কোভিড থেকে শুধু সারভাইভ নয় রিকভারির দিকেও নজর দিতে হবে

আমিনুল ইসলাম
 | প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:০১

কোভিড রোগী বেঁচে যাওয়ার পর যে আনন্দ আমাদেরকে গ্রাস করে তারপর দ্রুতই আমরা টের পাই এই বেঁচে যাওয়াটাই সব নয়, সম্মুখে অনন্ত পাথার। আদৌ কেউ কেউ পূর্বের জীবনটা আর ফিরে পাবে কি না অথবা পেলেও কত মাস, কত বছর পর- তা কেউ জানে না।

সারভাইভ ও রিকভার ভিন্ন জিনিস। অনেকে সারভাইভ করার পরও শারীরিক স্নায়বিক, আবেগীয়, মানসিক এক বা একাধিক সমস্যায় ভুগতে থাকেন।

অনেক রোগী যারা কোভিড থেকে কথিত সুস্থ হয়ে যায় তখনও তাদের ফুসফুস, হার্ট, স্নায়ু, মন ও অন্যান্য অর্গানে প্রদাহ নীরবে বয়ে যায়। এর মধ্যে ফুসফুসের ক্ষত এমন নির্মমভাবে থেকে যেতে পারে যে তাকে হয়তো দীর্ঘ সময় বা বাকিটা জীবন অক্সিজেনের নলকে সঙ্গী করেই বেঁচে থাকতে হতে পারে। সেটা মাস, বছর বা কারও কারও জন্য সারা জীবনব্যাপী হতে পারে।

অনেকেই তীব্র শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করেন। শ্বাসকষ্ট ছাড়াও মাংসপেশির দুর্বলতা এর আরেক কারণ। হাঁটতে গেলে হাঁপিয়ে ওঠেন, সিঁড়ি বাইতে পারেন না, ভারী কিছু বহন করতে পারেন না। ‘ক্লান্তি আমায় ক্ষমা করো’ তার প্রার্থনা হয়ে ওঠে, মুক্তি মিলে না। এই ভালো না থাকাটা আবার একরৈখিক কোনো ব্যাপার না। এর মধ্যে আবার আপস অ্যান্ড ডাউন আছে। এই তিন লিটার অক্সিজেন লাগছে তো এই আট লিটার, এই দুর্বলতা কিছুটা কম তো এই আবার বেশি। ব্যাপারটা এ রকম।

অনেকের শ্বাসকষ্ট কাশি থাকে না কিন্তু কাজে মনোসংযোগের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। আগের কাজটুকু তিনি আবার আগের মতো করতে পারবেন এ যেন তার কাছে সপ্তমাশ্চর্য। ভাইরাস জ্বর পরবর্তী যে দুর্বলতা এটা সেটা নয়। এ এক ভিন্ন কিসিমের ভিন্ন ব্যাপার। শারীরিক এ কষ্টের সাথে যোগ হয় আরেক না দেখা কষ্ট- সেটা মানসিক। দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতা, ট্রমা পরবর্তী স্ট্রেস তাকে যেন ঘিরে ধরে। করোনার কারণে অর্থনৈতিক দুরবস্থা, ফিনান্সিয়াল ক্রাইসিস, বেকারত্ব, নিজের কাজে ফেরত যেতে পারার অক্ষমতা- পুরো ব্যাপারটাকে আরও জটিল করে তোলে।

সাথে যদি যোগ হয় বিচ্ছিন্নতা, কারও একটু কথা শুনতে না পাওয়া, কাউকে কিছু কথা বলতে না পারা- সেটা হয়ে দাঁড়ায় মর্মান্তিক দুরবস্থা।

মোটকথা কোভিড থেকে সারভাইভ করাই সব নয় তার রিকভারির দিকেও নজর দিতে হবে আমাদের। মৃত্যু আর বেঁচে থাকার মাঝখানে কোভিড যে এক ধূসর এরিয়ার জন্ম দেয় সেটাও মর্মান্তিক।

চিকিৎসা পুনর্বাসনের লক্ষ্য শুধুই ওষুধ নয়, তাকে ‘রোগী’ থেকে ঠিক আগের ‘হিউম্যান বিং’ টাতে উত্তরণ ঘটানোটা হবে আসল উদ্দেশ্য। চিকিৎসার সঙ্গে একটু স্নেহপূর্ণ কথা, একটু সহানুভূতি, একটু সহমর্মিতা তাকে শোনার জন্য একটু সময় অনেক বড় ব্যাপার এক্ষেত্রে।

লেখক: চিকিৎসক, এফসিপিএস (মেডিসিন), এমডি (চেস্ট ডিজিস), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকাটাইমস/৩০সেপ্টেম্বর/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ

করোনায় ধূমপায়ীদের মৃত্যু হার ৩ গুণ বেশি: গবেষণা

বিদায়ী উপাচার্যের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রশ্নে যা বললেন ডা. দীন মোহাম্মদ

বিএসএমএমইউতে নতুন উপাচার্যকে বরণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি  

অ্যানেস্থেসিয়ায় হ্যালোথেন ব্যবহার বন্ধ করতে বললো স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, কেন এ নির্দেশ?

হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় বাদাম!

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

বিশ্ব যক্ষ্মা দিবসে জানুন সংক্রামক এ রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত

মৃগী রোগ সম্পর্কে কতটা জানেন? এর লক্ষণ আর চিকিৎসাই বা কী?

এক যুগ আগেই জানা যাবে আপনি মূত্রাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত কি না

কীভাবে চিনবেন প্রাণঘাতী অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার? বাঁচতে হলে জানুন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :