`এমসি কলেজে ধর্ষণ: অভিযুক্ত একজন ছাত্র, বাকিরা বহিরাগত`
প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০২০, ০০:৪৯
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় যাদের নাম এসেছে- তাদের মধ্যে একজন কলেজের বর্তমান ছাত্র, বাকি সবাই বহিরাগত বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী।
বুধবার বিকালে কলেজের শিক্ষাবিদ সম্মেলন কক্ষে এ সংক্রান্ত এক প্রেসব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী জানান, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তারা তাদের অবস্থান থেকে কাজ করছেন। কলেজ ব্যবস্থাপনার মধ্যে কোন ত্রুটি আছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
করোনাকালের আগে ও পরে কলেজ এবং ছাত্রাবাসের ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলাদা আলাদা নির্দেশনা ছিল। এখানে কাদের কি দায়িত্ব ছিল, দায়িত্বে কোন অবহেলা ছিল কিনা- এসব নিয়ে আমরা সবার সাথে কথা বলেছি।
এছাড়াও হোস্টেলের কক্ষে অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টিও তারা অবগত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তার সাথে এবং ভিকটিমের সাথেও কথা বলার চেষ্টা করেছি। তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী বরাবর পেশ করা হবে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৪৪ একর জায়গার উপর বিশাল ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত যা যা প্রয়োজন মনে হয়েছে সেখানে গ্যাপ রয়েছে। হোস্টেল যেভাবে তৈরি সেখানে বহিরাগতরা অনায়াসে প্রবেশ করতে পারে। সেখানে আলোর সংকট, সীমানা প্রাচীরের অভাব রয়েছে।
প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী আরো বলেন, করোনাকালে কোন অবস্থাতেই কলেজ ছাত্রাবাস খোলার নির্দেশনা নেই।
এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। দুই দিন সিলেটে থেকে বিভিন্নজনের সাথে আলাপের বুধবার রাতেই তারা ঢাকায় ফিরে যান।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে তদন্ত দল।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন এক নারী। ছাত্রলীগের নয়জন কর্মী ওই নারীকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ রাতে ওই নারীকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করে।
ধর্ষণের শিকার তরুণীর স্বামী বাদী হয়ে গত শনিবার শাহপরান থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
অন্য আসামিরা হলেন- এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাছুম, অর্জুন লস্কর ও বহিরাগত ছাত্রলীগ কর্মী রবিউল এবং তারেক আহমদ। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকেও আসামি করা হয়েছে।
এই মামলায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এমসি কলেজের দুই দারোয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষও তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
(ঢাকাটাইমস/১অক্টোবর/এলএ)