কঠিন পদার্থের কণা ঝুলে থাকলে তাকে অ্যারোসল বলে। যেমন কঠিন ধুলাবালি এবং তরল জলীয় বাষ্প (কুয়াশা) বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এই দুইটিই অ্যারোসল। আর এ কারণেই করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে রেস্পিরেটরি ড্রপলেট বা হাঁচি-কাশির ফলে বের হওয়া ড্রপলেট বা জলকণাকে অ্যারোসল বলা হচ্ছে।

নিউইয়র্কের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি জার্নালে ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন যে, ক্ষুদ্র বায়ুবাহিত কণা থেকেও করোনভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে এবং তা একজনের দেহ থেকে একাধিক মানুষদের সংক্রমিত করতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, ঘরের এককোণে বসে থাকলেও একজন করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির নাক-মুখ থেকে বের হওয়া বায়ু আরও ১০ জনকে সংক্রমিত করতে সক্ষম। এছাড়াও বন্ধ ঘর বা যেখানে বায়ুর চলাচলের অসুবিধা রয়েছে সেই স্থানে দাঁড়িয়ে অথবা বসে কেউ হাঁচি-কাশি দিলে, গান বা চিৎকার করলেও একজনের থেকে অপর জনের শরীরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়।

করোনাকে দূরে রাখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যে অত্যন্ত জরুরি তা মহামারী শুরুর প্রথম দিন থেকেই বলে আসছে বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা ব্যাধিকে দূরে রাখতে ২ মিটারের সামাজিক দূরত্ব যথেষ্ট নয়।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বায়ু বাহিত কোনও জীবাণুর বৃহত্তর কণা খুব বেশি সময় বাতাসে ভেসে থাকতে পারে না, কিছু সময় পরই তা মাটিতে পড়ে যায়। এগুলি একটি উইন্ডো ক্লিনারের স্প্রিটজে ফোঁটার মতো। এরা নাক, মুখ বা চোখের উপর থাকে বা শ্বাসকষ্টের কারণে কাউকে সংক্রামিতও করতে পারে।

তবে কিছু বিজ্ঞানীরা এখন ক্ষুদ্র কণার উপর দৃষ্টিপাত করছেন। এগুলো সিগারেটের ধোঁয়ার মতো বাতাসের মাধ্যমে আরও ছড়িয়ে পড়ে। এগুলো আমাদের দেহের উষ্ণতা দ্বারা সৃষ্ট বায়ু এবং এমনকি ঊর্ধ্বমুখী বায়ু দ্বারাও বাহিত হয়। এগুলি কয়েক ঘন্টার জন্য বাতাসে স্থির থাকতে পারে। একটি ঘরে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেই ঘরে বায়ুচলাচল কম হলে এর সংক্রমণ ছড়ানোর গতি বাড়তে পারে।

গোটা বিশ্বে যতদিন না করোনার কোনও টিকা বের হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত মানতে হবে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যাবতীয় সতর্কতা বিধি।

(ঢাকাটাইমস/৩০ সেপ্টেম্বর/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ

স্বাস্থ্য খাতে নতুন অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ভাতা বাড়লো ইন্টার্ন চিকিৎসকদের

বিএসএমএমইউ বহির্বিভাগ ৪ দিন বন্ধ, খোলা থাকবে ইনডোর ও জরুরি বিভাগ

তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ করতে বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বিএসএমএমইউতে বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে: ভিসি দীন মোহাম্মদ

ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে যেসব নির্দেশনা মানতে হবে হাসপাতালগুলোকে

কেন বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ

করোনায় ধূমপায়ীদের মৃত্যু হার ৩ গুণ বেশি: গবেষণা

বিদায়ী উপাচার্যের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রশ্নে যা বললেন ডা. দীন মোহাম্মদ

বিএসএমএমইউতে নতুন উপাচার্যকে বরণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি  

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :