কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে অস্তিত্ব হারাচ্ছে ডেমু ট্রেন

প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০২০, ১৮:০০

এম হাশেম তালুকদার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারীর অভাবে অল্প কিছুদিনের ব্যবধানেই মুখ থুবড়ে পড়েছে ডেমু ট্রেন। ৬৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে চীন থেকে আমদানি করা ২০ সেট ডেমু ট্রেনের মধ্যে চলমান আছে মাত্র তিন সেট। বাকি ১৭ সেট অকেজো হয়ে পড়ে আছে। তবে এগুলো কোথায় কী অবস্থায় আছে তা জানে না সংশ্লিষ্ট অনেকেই। এমন পরিস্থিতি নিয়ে যাত্রী ও রেল অঙ্গনেও চলছে নানা  সমালোচনা। দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।

বিশাল অঙ্কের এই টাকা খরচ করার আগে এর আয় নিয়ে আরো চিন্তা করা উচিত ছিল কি না, নাকি প্রকল্পের নামে রেলের টাকা লুটপাট করার জন্যই এমন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, এমন প্রশ্ন সর্বত্র। এছাড়াও বাস মালিকদের কাছ থেকে অনৈতিক কোনো সুযোগ সুবিধা নেয়ার জন্য কৌশলে এই ট্রেনগুলো অকেজো করে রাখা হয়েছে কি না তা নিয়েও সন্দেহের কমতি নেই।

এ ব্যপারে চট্টগ্রাম রেলওয়ের পুরাতন স্টেশনে চলমান যাত্রীদের সঙ্গে কথা বললে রেল কর্তৃপক্ষের উপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন তারা। যাত্রীরা বলছেন, সেবা দেয়ার জন্য নয়, সরকারি অর্থ লুটপাট করে নিজেদের পকেট ভারি করতেই এই প্রকল্প।

ডেমু ট্রেন আমদানির সময় ১১২ কোটি টাকার স্পায়ার পার্স আনা হয়। এ বিষয়ে রেলের কোনো কর্মকর্তার কাছ থেকে সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে দরজা মেরামতের নামেও ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। তারও কোনো হদিস মিলছে না।  

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে লোকাল যাত্রী পরিবহনের জন্য রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে ২০ সেট ডেমু ট্রেন চালানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, আমার মনে হয় রেলওয়ের কিছু অসৎ কর্মকর্তা যাত্রীসেবার নাম দিয়ে অর্থ আত্মসাতের জন্যই এই প্রকল্প গ্রহণ  করেছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে যারা সরকারের এই বিশাল অংকের অর্থ লোকসানে ফেলেছে তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা উচিত, তাহলে উচিত শিক্ষা হবে। নয়তো বারবার সরকরকে এমন ক্ষতির মুখে ফেলবে এই দুষ্টু চক্র। আর এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে ভবিষ্যতে প্রকল্প গ্রহণ করতে হিসাব করবে এবং সরকারের রাজস্বের টাকার সঠিক ব্যবহার হবে।

এ বিষয়ে কথা বলতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. সামছুজ্জামান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপা.) মো. মিয়া জাহান ও পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক সরদার সাদাত আলীর ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তারা রিসিভ করেননি।

(ঢাকাটাইমস/৩অক্টোবর/কেএম)