মহানন্দা নদীর তীর থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার হাতছানি

এস কে দোয়েল, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ অক্টোবর ২০২০, ১৭:৫১

শরতের শুভ্র মেঘের ফাঁকে উঁকি দিয়ে আকাশচুম্বী হিমালয় কাঞ্চনজঙ্ঘা যেন হাতছানি দিয়ে পর্যটকদের ডাকছে। শরৎ-হেমন্ত ঋতুতে উত্তরের পরিষ্কার আকাশে দৃশ্যমান হয়ে উঠে হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা-দার্জিলিংয়ের অপার রূপমাধুর্য। সীমান্তবর্তী জনপদ হওয়ায় তীরঘেষা মহানন্দা নদীর তীরে অবস্থিত একমাত্র পর্যটন স্পট ডাকবাংলো ও পিকনিক কর্ণারের কাছ থেকে নয়ন জুড়িয়ে উপভোগ করা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা ও দার্জিলিংয়ের এ রূপ।

প্রতিবছর আকাশচুম্বী কাঞ্চনজঙ্ঘা আর দার্জিলিংয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক ভ্রমণ করেন ভারত ও নেপালে। এবার পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে পর্যটনখ্যাত জেলা পরিষদ ডাকবাংলো ও পিকনিক কর্নারকে।

জানা গেছে, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এলেই কাঞ্চনজঙ্ঘা আর দার্জিলিংকে কাছ থেকে দেখা যায়। তাই এ সময়ে অগণিত পর্যটক হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে ছুটে আসেন এখানে। ফলে চিত্ত-বিনোদনের অন্যতম পর্যটনস্পট এখন তেঁতুলিয়া। তাই পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে এ বছর দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে পিকনিক কর্ণার ও জেলা পরিষদ ডাকবাংলোকে। এখান থেকেই হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সুবিধা দিতে নির্মাণ করা হয়েছে সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। এ ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়িয়ে দেখা যাবে হিমালয় পর্বত, মেঘকন্যা কাঞ্চনজঙ্ঘা, দার্জিলিং এবং নদীর ওপারে ভারতের বিস্তৃত সবুজ চা বাগানসহ নানান দৃশ্য।

হিমালয়, কাঞ্চনজঙ্ঘা কাছ থেকে দর্শনের পর মনোমুগ্ধকর সন্ধ্যা উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। ডাকবাংলোর তীরে বসেই ঝিরিঝিরি শীতল হাওয়ায় চোখে পড়বে সন্ধ্যার উত্তরের আকাশের আরেক সৌন্দর্য। দার্জিলিং চূড়ার ঢালু বেয়ে গাড়ি চলাচল। ঢালু পাহাড়ের পথ জুড়ে রঙিন ল্যাম্পপোস্টের আলো। নদী মহানন্দার তীরঘেষা ভারতের কাঁটাতারের বেড়ার সাথে সারি সারি সার্চলাইটের আলো। সে আলোয় ১৫ কিলোমিটার জুড়ে মহানন্দাকে মনে হবে কোন এক আধুনিক শহর। নেমে আসা সন্ধ্যার সূর্যাস্ত মনে হবে সাগরকন্যা কুয়াকাটার সূর্যাস্তের অবিকল নান্দনিক রূপ। মধ্য দুপুরের মাথার উপর সূর্যের কিরণে হীরের মতো জ্বল জ্বল করে হাসতে দেখা যাবে মহানন্দার চরের একেকটি বালিকণা। মন ছুটে যাবে বালুচরে হাঁটতে।

এছাড়া পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়বে উত্তরে বাংলাদেশের শেষ সীমানা বাংলাবান্ধার জিরোপয়েন্ট। ভারতের দার্জিলিংয়ের ২ হাজার ৬০ মিটার উঁচু মহালিদ্রাম পাহাড় থেকে প্রবাহিত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বয়ে আসা নদী মহানন্দা নদীর কিনারে দাঁড়ালে আরও কাছ থেকে দেখা মেলে কাঞ্চনজঙ্ঘা। নদীর বুকে হাজার হাজার শ্রমিকদের পাথর উত্তোলনের দৃশ্য মুগ্ধতায় ভরে তুলবে পর্যটকদের মন।

এছাড়া এখানে গড়ে উঠেছে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর। ইমিগ্রেশন সুবিধা চালু হওয়ায় এ বন্দর দিয়ে প্রবেশ করা যায় ভারত, নেপাল, ভুটান ও চীনে। পাসপোর্ট ভিসা থাকলে অনায়েসেই ঘুরে আসা যায় ভারতের শিলিগুড়ী, দার্জিলিং, নেপাল, ভুটানসহ নানান দর্শনীয় স্থান এবং নেওয়া যায় উন্নত চিকিৎসা সেবা।

এছাড়াও এ অঞ্চলে পর্যটকদের ঘুরে দেখার মতো রয়েছে, গ্রীণ টি গার্ডেন, দর্জিপাড়া কমলা ও চা বাগান, আনন্দধারা, টি ফ্যাক্টরি, মিনা বাজার, সমতল ভূমিতে পাথর কোয়ারি এবং ভিতরগড়ের ঐতিহাসিক প্রত্মতত্বনগরী ও মহারাজা দিঘী।

ভ্রমণপিপাসুরা যাতে নির্ভিঘ্নে পর্যটনস্পটের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন সে বিষয়ে নিরাপত্তা জোরদার করতে স্থাপিত হয়েছে জেলা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোন।

কিভাবে আসবেন?

বাংলাদেশের যেকোন স্থান থেকেই আসতে পারবেন এই পর‌্যটনস্পটে। ঢাকা গাবতলী কিংবা আব্দুল্লাহপুর হতে তেঁতুলিয়ায় আসার সরাসরি দুরপাল্লার বাস রয়েছে। অথবা পঞ্চগড় পর্যন্ত যেকোন ডে/নাইট কোচে আসতে পারবেন। ভাড়া পড়বে নন এসি বাসে ৬০০-৭০০ টাকা, এসি বাসে ১২০০-১৫০০ টাকা। সময় লাগবে ১১-১২ ঘন্টা।

কোথায় থাকবেন ও কি খাবেন?

তেঁতুলিয়ায় এখন বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল আছে। খাবার বেশ সস্তা। ঘরোয়া খাবার খেতে চাইলে বাংলা হোটেল রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন প্রদের সবজি, ভর্তাসহ পছন্দনীয় খাবারই মিলবে।

সহযোগিতা নিতে পারবেন

সবচেয়ে ভালো হয় আপনার জানাশোনা কেউ থাকলে বা কোন ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করে খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া। এজন্য সহযোগীতা নিতে পারেন ‘তেঁতুলিয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের থেকে। কিভাবে আসবেন, কোথায় থাকবেন, কোথায় ঘুরবেন এবং কি কি দেখার মতো রয়েছে এই সবকিছু জেনে নেওয়াসহ সার্বিক সেবা পাবেন প্রতিষ্ঠানটির থেকে। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর- ০১৭৫৫৪৯০৮৯৪।

(ঢাকাটাইমস/৩অক্টোবর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :